• ঢাকা
  • রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
প্রকাশিত: আগস্ট ১১, ২০১৯, ০৪:১৯ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : আগস্ট ১১, ২০১৯, ০৪:১৯ পিএম

ঈদ আনন্দ নেই বেদে পল্লীতে

ডিজিটাল যুগে কষ্টে দিন কাটে বেদেদের

ডিজিটাল যুগে কষ্টে দিন কাটে বেদেদের
সিরাজদিখানে বাজার-সংলগ্ন ইছামতি নদীতে বেদে পল্লী  -  ছবি : জাগরণ

মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানের বেদে পরিবারগুলো এখন অতিকষ্টে দিনাতিপাত করছে। গাঁয়ের পথে ঝুড়ি মাথায় কিংবা কাঁধে লম্বা ব্যাগ ঝুলানো বেদে গোষ্ঠীকে এখন আর আগের মতো চুড়ি-ফিতা বিক্রি করতে দেখা যায় না। সভ্যতার অগ্রযাত্রায় ব্যস্ত এ সময়ে মানুষ আর আগের মতো এক সঙ্গে জড়ো হয়ে সাপ খেলা দেখার সময় পায় না।

সিরাজদিখান উপজেলার বেদে পল্লীতে এবারও আগের মতই নীরব  ঈদ আনন্দ চলছে । তবে কোনো রকমে দু'মুঠো খেয়ে-পরে বেঁচে আছে এ অঞ্চলের বেদেরা। তালতালা ৬০ টি এবং সিরাজদিখান বাজার সংলগ্ন ইছামতি নদীতে ভাসমান ৪০ টি পরিবারের অর্থাভাবে কোরবানি দেওয়া আর হয়ে ওঠে না। তাই ঈদের দিন অন্য সব দিনের মতোই মনে হয় তাদের কাছে। বেদে পরিবারের শিশু-কিশোরদের মাঝে ঈদ নিয়ে হৈ চৈ নেই। ঈদ সামনে রেখে বিগত সময়ের মতো এখন আর বেদে পরিবারের শিশু-কিশোরদের আতশবাজি করতে দেখা যায় না। ঈদের আনন্দ এখন মনে ধরে না বেদেদের।

উপজেলা সদর থেকে ৮ কিলোমিটার পূর্বে মালখানগর ইউনিয়নের তালতলা বাজারের পেছনে ইছামতি নদীতে ভাসমান ছোট ছোট ডিঙি নৌকায় বর্তমানে অতিকষ্টে দিনাতিপাত করছে ৬০টি এবং সিরাজদিখান বাজার সংলগ্ন ৪০টি বেদে পরিবার। তবে ৩  শতাধিক বেদে ভোটার হয়েছেন বলে জানান, তালতালা বেদে সর্দার মিনহাজ উদ্দিন।

সিরাজদিখান বাজারে ঝোলা কাঁধে বের হওয়া বেদে পরিবারের সদস্য মরজিনা বেগম (৫৫) বলেন, 'আমাদের কাছ থেইক্কা মানুষ আগে চুড়ি-ফিতা কিনলেও এখন বাড়ির বউ-ঝিরা হাট-বাজারে গিয়া কিনে। এ ছাড়া যেহানে সেহানে ডাক্তার থাকায় আমাগো কাছ থেকে শিঙা ও তাবিজ কেউ নেয় না।'

সিরাজদিখানের তালতলা এলাকায় বসবাসকারী বেদে পরিবারের সদস্যরা জানান, নারীদের আগের মতো গ্রামে-গঞ্জে চুড়ি-ফিতা বিক্রি, শিঙা লাগানো, তাবিজ বিক্রি কিংবা সাপ খেলা দেখানো পেশায় উপার্জন নেই বললেই চলে। তবে বিভিন্ন গ্রামীণ মেলায় ছোট ছোট দোকান বসিয়ে খেলনা থেকে শুরু করে মাটির তৈরি সামগ্রী, চুড়ি, ফিতা, নেলপলিশ বিক্রি করে এখনও কিছুটা উপার্জন হয় তাদের। পুরুষরা মাছ ধরে নারীদের পাশাপাশি কিছুটা উপার্জন করেন। এতে অনাহারে-অর্ধাহারে দিনাতিপাত করছে তারা।

তালতালা বেদে পল্লীর সর্দার মিনহাজ উদ্দিন বলেন, ‘ভোটার হওয়া সত্ত্বেও সব ধরনের নাগরিক সুবিধা হতে বঞ্চিত আমরা। তাদের দাবি দেশের সব নাগরিকের মতো তাদেরও সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেয়া হোক। অনেক কর্মকর্তা সাংবাদিক আসে, খোঁজ নেয়, কেউ ছবি তোলে। শুনি, সরকার আমাদের জন্য অনেক কিছু করবে কিন্তু কিছুই তো পাচ্ছি না আমরা। তিনি আরো বলেন, আমাদের কোন ভূমি নাই। সরকারিভাবে আমাদের ভূমি দিলে আমরা নৌকা থেকে মাটিতে নেমে বসবাস করতে পারি।’

সিরাজদিখান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশফিকুন নাহার দৈনিক জাগরণকে জানান, বেদেদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তাদের সব ধরনের নাগরিক সুযোগ-সুবিধাদানের চেষ্টা চলছে। সরকারি সব সুযোগ-সুবিধাই তাদের পর্যায়ক্রমে দেওয়া হচ্ছে।

এমএইউ/এনআই

আরও পড়ুন