পূর্ব সুন্দরবনে মৌয়ালদের পারমিট আটকে রেখে লাখ টাকা জরিমানা আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বনবিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে রোববার (১৬ মে) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর এমন একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছে মৌয়ালরা।
ভুক্তভোগী মৌয়ালদের পক্ষে মো. অলি হাওলাদার জানান, তারা উপজেলার সোনাতলা গ্রামের ৯ জনের একটি দল গত ১ এপ্রিল শরণখোলা স্টেশন থেকে ১৫ দিনের পারমিট নিয়ে সুন্দরবনে মধু সংগ্রহে যান। এরপর বনবিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী পারমিট নবায়ন করতে ১৫ এপ্রিল সব মৌয়াল মিলে সুন্দরবনের কোকিলমনি টহল ফাঁড়িতে হাজির হন। সেখানে কোকিলমনির বনরক্ষীরা তাদের থেকে মধু উৎকোচ দাবি করেন। এ নিয়ে মৌয়ালদের সঙ্গে বিরোধ সৃষ্টি হয়। এসময় কোকিলমনি টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আবুল হোসেন দেখার কথা বলে তাদের থেকে পারমিট নিয়ে নেন। এরপর পারমিট ফেরৎ না দেয়ায় তারা কোস্টগার্ডের সহায়তায় শরণখোলায় ফিরে এসে বনবিভাগের স্টেশন কর্মকর্তা ও রেঞ্জ কর্মকর্তাকে পারমিট আটকে রাখার বিষয়টি অবহিত করেন। রেঞ্জ কর্মকর্তা এসময় পারমিট ফিরিয়ে এনে সমর্পণ করার ব্যবস্থা করবেন বলে তাদের আশ্বস্ত করেন এবং বিকল্প পারমিট করে মধু সংগ্রহ করতে যাওয়ার পরামর্শ দেন। এরপর বিকল্প পারমিটের মাধ্যমে মধু সংগ্রহ করে ফিরে আসলে শরণখোলা স্টেশনের বনরক্ষীরা তাদের জানান পূর্বের পারমিট সমর্পণ না করায় প্রায় এক লাখ টাকা জরিমানা হয়েছে। যা এখন প্রতিদিন তিন হাজার টাকা করে বৃদ্ধি পাচ্ছে। টাকা পরিশোধ না করলে তাদের নামে মামলা দায়ের করা হবে। বনরক্ষীদের এমন কথা শুনে মৌয়ালরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এমনকি তাদের ঘর-বাড়ি সব বিক্রী করলেও লাখ টাকা সংগ্রহ করা সম্ভব নয়। তাই কোনো উপায় না পেয়ে তারা ইউএনও’র কাছে বিষয়টি লিখিত ভাবে জানিয়েছেন। এছাড়া ডাকযোগে প্রধান বন সংরক্ষক ও বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ প্রেরণ করেছেন।
ইউএনও সরদার মোস্তফা শাহিন জানান, মৌয়ালদের অভিযোগের ব্যাপারে বনবিভাগের সঙ্গে কথা বলে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
এ ব্যাপারে শরণখোলা স্টেশন কর্মকর্তা অব্দুল মান্নান বলেন, কোকিলমনিতে পারমিট আটকে রাখার কথা মৌয়ালরা তাকে জানিয়েছেন। তিনি রেঞ্জে কর্মকর্তার শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত তারা পারমিট সমর্পণ করতে না পারায় প্রায় এক লাখ টাকা জরিমানা হয়ে গেছে।
রেঞ্জ কর্মকর্তা (এসিএফ) মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, পারমিট সর্মপণ করানোর দায়িত্ব তার নয়। তাছাড়া পারমিটের মেয়াদ একমাসের বেশি উত্তীর্ণ হয়ে প্রায় এক লাখ টাকা জরিমানা হয়েছে। এখন বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ছাড়া এর কোনো সমাধান তাদের হাতে নেই।
বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, এ ব্যাপারে তিনি রেঞ্জ কর্মকর্তার কাছ থেকে জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।