• ঢাকা
  • বুধবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
প্রকাশিত: আগস্ট ১২, ২০১৯, ০৬:২২ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : আগস্ট ১২, ২০১৯, ০৬:২২ পিএম

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আনন্দ-বেদনার ঈদ উদ্‌যাপন

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আনন্দ-বেদনার ঈদ উদ্‌যাপন
পবিত্র ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করছেন রোহিঙ্গা মুসলমানরা  -  ছবি : জাগরণ

আনন্দ-বেদনায় ঈদুল আজহা উদ্‌যাপন করছে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গারা। ঈদের নামাজের সময় খুতবা চলাকালে নিজেদের দেশ ও স্বজনদের স্মৃতিতে কান্নায় ভেঙে পড়েন ইমামসহ রোহিঙ্গা মুসল্লিরা। মাঝবয়সী থেকে বয়স্ক রোহিঙ্গাদের মধ্যে মাতৃভূমি রাখাইনে ফিরে যাওয়ার করুণ আকুতি ভেসে ওঠে।

সোমবার (১২ আগস্ট) সকাল ৮টা থেকে উখিয়া ও টেকনাফের ৩২টি রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে ঈদুল আজহার জামাত অনুষ্ঠিত হয়। ওই সব জামাতে মোনাজাতে অংশ নেয়া মুসলিমরা নির্যাতনের বিচার চেয়ে ও নিজ দেশ মিয়ানমারে মর্যাদার সঙ্গে নিরাপদে ফিরে যেতে কাকুতি করে মোনাজাত করেন। তাদের আশ্রয় দিয়ে জান-মাল, ইজ্জত রক্ষা করায় বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।

উখিয়ার ২০টি ক্যাম্পে দেখা গেছে, শিশুরা সকাল থেকেই নিজদের পরিষ্কার ও নতুন  জামা-কাপড় পরে সেজেগুজে শিবিরের রাস্তা ও অলিগলিতে  হইচই আর আনন্দে মেতে উঠেছে। কিশোরীরাও নিজেদের সাজানোর চেষ্টা করেছে মনের মতো করে। তবে বড়দের ঈদ উৎসবের আমেজ নেই। তাদের মনে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নিষ্ঠুর নির্যাতনে প্রাণ হারানো স্বজনদের দুঃসহ স্মৃতি!

উখিয়া ও টেকনাফের ৩২টি রোহিঙ্গা শিবিরে ১ হাজার ২০০টি মসজিদ ও ৬৪২টি নুরানি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ নিবন্ধিত পুরনো রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ১৮টি, অনিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ৩৮২টি ও ৩৮টি নুরানি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব মসজিদ ও নুরানি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ঈদের জামাত আদায় করেছে মুসলিম রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী। কিছু কিছু জায়গায় খোলা আকাশের নিচেও ঈদের নামাজ আদায় করতে দেখা গেছে।

রোহিঙ্গা মুসল্লিরা বলেন, আগস্ট মাস রোহিঙ্গাদের জন্য জঘন্যতম কালো অধ্যায়ের। এ মাসে খুব কাছ থেকে দেখেছি মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নৃশংস রূপ। ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে চোখের সামনেই সেনারা ছেলে, মেয়ে, ভাই, বোন, স্ত্রী, বাবা-মাকে মেরে ফেলেছে। আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে ঘরবাড়ি। লুট করা হয় সহায়-সম্বল।

আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের চেয়ারম্যান মহিবুল্লাহ  বলেন, ‘আমরা দেশে যেভাবে ঈদ করতাম, এখানে সেভাবে ঈদ করতে পারছি না। কারণ আমরা এখানে মোহাজির ও মুসাফির। এ জন্য আমাদের কোনো আনন্দ নেই। তা ছাড়া অসংখ্য রোহিঙ্গা কোরবানির পশু পায়নি। যারা পেয়েছে তা নামে গরু। এমন রুগ্‌ণ, ছোট গরু কোরবানি কোনো সময় রোহিঙ্গারা করে না। এখানে আমাদের জন্য কোরবানি ওয়াজিব নয়, তাই কিছু করারও নেই।’

দেশি-বিদেশি এনজিওগুলোর বিরুদ্ধে রোহিঙ্গাদের প্রচণ্ড চাপা ক্ষোভ থাকলেও প্রকাশ করতে পারছে না বলে তারা জানায়। শুধু গরু নয়, সবক্ষেত্রেই তারা সাহায্য-সহযোগিতার নামে রোহিঙ্গাদের ঠকিয়ে আসছে।

উখিয়ার কুতুপালং মেগা ক্যাম্পের ইনচার্জ রেজাউল করিম বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে সব রোহিঙ্গা শিবিরে ঈদের নামাজ সম্পন্ন হয়েছে। ঈদ উপলক্ষে রোহিঙ্গা শিবিরগুলোকে কড়া নজরদারিতে রাখা হয়েছে।

এনআই

আরও পড়ুন