চাঞ্চল্যকর রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশের ব্যর্থতার কারণে প্রত্যাহার হচ্ছেন বরগুনা সদর থানার ওসি (অফিসার ইনচার্জ) আবির মোহাম্মদ হোসেন। তদন্ত করা হচ্ছে ঘটনার সময় থানা পুলিশের দায়িত্বে অবহেলার বিষয়টিও। যাদের অবহেলা পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জন-নিরাপত্তা বিভাগের এক কর্মকর্তা শুক্রবার (২৮ জুন) দৈনিক জাগরণকে জানান,বরগুনায় স্ত্রীর সামনে রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নজরে আসার সঙ্গে সঙ্গেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজি এবং বরগুনার পুলিশ সুপারকে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতারের নির্দেশ দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী নিজেও এ বিষয়ে কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি নিজে এ ঘটনার তদারকি করছেন। ডিআইজি পুলিশ সুপারকে নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই কর্মকর্তা আরো জানান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) বিকেলেই ডিআইজি বরিশালকে স্থানীয় থানা পুলিশের দায়িত্বে অবহেলা ছিলো কি না, তা খতিয়ে দেখে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে ঘাতক নয়ন বন্ড মাদক ব্যবসার মামলসহ অসংখ্য মামলায় আসামি থাকার পরও পুলিশ তার বিরুদ্ধে কি কি ব্যবস্থা নিয়েছে, সে বিষয়েও প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রণালয়। বিষয়গুলোর সুষ্ঠু তদন্তের জন্য ওসিকে প্রত্যাহার করা হচ্ছে বলেও দাবি করেন এই কর্মকর্তা।
গত বুধবার (২৬ জুন) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনার সরকারি কলেজে স্ত্রীকে দেয়ার সময় রিফাত শরীফকে কলেজের ভেতর থেকে টেনে-হেচড়ে বাইরে নিয়ে এসে এলোপাতারি কুপিয়ে আহত করে। পরে স্থানীয়রা বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে ওই দিনই তার মৃত্যু হয়। চাঞ্চল্যকর এ হামলার নেতৃত্ব দেন স্থানীয় সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ী নয়ন বন্ড, তার প্রধান সহযোগী রিফাত ফরাজীসহ ১০-১২ জন সন্ত্রাসী। এ হামলার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে গোটা দেশ জুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। নড়ে-চড়ে ওঠে স্থানীয় প্রশাসন।
গতকাল বৃহস্পতিবার নিহত রিফাত শরীফের বাবা আব্দুল হালিম দুলাল শরীফ বাদি হয়ে বরগুনা সদর থানায় ১২ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এই রিপোর্ট লেখার সময় পর্যন্ত এ মামলায় ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। হাইকোর্ট আসামিদের দেশ ত্যাগে নিষেধজ্ঞা জারি করার পর প্রশাসনের পক্ষ থেকে রেডএলার্ট জারি করা হয়।
এমএএম/বিএস