ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারণে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের ভোলাব ইউনিয়নের ১৬ কিলোমিটার সড়কের নির্মাণ কাজ শম্বুকগতিতে এগুচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ধীরগতিতে নির্মাণ কাজ চলার কারণে কাজের বরাদ্দের প্রায় ৫৫ কোটি টাকা জলে ডুবে যাচ্ছে। কবে নাগাদ নির্মাণ কাজ শেষ হবে, তা নিয়ে সন্দিহান খোদ উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর। প্রায় ১৬ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ না হওয়ায় ভোলাব ইউনিয়ন বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে। ভোগান্তিতে পড়েছে ইউনিয়নের লাখো মানুষ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভোলাব ইউনিয়নের স্বর্ণখালী বাজার-ছনপাড়া ৭.৩০ কিলোমিটার সড়ক, আতলাপুর-ডাঙ্গা ৪.৬০ সড়ক ও স্বর্ণখালী বাজার-ভোলাব ইউনিয়ন পরিষদ পর্যন্ত ৩.৯ কিলোমিটার সড়ক দীর্ঘদিন ধরে বেহাল অবস্থায় পড়ে রয়েছে। সড়ক সংস্কারের দাবীতে স্থানীয়রা পাট ও বস্ত্র মন্ত্রী, উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বরাবর বেশ কয়েকবার আবেদনও করেছেন। অবশেষে ২০১৯ সালের শেষের দিকে এশিয়ান বেভেলপমেন্ট ব্যাংকের অর্থায়নে সড়কগুলো মেরামতের জন্য ৫৪ কোটি ৭৭ লাখ ৬৩ হাজার ৭৩ টাকা বরাদ্দ দেয়। উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল দরপত্র আহবান করেন। সড়ক তিনটির দরপত্র পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জেবি অফ এনসিইএল-পিডিএল। দরপত্র শেষে ২০১৯ সালের ১০ নভেম্বর থেকে নির্মাণ কাজ শুরু হয়। চলতি বছরের ২৯ জুন সড়কগুলোর নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখনো সিংহভাগ অংশ নির্মাণ বাকী। আগামী দুই মাসের মধ্যে সিংহভাগ কাজ শেষ করতে পারবেন কিনা, তা নিয়ে সন্দিহান খোদ উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর।
কথা হয় পূবেরগাঁও এলাকার বাসিন্দা সবুর মিয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, রাস্তার ছোট বড় গর্তের কারণে রাস্তা দিয়ে চলাচল করা দায়। দীর্ঘ সময় পার হলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি এখনো নির্মাণ কাজ শেষ করতে পারেনি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির গাফলতির কারণে নির্মাণ কাজ ব্যাহত হচ্ছে। এতে সাধারণ মানুষের চলাচলে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। হিমেল নামে এক যুবক জানান, রাস্তা নির্মাণের জন্য রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি করা হলেও রাস্তাটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়নি। রাস্তা নির্মাণ না হওয়ায় বর্ষার মৌসুমে কাদার সৃষ্টি হয় আর শুষ্ক মৌসুমে ধূলার জন্য এলাকাবাসী হাটতে পারে না।
ভোলাব ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন টিটু বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটিকে সড়কগুলো নির্মাণ কাজ দ্রুত শেষ করার কথা বলা হয়েছিল। আমি বেশ কয়েকবার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে সড়ক তিনটি নির্মাণ শেষ করতে বললেও তারা তা করেনি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি যদি নির্মাণ কাজ দ্রুত শেষ না করে তাহলে এলাকাবাসী কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলবে।
উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকৌশলী জামাল উদ্দিন বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউএনওসহ আমি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তাদের সঙ্গে বেশ কয়েকবার আলোচনা করেছি। শীঘ্রই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কথা বলবো।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির প্রজেক্ট ম্যানেজার মোরশেদ আলম বলেন, সড়ক নির্মাণে আমাদের কোন গাফলতি নেই। আমরা যতবারই রাস্তাগুলোর কাজ করতে গিয়েছি ততবারই স্থানীয় লোকজন বাধা দিয়েছে। এ কারণে আমরা কাজ করতে পারিনি। সড়ক গুলোর নির্মাণ কাজ দ্রুত শেষ করতে গত সোমবার (৩ মে) উপজেলা চেয়ারম্যানসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে সভা করেছি। তারা যেভাবে আমাদের গাইডলাইন দিয়েছে আমরা সেভাবেই কাজ করবো। নির্দিষ্ট সময়ে আগেই আমরা কাজ শেষ করতে পারবো বলে আশা করছি।