• ঢাকা
  • রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
প্রকাশিত: আগস্ট ৮, ২০১৯, ০৯:২২ এএম
সর্বশেষ আপডেট : আগস্ট ৮, ২০১৯, ০৯:২২ এএম

ডেঙ্গুজ্বরে আনন্দ মাটি, হাসপাতালে বেডে কাটবে অনেকেরই ঈদ 

ডেঙ্গুজ্বরে আনন্দ মাটি, হাসপাতালে বেডে কাটবে অনেকেরই ঈদ 
ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন এক রোগী-ফাইল ছবি

এবার অনেকের স্বজনদের সঙ্গে হবে না ঈদুল আজহার আনন্দ ভাগাভাগি। কেননা, ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা নিচ্ছেন কয়েক হাজার মানুষ। যাদের বেশিভাগেরই প্রতি বছর প্রস্তুতি থাকে গ্রামে গিয়ে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগির। ডেঙ্গু হওয়ায় এবার ঈদুল আজহার ছুটিতে অন্য ঈদুল আজহার ছুটির চেয়ে বেশি মানুষ থাকছেন রাজধানীতে।

ঢাকার সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ডেঙ্গুরোগীদের স্বজনদের সাথে কথা বলে এমনটাই তথ্য মিলেছে।

বুধবার (৭ আগস্ট) ঢাকার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৫ হাজার ৩৮৯জন।

ঢাকার সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভর্তি কসমেটিক্স ব্যবসায়ী আবুল কাশেম (৩৫)। তার ছোট ভাই রমজান আলী জানান, ভাইয়ের যে অবস্থা তাতে বাড়ি যাওয়া সম্ভব না। হাসপাতালেই ঈদ কাটবে মনে হচ্ছে। বাড়ি থেকে বাবা-মা ফোন দিয়েই যাচ্ছেন। বহু কষ্টে তাদের বুঝিয়ে ভাইকে ঢাকার হাসপাতালে ভর্তি রেখেছি।

হেলথ অ্যান্ড হোপে ভর্তি ইউসুফ হোসেন। বাড়ি পাবনায়। বাবা-মা গ্রামে থাকেন। তাদের এখনও জানানো হয়নি ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হওয়ার কথা। ইউসুফের ভাবি রোকসানা বেগম বলেন, ওর বাবা-মাকে জানানো হয়েছে শুধু অসুস্থতার কথা। ডেঙ্গুর কথা বলা হয়নি টেনশন করবেন বলে। কিন্তু ওর বাবা-মা বারবার বলছে বাড়ি নিয়ে যেতে। ইউসুফকে এ অবস্থায় তাতে বাড়ি নেয়া সম্ভব না। ঈদটা হাসপাতালের বেডেই কাটাতে হবে।

মিরপুর ডেল্টা মেডিকেলে ভর্তি ডেঙ্গুরোগী ফয়সালের (ছদ্মনাম, হাসপাতালের শর্ত থাকায় রোগীর প্রকৃত নাম দেয়া হয়নি) আপন চাচাত ভাই আনিসুর রহমান (ছদ্মনাম)। তিনি বলেন, এবার কোরবানি ঈদের প্রস্তুতি আমাদের মরে গেছে। ফয়সাল ঢাকায় থেকে পড়াশোনা করে। বাবা-মা, ভাই-বোন সবাই গ্রামে। ওর অবস্থা ভাল না। বাড়ি যাব তো দূরের কথা, ওর প্রাণ নিয়েই আমরা ভয়ে আছি।

সরকার নির্দেশনা দিয়ে রেখেছে- ডেঙ্গু আক্রান্ত কেউ যেন ঢাকা না ছাড়েন। এর কারণ- সারা দেশেই এ বছর ডেঙ্গুর বিস্তৃতি ঘটেছে। ডেঙ্গু রোগী গ্রামে গেলে সেখানে এডিস মশা যদি সেই রোগীকে কামড় দিয়ে সুস্থদের কামড় দেয়, তাহলে ডেঙ্গুর সংক্রমণ বাড়বে। এছাড়া গ্রামে গেলে চিকিৎসা ব্যবস্থাপনায় ব্যঘাত সৃষ্টি হবে। যেখানে ডেঙ্গু রোগীকে বিশ্রাম নেয়া প্রয়োজন, সেখানে ভ্রমণজনিত কারণে বিশ্রামে মারাত্মক ব্যঘাত ঘটবে। যা সংশ্লিষ্ট রোগীর জন্য ভয়ের কারণ হতে পারে।

ঢাকাসহ সারাদেশে এ বছর যেভাবে ডেঙ্গুর বিস্তৃতি ঘটেছে, তেমন বিস্তৃতি গত ২০ বছরেও হয়নি। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত দেশজুড়ে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩২ হাজার ৩৪০জনে। সরকারিভাবে ২৩জনের মৃত্যুর কথা বলা হলেও গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী মৃতের সংখ্যা ৭০ এর বেশি।

৬ আগস্ট সকাল ৮টা থেকে ৭ আগস্ট সকাল ৮টা পর্যন্ত ২ হাজার ৪২৮জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ঢাকা ও ঢাকার বাইরের সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

আরএম/এসএমএম

আরও পড়ুন