ভোট ঠেকানোর আন্দোলনে থাকা বিএনপি-জামায়াতসহ সমমনা দলগুলোর ৪৮ ঘণ্টার হরতাল শুরুর আগের রাতে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন দিয়েছে হরতালকারীরা।
শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) রাত ৯টার দিকে রাজধানীর গোপীবাগ কাঁচাবাজারের কাছে ওই ট্রেনের চারটি বগিতে আগুন দেয়া হয়। ওই ঘটনায় এখন পর্যন্ত পাঁচজনের নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়ার শঙ্কা করা হচ্ছে।
ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, তাদের সাতটি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজ করেছে। উদ্ধার তৎপরতায় পরে পুলিশ, র্যাব, বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। প্রায় দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিভিয়ে ফেলতে সক্ষম হয় ফায়ার সার্ভিস।
র্যাবের মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন সাংবাদিকদের বলেন, উদ্ধার কাজ শেষ হলে তারা এই ঘটনার তদন্তে নামবে।
বেনাপোল থেকে আসা এই ট্রেনের এক যাত্রী একাত্তর টেলিভিশনকে বলেন, আমি ট্রেনের ছয় নম্বর বগিতে ছিলাম। আগুন সামনের দিকে কোনো এক বগিতে লাগে। পরে তা ছড়িয়ে পড়ে।
আরেক যাত্রী বলেন, স্টেশনের কাছাকাছি আসায় যাত্রীরা সবাই নামার প্রস্তুতি নিচ্ছিলো। এরকম সময় আগুন লাগে। অনেকে চলন্ত ট্রেন থেকে লাফিয়ে প্রাণ বাঁচাই।
আগুন কয়েকটি বগিতে ছড়িয়ে পড়েছিলো। ঘটনার পরপরই স্থানীয়রা পানি দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। পরে ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করেন।
ঘটনাস্থলে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ড. খ: মহিদ উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, এটি নাশকতা।
এ প্রায় একই সময়ে ডেমরা এলাকায় রমজান পরিবহনের একটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। প্রায় কাছাকাছি সময়ে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে দু'টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে কেউ হতাহত হয়নি।
এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বি এফ রহমান হলের সামনেও দু'টি ককটেল বিস্ফোরণ হয়।
গেলো ২৮ অক্টোবর বিএনপি ও সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর হরতাল-অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণার পর থেকে রেলে একাধিক নাশকতার ঘটনা ঘটেছে।
গত ১৩ ডিসেম্বর ভোরে গাজীপুরের শ্রীপুরে রেল লাইন কেটে ফেলায় মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসের ইঞ্জিনসহ সাতটি বগি লাইনচ্যুত হয়। নিহত হন একজন। আহত হন ১০ জনের বেশি।
১৬ ডিসেম্বর টাঙ্গাইলের ঘারিন্দা রেলস্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি কমিউটার ট্রেনে আগুন দেয় নাশকতাকারীরা। এতে ট্রেনটির দু'টি বগি পুড়ে যায়। আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয় ট্রেনটির আরেকটি বগি।
১৯ ডিসেম্বর রাজধানীর তেজগাঁও স্টেশনে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন দেওয়া হয়। ওই ঘটনায় চারজন নিহত হন।
১৯ নভেম্বর জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ী এলাকায় যমুনা এক্সপ্রেস ট্রেনের তিনটি বগিতে এবং ২২ নভেম্বর সিলেট রেলওয়ে স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা উপবন ট্রেনের একটি বগিতে আগুন দেয় নাশকতাকারীরা।
বিএনপির হরতাল অবরোধের মধ্যে গত দুই মাসে প্রায় তিনশ’ যানবাহনে আগুন দেয়া হয়েছে।
জাগরণ/রাজধানী/কেএপি