
থামছে না তরমুজ সিন্ডিকেট। আবারও বিক্রি হচ্ছে কেজি দরে। প্রশাসনের নজরদারির পরও তরমুজের দামে নিয়ন্ত্রণ না আসায় বিক্ষুব্ধ নরসিংদির সাধারণ মানুষ।
তরমুজ মৌসুমী ফল। যদিও ফলটি এখন সারাবছরই কমবেশি বাজারে পাওয়া যায়। গ্রীষ্মকালে ফলটির উতপাদন বেশি হওয়ায় সহজলভ্যতা বেশি থাকে। প্রচণ্ড গরমে এই ফলটির চাহিদা আরও বেড়ে যায়। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে অসাধু ব্যবসায়ীরা তরমুজ নিয়ে সিন্ডিকেট করছে বলে অভিযোগ করেছে স্থানীয়রা।
স্থানীয়রা জানান, সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ব্যবসায়ীরা পিসের পরিবর্তে কেজির দরে বিক্রি করছেন তরমুজ। প্রতিকেজি তরমুজ এবার ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে।
রমজানের আগেও দাম হাতের নাগালে থাকলেও মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে এখন ফল ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে দাম বাড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ সাধারণ ক্রেতাদের।
স্থানীয়রা জানান, রমজানের আগে ৪ থেকে ৬ কেজি ওজনের একটি তরমুজ দেড় থেকে আড়াইশ টাকায় বিক্রি হতো। সেই তরমুজ কিনতে এখন লাগে ২০০ থেকে ৪০০ টাকা।
নরসিংদী বড়বাজার, ভেলানগর, পাঁচদোনা, মাধবদী ও আশপাশের বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, তরমুজের দাম এবার আকাশচুম্বী। সাধারণ ক্রেতাদের এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। অনেকেই আগামী ১৫দিন তরমুজ না খাওয়ার সিদ্ধান্ত ও পরামর্শ দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেছেন। আবার কেউ কেউ সিন্ডিকেট ভাঙতে প্রশাসনের কঠোর নজরদারির কামনা করেছেন।
নরসিংদী শহরের ভেলানগর বাজারে কারারচর থেকে তরমুজ কিনতে আসেন কবির হোসেন। তরমুজের কেজি দরের দাম শুনে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, "ব্যবসায়ীরা এবার সিন্ডিকেটের মাধ্যমে তরমুজের দাম বাড়িয়েছেন। তাই এখন সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে মৌসুমী ফল তরমুজ। এবার তরমুজের দাম শুনে যেনো মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়েছে।"
ভেলানগর থেকে তরমুজ কিনতে আসা রিকশাচালক সালাম মিয়া বলেন, "বাড়ি থেকে বলে দিছে তরমুজ নিতে। রিকশা চালাইয়া দুশত টাকা পাইছি, তরমুজ কিনমু কীভাবে।"
এদিকে নরসিংদীতে তরমুজ নিয়ে ব্যবসায়ীদের কোনও সিন্ডিকেট নেই দাবি করে নরসিংদী বড়বাজার ফল ব্যবসায়ী সমিতির মিন্টু ভূইয়া বলেন, "করোনার কারণে পরিবহন খরচ কয়েকগুণ বাড়তি হওয়ায় এবার দাম বেশি। এছাড়া এবার তুলনামূলকভাবে তরমুজের দাম কিছুটাই বেশিই।"
নরসিংদী জেলা ভোক্তা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মাহমুদুর রহমান বলেন, "জেলার বিভিন্ন বাজার মনিটরিং করা হবে। তেমন কিছু ব্যতিক্রম হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
এর আগে কেজি দরে তরমুজ বিক্রি করায় মঙ্গলবার ২৭ এপ্রিল জেলার রায়পুরা বাজারের তরমুজ ব্যবসায়ী রঞ্জিতকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুর রহমান খোন্দকার।
এছাড়াও জেলার পলাশ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো: আমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে উপজেলার খানেপুর বাজার, বিএডিসি মোড়, ওয়াপদা গেইট, পলাশ বাজার, ঘোড়াশাল বাজারে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেছেন। এ সময় উচ্চ মূল্যে তরমুজ বিক্রি করায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন অমান্যের অভিযোগে ৪ ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে এক হাজার আটশত টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।