দায়সারা জোড়াতালি। কিছুদিন পর পূর্বের অবস্থায় ফিরে যায় বেইলি ব্রিজ। শুরু হয় দুই উপজেলার যানবাহন, মানুষ চলাচলে দুর্ভোগ। বছরের পর বছর দুর্ভোগে পড়া মানুষগুলো যেমন অতিষ্ঠ তেমনি জনপ্রতিনিধি প্রশাসনের এখন কান জালাপোড়া। তিক্ত বিরক্তের বেইলি ব্রিজটি ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার খিরু নদীর উপর স্থাপিত।
ঝুঁকিপূর্ণ বেইলি ব্রিজ দিয়ে প্রতিনিয়তই যাতায়াত করছে ময়মনসিংহের ত্রিশাল ও ফুলবাড়ীয়া উপজেলার জনসাধারণ। কিছুদিন পর পর দায়সারা জোড়া দিলেও তা বেশিদিন টিকে না। তাই বিকল্প ব্রীজ নির্মাণে এলাকাবাসীর রয়েছে দীর্ঘদিনের দাবি।
ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশাল উপজেলার ১০নং মঠবাড়ী ইউপির পোড়াবাড়ী বাজারের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া খিরু নদীর উপর প্রায় তিন যুগ আগে নির্মিত বেইলি ব্রিজটি এখন মরণ ফাঁদ। ওই ভাঙ্গা ব্রিজ দিয়ে প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে হাজারো মানুষ ও যানবাহন। ব্রিজটি মেরামত করলেও পুনর্নির্মাণের আশ্বাস বাস্তবায়ন হয়নি দীর্ঘদিনেও।
ত্রিশাল হতে ফুলবাড়ীয়া উপজেলার দক্ষিণাঞ্চলে যাতায়াতের গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কের পোড়াবাড়ী বাজারের মধ্যদিয়ে বয়ে যাওয়া খিরু নদীর উপর ১৯৮২ সালে ২৪২ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৪ ফুট প্রস্থের এ বেইলি ব্রিজ নির্মিত হয়। নির্মাণের ১০-১২ বছর পেরুতেই ব্রিজের অনেকগুলো পাটাতনে মরিচা ধরে ভেঙ্গে পড়তে শুরু করে। ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজটির ভেঙ্গে যাওয়া পাটাতন দীর্ঘদিন ধরে জোড়াতালি দিয়ে চালানোর ফলে প্রায় প্রতিদিন দুর্ঘটনা ঘটে আহত হচ্ছেন অনেকেই।
পোড়াবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মৌমিতা, ঐশি, রিফাত, রনি, মেহেদী, আরাফাতসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, এই ব্রিজ দিয়ে আসা-যাওয়া করতে আমাদের অনেক ভয় করে। স্কুলে যেতে বা নদী পারাপার হতে এটিই একমাত্র রাস্তা। তাই ঝুঁকি আর ভয় নিয়েই আমরা ব্রিজ পারাপার হই।
কৃষক হুমায়ুন কবীর বলেন, কয়েক বছর আগে ব্রিজ দিয়ে হেটে পাড় হওয়ার সময় পাটাতন ভেঙ্গে নদীতে পড়ে গিয়ে মারাত্মক আহত হন।
পার্শ্ববর্তী ফুলবাড়ীয়ার আছিমের সাখাওয়াত হোসেন। পঙ্গু হয়ে এখন তিনি মানবেতর জীবনযাপন করছেন। কয়েকদিন আগে জোড়াতালির ফাঁকে ভ্যানের চাকা পড়ে ভ্যান উল্টে তিনিসহ কয়েকজন ছিটকে পড়ে যান নদীতে। ছোট বড় এমন দুর্ঘটনা অনেক ঘটে।
স্থানীয়রা বলেন, সরকারি কিছু অনুদান দিয়ে কিছুদিন আগে মেরামত করা হয়েছিল।
৭নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার আজাহারুল ইসলাম বলেন, আমি যখন মেম্বার ছিলাম তখন জুয়েল চেয়ারম্যান ও এলাকাবাসীদের নিয়ে উপজেলা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দিয়েছিলাম কিন্তু কোন কাজ হয়নি।
ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কদ্দুছ মণ্ডল বলেন, আমি নির্বাচনের সময় মানুষের কাছে ওয়াদা করে ছিলাম যদি আপনারা আমাকে ভোট দিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেন তাহলে আমার প্রথম কাজ হবে খিরু নদীর ব্রিজটি করা, আমি চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকে দুই বার সংস্কার করেছি, ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজটির ভেঙ্গে একটি নতুন ব্রিজের আবেদন নিয়ে বিভিন্ন দফতরে আবেদন জানাচ্ছি।
উপজেলা প্রকৌশলী শাহেদ হোসেন বলেন, পুরো ব্রিজটি সংস্কারের জন্য জেলা প্রকৌশল অফিসের মাধ্যমে আবেদন করা হয়েছে।
টিএফ