কোভিড-১৯ এর রোধে দেশে চলছে লকডাউন পরিস্থিতি। এ কারণে প্রায় ১৮ কোটি মানুষ ঘরবন্দী। এর মধ্যে প্রায় ৬ কোটি মানুষ কৃষি ও কৃষি কাজের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। একদিকে কর্মহীনতায় খাদ্য ও অর্থসঙ্কটে দিনমজুর শ্রেণির পরিবারগুলোর নাভিশ্বাস উঠেছে, অন্যদিকে হাজার হাজার হেক্টর জমিতে ফসল পেকে গেছে। সঠিক সময়ে এ ফসল গোলায় তুলতে না পারলে দেখা দেবে চরম খাদ্য সঙ্কট।
তার ওপর প্রবল ঝড়-বাদলা শুরু হলে দেখা দেবে আরেক বিপদ অকাল বন্যা। আর এটা হলে চলমান করোনারোধে সামাজিক দূরত্ব সহনীয় পর্যায়ে রাখা সম্ভব হবে না বলেও মত দিয়েছেন কৃষি ও অর্থনীতি সংশ্লিষ্ট বিশিষ্টজন।
আশু সমস্যার সমাধানের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী মঙ্গলবার (২১ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার হাওরাঞ্চলে একটি বাসে করে ৪০ জন কৃষি শ্রমিককে পাঠানোর মধ্য দিয়ে এই কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক আবদুল মতিন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মাসুদুর রহমান, জেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক দীপক কুমার পাল, সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আল ইমরান সহ আরও অনেকে।
আপাতত ১২০ জন শ্রমিক পাঠানোর সিদ্ধান্তের কথা জানান গাইবান্ধা জেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক দীপক কুমার পাল।
তিনি বলেন, এই করোনা মহামারি পরিস্থিতির মধ্যেও কৃষি ও কৃষককে রক্ষা করা অতি জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে। কৃষকরা দিন আনে দিন খায়। লকডাউনের দীর্ঘসূত্রতায় ঘরবন্দী এইসব কৃষক পরিবার খাদ্য ও অর্থ সঙ্কটে যেমন মানবেতর জীবন-যাপন করছে। ঠিক এ সময় কৃষি ও কৃষককে রক্ষাসহ ভবিষ্যৎ খাদ্য সঙ্কটের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে হাওরাঞ্চলে শ্রমিক পাঠানোর সরকারি সিদ্ধান্তে ঘরবন্দী অসংখ্য আতঙ্কিত মানুষের মাঝে কিছুটা হলেও প্রাণের সঞ্চার সৃষ্টি হবে। সরকারি ত্রাণের ওপর চাপ কিছুটা হলেও কমবে।
গাইবান্ধা সদর থানার তত্ত্বাবধানে ১১ জন শ্রমিককে গণউন্নয়ন এর সহযোগিতায় গাজীপুরে পাঠানো হয়েছে এবং গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে ধানকাটা শ্রমিকদের নাটোরের চলনবিলসহ বিভিন্ন জায়গায় পাঠানো হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক আবদুল মতিন দৈনিক জাগরণকে বলেন, মঙ্গলবার পর্যন্ত গাইবান্ধা থেকে ১০০ জন ধানকাটা শ্রমিককে দেশের বিভিন্ন জায়গায় পাঠানো হয়েছে। বুধবার (২২ এপ্রিল) আরও ৪০ থেকে ৫০ জন শ্রমিককে পাঠানো হবে। সেজন্য যাতায়াতের জন্য বাসও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
এসএমএম