• ঢাকা
  • বুধবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
প্রকাশিত: মে ১২, ২০১৯, ১১:৩৪ এএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ১২, ২০১৯, ১১:৩৪ এএম

শিক্ষার্থীরাই মুক্তিপণ আদায়ে শিক্ষার্থীকে অপহরণ করছে

শিক্ষার্থীরাই মুক্তিপণ আদায়ে শিক্ষার্থীকে অপহরণ করছে

মুক্তিপণ আদায়ের জন্য শিক্ষার্থীরা শিক্ষার্থীকে অপহরণ করছে। অপহৃতকে মারপিটের ভিডিও চিত্র ধারণ করে পরিবারের লোকজনকে দেখানো হয়। হাতিয়ে নেয়া হয় মোটা অংকের টাকা। শিক্ষার্থী অপহরণ নিয়ে শিক্ষানগরী ময়মনসিংহে উদ্ধিগ্ন অভিভাবকরা। 

সম্প্রতি দুটি ঘটনায় অপহৃতকে উদ্ধারসহ সিবিএসটি, আনন্দমোহন ও ঘাটাইল কলেজের তিন শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে গডফাদাররা রয়েছে এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে।

সম্প্রতি ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের এক এইচএসসি পরীক্ষার্থীকে অপহরণের পর বিষয়টি পুলিশকে জানালে অপহরণ ও নির্যাতনকারী চক্রের প্রধান নুর আল মামুনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। 

অপরদিকে, বুধবার রাতে নগরীর একাডেমি রোডে আনন্দমোহন কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থীকে জিম্মি করে টাকা আদায়ের ঘটনায় মাহফুজ ও ইমরুল নামে দু'জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থী। 

নির্যাতনের শিকার একজন জানান, ফোন কেড়ে নিয়ে বলেছে ১০ হাজার টাকা দাও, নাহলে ফোন দাও, আমি দিতে অস্বীকার করলে আমাকে মারধোর করেছে। রোজা থাকা অবস্থায় আমাকে নির্যাতন করেছে।

ভুক্তভোগী এক অভিভাবক জানান, তিনধাপে ৩০ হাজার টাকা দিয়েছি। পরে পুলিশ আমার ভাইসহ আরেকজনকে উদ্ধার করে। 
নগরীর কলেজ রোড, একাডেমি রোড, সানকিপাড়া, হামিদ উদ্দিন রোডসহ মেসের আধিক্য আছে এমন সব এলাকায় ছাত্ররা হরহামেশাই নির্যাতনের শিকার হয় বলে জানান শিক্ষার্থীরা। 

তারা বলেন, কোনো কারণ ছাড়াই আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়। আমরা চাইলেও অনেক সময় অনেক কিছু বলতে পারি না।
ময়মনসিংহে শিক্ষার্থীদের অপহরণ ও নির্যাতন করে মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনা বাড়ছে। ভয়ানক এ অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে খোদ শিক্ষার্থীরাই। জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি নির্যাতিত শিক্ষার্থী ও তাদের স্বজনদের।

সম্প্রতি ময়মনসিংহের সানকিপাড়া এলাকার একটি মেসে শিক্ষার্থীদের অপহরণ করে এনে মুক্তিপণ আদায়ের জন্য অমানুষিক নির্যাতনের ভিডিও চিত্র বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশ পেলে অভিভাবকদের মধ্যে নতুন করে আতংক সৃষ্টি হয়। নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। 
মানবাধিকার সংগঠক নজরুল ইসলাম চুন্নু বলেন, এর পিছনে বড় ধরনের প্রশয়কারী যদি না থাকে তাহলে শুধু সাধারণ শিক্ষার্থী এতো বড় অপরাধের সাথে যুক্ত হওয়ার সাহস পাবে না। তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা উচিৎ।

শিক্ষাবিদ মোকাররম হোসায়েন বলেন, অপরাধ করার যে প্রবণতা সেটা নানা কারণে হয়ে থাকে, সেই কারণগুলো চিহ্নিত করতে হবে।

এদিকে, এ ধরনের অমানবিক নির্যাতনে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির পাশাপাশি এদের পৃষ্ঠপোষকদেরও আইনের আওতায় আনার দাবি মানবাধিকার কর্মীদের।

এদিকে, অপহরণ ও নির্যাতনের দুটি ঘটনায় ৬ জনকে আসামি করে পৃথক মামলা দায়ের হয়েছে কোতোয়ালী মডেল থানায়। জড়িত অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ

জেলা পুলিশ সুপার শাহ আবিদ হোসেন জানান, জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। তিনি বলেন, এর পিছনে যারা যারা আছে, এরকম আরো যেসব ঘটনা আছে আমরা বের করার চেষ্টা করবো।

কেএসটি