
বরিশাল সরকারি বিএম কলেজে বিলীন হয়ে গেলো ৫০ দশকের পুরানো নেট হাউস ও মাঠ পরীক্ষণ এবং গবেষণা কেন্দ্রটি (বোটানিক্যাল গার্ডেন)। মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের অধীন এই গবেষণা কেন্দ্রের বিরল প্রজাতির গাছ কেটে বানানো হচ্ছে টেনিস গ্রাউন্ড। যা নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
বিএম কলেজ এলাকার বাসিন্দা ও একই কলেজের সাবেক ছাত্র মোহাম্মদ আলী জানান, প্রায় ৫০ দশক পূর্বে বিএম কলেজের মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের গবেষণা কাজের জন্য নেট হাউস ও মাঠ পরীক্ষণ কেন্দ্রটি বানানো হয়েছিল। যা বোটানিক্যাল গার্ডেন নামেই পরিচিত। এখানে শিক্ষার্থীদের হাতে-কলমে শিক্ষা দেয়া হত। কিন্তু হঠাৎ করেই বোটানিক্যাল গার্ডেন ধ্বংস করে সেখানে শিক্ষকদের খেলাধুলার জন্য টেনিস গ্রাউন্ড বানানো হচ্ছে। সেই সঙ্গে কেটে ফেলা হয়েছে বিরল প্রজাতির কিছু গাছ।
মৃত্তিকা ও বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র অনুশ কুমার চক্রবর্তী জানান, দীর্ঘ ধরেই বোটানিক্যাল গার্ডেনটি রয়েছে। তবে আমি বিএম কলেজে ভর্তি হওয়ার পর ৩ বছরেও দেখিনি এখানে কোনো গবেষণার কাজ হয়েছে। শিক্ষকরা মাঠ গবেষণার বিষয়ে কখনো উৎসাহিত করেননি। গাছ সংকটের অজুহাতে এখন গবেষণা কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে।
বোটানিক্যাল গার্ডেনের গাছ কেটে বানানো টেনিস গ্রাউন্ড
একই বিভাগের ছাত্রী মালিহা তাসফী নিশি জানান, গবেষণা কেন্দ্রে বর্তমানে নাগলিঙ্গম, সুন্দরীসহ বিরল প্রজাতির কিছু গাছ রয়েছে। গবেষণা কেন্দ্রের মাঝামাঝি স্থানে থাকা ওইসব গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে। মাঠ প্রশিক্ষক কেন্দ্রটি গবেষণা কাজের জন্য সংস্কার কিংবা উন্নয়ন না করে সেখানে শিক্ষকদের খেলাধুলার জন্য টেনিস গ্রাউন্ড নির্মাণের বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
বিএম কলেজের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানা যায়, বিএম কলেজে যত গাছ রয়েছে তার সবগুলোই গণপূর্ত বিভাগের অধীনে। এসব গাছ কাটার জন্য চার সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটিও রয়েছে। যার প্রধান জেলা প্রশাসক এবং সদস্য সচিব বিএম কলেজ অধ্যক্ষ। বাকি দুইজন সদস্য গণপূর্ত ও বনবিভাগের প্রতিনিধি। কিন্তু বোটানিক্যাল গার্ডেনের গাছ কাটার জন্য কমিটি কিংবা বন বিভাগের অনুমতি নেয়া হয়নি।
এ বিষয়ে বনবিভাগের কারো বক্তব্য না পাওয়া গেলেও বিএম কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর শফিকুর রহমান সিকদার জানান, নেট হাউসে দীর্ঘ বছর ধরেই গবেষণা কাজ বন্ধ রয়েছে। তবে ওখানে টেনিস গ্রাউন্ড অনেক আগে থেকেই আছে। নতুন করে বানানো হচ্ছে না। পুরানো টেনিস গ্রাউন্ডটিকে পুনঃসংস্কার করা হচ্ছে। তাছাড়া নেট হাউসে দুই একটি ছাড়া বিরল প্রজাতীর কোনো গাছ নেই। যে গাছ কাটা হয়েছে তা মেহেগুনি গাছ। তাও একটি মাত্র গাছ কাটা হয়েছে। এজন্যই কাউকে বলার প্রয়োজন বলে মনে হয়নি।
এসসি/এএস