কেন্দুয়ার সেই অধ্যক্ষের নামে দুটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করা হয়েছে। এক বছরে তিনি ছয় শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ করেছে। আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি তা স্বীকার করেছেন। শুক্রবার মাদ্রাসার শিশু শ্রেণির এক ছাত্রীকে (১১) ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ (মুহ্তামিম)কে আটক করেছে কেন্দুয়া থানা পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলা সদরের বাদে আঠারবাড়ী মা হওয়া (আ.) কওমী মহিলা মাদ্রাসায়।
স্থানীয় এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মাওলানা আবুল খায়ের বেলালী স্থানীয় শিক্ষানুরাগীদের সহায়তায় ২০১৫ সালে অত্র মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করে অধ্যক্ষের (মুহ্তামিমের) দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে মাদ্রাসার মুহতামিম শিশু শ্রেণির শিক্ষার্থীকে তার কক্ষে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করে। এ সময় শিশুটির চিৎকারে অন্যান্য শিক্ষার্থীরা ছুটে এসে অধ্যক্ষকে (মুহতামিমকে) হাতে নাতে ধরে ফেলে। পরে স্থানীয় লোকজন মুহতামিমকে গণধোলাই দেয়ার সময় খবর পেয়ে পুলিশ অভিযুক্ত মুহতামিমকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।
এ ব্যাপারে কেন্দুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ রাশেদুজ্জামান জানান, দুটি ধর্ষণ মামলা হয়েছে মাদ্রাসার ওই অধ্যক্ষের (মুহতামিম) নামে। জিজ্ঞাসাবাদে করা হচ্ছে।
নেত্রকোনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মো. শাহজাহান মিয়া ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, তিনি একজন দাওরায়ে হাদিস, (সিলেট বালুরচর কওমী মাদ্রাসা হতে) মাওলানা, একজন বক্তা, একজন ইমাম, শুক্রবারে জুমআর নামাজের খতিব। মাওলানা(!) আবুল খায়ের বেলালী। শুক্রবারে তার বয়ান শুনার জন্য আধা ঘণ্টা আগে মুসল্লিরা এসে অপেক্ষা করেন মসজিদে। কেন্দুয়ার আঠারবাড়ি এলাকায় মা হাওয়া (আ.) কওমী মহিলা মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক (মুহতামিম) যে মাদ্রাসায় রয়েছে প্রায় ৩৫ জন অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছাত্রী। যাদের ১৫ জন আবাসিক। সেখানে তিনিও আবাসিক। সময় সুযোগ বুঝে তিনি কলিংবেল চাপেন আর ওনার পছন্দমত একজন কোমলমতি ছাত্রীর ডাক পরে তার গা-হাত-পা টিপে দেবার জন্য। আর এক পর্যায়ে তিনি সেই অবুঝ শিশুদের উপর ঝাঁপিয়ে পরেন এবং শেষে আবার কোরআন শরীফ হাতে দিয়ে শপথ করান কাউকে কিছু না বলার জন্য, বললে কিন্তু আল্লাহ তোমাকে দোজখের আগুনে পোড়াবেন। ভয়ে কোমলমতি ছাত্রীরা কাউকে কিছু বলেন না। কিন্তু এক সাহসী বীরাঙ্গনা সেই ভয়ের সঙ্গে যুদ্ধ করে জয়ী হয়, বলে দেয় তার বড় বোনসহ বাড়ির সবাইকে সেই যন্ত্রণার মুহুর্তগুলোর কথা।
স্থানীয় এলাকাবাসীর সহায়তায় আটক হন সেই হুজুররূপী ধর্ষক। থানায় আটক থাকা অবস্থাতেই আরো একজন শিশু শ্রেণীর ছাত্রীর অভিযোগ জমা পড়ে। দুইটি ধর্ষণ মামলা হয়েছে তার নামে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তথ্য পায়, গত এক বছরে আরো মোট ৬ জন ছাত্রীর সাথে তিনি অনুরূপ কুকর্ম করেছেন যাদের সবারই বয়স ৮ থেকে ১১ এর মধ্যে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে কিছু আলামত জব্দ করি সাথে সেই ‘কলিংবেল’টিও যা আদালতে উপস্থাপন করা হবে। হুজুরকে রিমান্ডে আনা হবে।
কেএসটি