নওগাঁর মান্দা উপজেলার দ্বারিয়াপুর গ্রামে মাকে হত্যা করে মেয়েকে ধর্ষণের চাঞ্চল্যকর ঘটনায় বখাটে সামিউল ওরফে সাগর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
বুধবার (১৯ জুন) বিকেল ৫টার দিকে নওগাঁ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের (২) বিচারক সিরাজুল ইসলাম আসামি সাগরের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি গ্রহণ করেন। জবানবন্দি গ্রহণের তথ্য নিশ্চিত করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মান্দা থানার পরিদর্শক (ওসি) মোজাফ্ফর হোসেন জানান, আদালতে আসামি জবানবন্দিতে যেসব তথ্য দিয়েছে তা মামলা তদন্তের স্বার্থে গোপন রাখা হচ্ছে। তবে মঙ্গলবার আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি পুলিশের কাছে হত্যা ও ধর্ষণ করার কথা স্বীকার করেছে। তাই আদালতের কাছে রিমান্ড আবেদন করা হয়নি। জবানবন্দি শেষে সামিউল ওরফে সাগরকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এর আগে মান্দা থানা হাজত থেকে ধর্ষক সামিউলকে আদালতে নেয়া হয় দুপুর ১টার দিকে। কড়া প্রহড়ায় তাকে আদালতে হাজির করা হয়।
ওসি আরো জানান, মঙ্গলবার সামিউলকে আটক করে পুলিশ। রাতে তার বিরুদ্ধে মান্দা থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। নিহত গৃহবধূ নাছিমা আক্তার সাথীর স্বামী এমদাদুল হক বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। তিনি ও নির্যাতনের স্বীকার তরুণীর বাবা। সামিউলকে গ্রেপ্তারের পর ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে বখাটে সাগর নিজে গৃহবধূ সাথীকে হত্যা ও মেয়েকে ধর্ষণ করেছে বলে স্বীকার করেছে। গৃহবধূর মেয়ে প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে সে পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তি দিয়েছে। অন্যদিকে ধর্ষণের শিকার তরুণীকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। পরে তার ডাক্তারী পরীক্ষা করা হয়। এছাড়া ওই তরুণী নওগাঁর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ৪ এর কাছে ঘটনার বর্ণনা জানিয়েছেন। এদিকে হত্যা ও ধর্ষণকারী সামিউল ওরফে সাগরের দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে ফাঁসির দাবি করেছেন ভিকটিমের স্বজনরা।
প্রসঙ্গত, সোমবার গভীর রাতে মান্দার দ্বড়িয়াপুর গ্রামে স্থানীয় বাসিন্দা এমদাদুল হকের বাড়িতে প্রবেশ করে গৃহবধূ নাছিমা আক্তার সাথীকে ধারালো ছুড়ি দিয়ে গলাকেটে হত্যা করে সামিউল ওরফে সাগর। এরপর সাথীর ছোট মেয়েকে ধর্ষণ করে পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে মঙ্গলবার সকালে তাকে আটক করে।
আসামি সামিউল পাশের কুসম্বা ইউনিয়নের চকশ্যামরা গ্রামের জান মোহাম্মদ হোসেনের ছেলে। সে নওগাঁ সরকারি কলেজে বাংলা বিভাগে অনার্স তৃতীয় বর্ষে পড়া লেখা করে বলে স্থানীয়রা জানান।
কেএসটি