বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সেই নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সীমা শারমিনকে বদলি করা হয়েছে। ফুলগাছ খাওয়ায় ছাগল মালিককে দুই হাজার জরিমানা করায় আলোচনায় চলে আসেন ওই ইউএনও।
বুধবার (৯ জুন) দুপুরে বগুড়ার জেলা প্রশাসক জিয়াউল বলেছেন, “স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে বদলির আদেশের একটি চিঠি মঙ্গলবার (৮ জুন) ইউএনও সীমা শারমিনের কাছে পাঠানো হয়েছে। তাকে স্থানীয় সরকার বিভাগে বদলি করা হয়েছে। এটা নিয়মিত বদলি বলা যায়।”
উপজেলা পরিষদ পার্কের ফুলগাছ খাওয়ার দায়ে ছাগল মালিকের অনুপস্থিতিতে ভ্রাম্যমাণ আদালতে দুই হাজার টাকা জরিমানা করেছিলেন ইউএনও সীমা শারমিন। এতেও ক্ষান্ত থাকেননি তিনি, অবলা প্রাণী ওই ছাগলকে পাঁচ দিন আটকে রাখার পর বিক্রি করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
২৬ মে (বুধবার) বিকেলে হাউমাউ করে কেঁদে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন ছাগল মালিক সাহারা বেগম।
সাহারা বেগম বলেন, “এক বছর আগে ছাগলটি পাঁচ হাজার টাকায় কিনেছি। বর্তমানে ওই ছাগলের পেটে তিন মাসের বাচ্চা রয়েছে।”
উপজেলা পরিষদ ডাকবাংলো এলাকার জিল্লুর রহমানের স্ত্রী সাহারা বেগম সংসারের বাড়তি রোজগারের জন্য মুরগি ও ছাগল পালন করেন। ১৭ মে উপজেলা পরিষদ চত্বরে ঘাস খেতে খেতে একসময় ফুলগাছ খেয়ে ফেলে তার ছাগলটি। ঘটনা দেখতে পেয়ে ইউএনও তার নিরাপত্তাকর্মীকে দিয়ে আটক করেন ছাগলটি।
এদিকে সাহারা বেগম ছাগলটি দেখতে না পেয়ে খোঁজাখুঁজির একসময় দেখতে পান উপজেলা চত্বরের ভেতর ছাগলকে বেঁধে রেখে ঘাস খাওয়াচ্ছেন ইউএনও অফিসের এক নিরাপত্তাকর্মী।
সাহারা বেগম ছাগল নিতে চাইলে দেওয়া যাবে না বলে সাফ জানিয়ে দেয়। নিরুপায় হয়ে পাঁচ দিন ধরে ইউএনওর কাছে আবেদন করেন, কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। এরপর তাকে জানানো হয় যে, ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে দুই হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানার টাকা দিয়ে ছাগল ছাড়িয়ে নিয়ে যেতে।
কিন্তু জরিমানার টাকা পরিশোধ না করায় ইউএনও ২২ মে ছাগলটি বিক্রি করে দিয়েছেন বলে দাবি করেছেন সাহারা বেগম।
ইউএনওর সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের আওতায় জরিমানা করার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।