সোনাগাজী থানায় বিচার চাইতে গিয়ে গৃহবধূ দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় সুজন চন্দ্র দাস নামে এক পুলিশ (এএসআই) কর্মকর্তাকে ফেনীর পুলিশ লাইনে ক্লোজড করা হয়েছে। তিনি সোনাগাজী মডেল থানার এএসআই (উপ-উপরিদর্শক) হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
সহকারী পুলিশ সুপার সাইফুল আহমেদ ভূঁইয়া জানান, বিষয়টি চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি অফিসের অপরাধ বিভাগের পুলিশ সুপার হাসান মাহমুদ বিষয়টি তদন্ত করছেন।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তানিয়া হোসেনের আদালতে ওই নির্যাতিত নারী পুলিশ কর্মকর্তা তাকে ধর্ষণ করেছে বলে ২২ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।
ওই গৃহবধূ জবানবন্দিতে জানান, গত ১০ সেপ্টেম্বর তাকে ও তার পালক পিতা-মাতাকে চাচা ও চাচাতো ভাই মিলে মারধর করে আহত করে। ওই ঘটনায় ওইদিন সে বাদি হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় চাচা, চাচি ও চাচাতো ভাইয়ের বিরুদ্ধে সোনাগাজী মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। কর্তব্যরত পুলিশ কর্মকর্তা এএসআই সুজন চন্দ্র দাস যাতায়াত খরচ চাইলে দিতে পারেননি অসহায় ওই নারী। অভিযোগ দিয়ে নিরাশ হয়ে বের হওয়ার সময় থানার মাঠে দেখা মিলে রহিমা সুন্দরী নামের প্রতারক নারীর। সে নিজেকে পুলিশ পরিচয় দিয়ে ওই নারীকে তার বাসায় নিয়ে যান। সেখানে তাকে রেখে পুলিশ পাঠিয়ে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়ে তাকে বোন ডেকে তার বাসায় রেখে দেন। গত ১৫ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে এএসআই সুজনকে দিয়ে তাকে ধর্ষণ করায়। একই রাতে ১২টার দিকে শম্ভু শিকদার, আফলাছসহ ৫ জন যুবককে পুলিশের লোক বলে তার ওপর লেলিয়ে দেয়।
পরের দিন সকালে জ্ঞান ফিরলে রহিমা সুন্দরী নামের ওই প্রতারক নারীর কাছে গৃহবধূ তার ওপর এই নির্যাতনের কারণে জানতে চাইলে সে সঞ্জু শিকদার ও আফলাছ নামের দুই যুবককে এনে দ্বিতীয়বার ধর্ষণ করায়। এবং বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার হুমকি দেয়।
পরে ধর্ষিত গৃহবধূ বাদি হয়ে সঞ্জু শিকদার, রহিমা সুন্দরী ও আফলাছ হোসেনসহ ৩ জনের নাম উল্লেখ করে ও আরো ৩ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মঙ্গলবার রাতে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। তবে ওই গৃহবধূ পুলিশের ভয়ে প্রথমে ওই পুলিশ কর্মকর্তার নাম মামলায় উল্লেখ করেনি বলে তার জবানবন্দিতে উল্লেখ করেছেন। পুলিশ মঙ্গলবার রাতে সঞ্জু শিকদার ও নারী প্রতারক রহিমা সুন্দরীকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে প্রেরণ করেছে।
সোনাগাজী মডেল থানার ওসি মঈন উদ্দিন আহমেদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, ওই গৃহবধূ প্রথমে পুলিশ সদস্য কর্তৃক ধর্ষণের স্বীকার হয়েছেন তা মামলায় উল্লেখ করেননি- তবে ২২ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। আমরা বিষয়টি যাচাই-বাচাই করে ব্যবস্থা নেব।
কেএসটি