• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুন ৯, ২০২১, ০৩:১৪ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ৯, ২০২১, ০৩:২০ পিএম

আকস্মিক বন্যায় সড়ক শেষ

আকস্মিক বন্যায় সড়ক শেষ

সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার দোয়ারা-বোগলা সড়কটি জনসাধারণের ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত বছর আকস্মিক বন্যায় সড়কটির সুরমা ইউনিয়নের মহব্বতপুর মোকাম এলাকায় বড় ধরনের ভাঙন সৃষ্ট হয়। মেরামতের অভাবে সড়কের এই অংশটি এখন খালে পরিণত হয়েছে। এছাড়া সড়কের বিভিন্ন স্থানে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ।

এলজিইডির আওতাধীন দোয়ারা-বোগলা সড়ক দিয়ে বোগলা ইউনিয়নের ২৮টি গ্রামসহ পার্শ্ববর্তী সুরমা ও বাংলাবাজার ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ উপজেলা সদর, জেলা সদর ও বিভাগীয় শহরে যাতায়াত করে থাকে। এছাড়া বাংলাদেশ ও ভারত সীমান্তে নবনির্মিত বাগানবাড়ি বর্ডার হাটে যোগাযোগের একমাত্র ভরসা এই সড়ক। দুর্গম সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা কৃষি, ব্যবসা-বাণিজ্য, স্বাস্থ্যসেবার কাজসহ দৈনন্দিন কাজে যোগাযোগের জন্য এই সড়কটি ব্যবহার করে থাকেন। জনগুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি বেহাল অবস্থায় পড়ে আছে। এখনো কোনো ধরনের মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

সরেজমিনে গিয়ে সড়কের ভাঙা অংশে নির্মিত ঝুঁকিপূর্ণ কাঠের সেতু ব্যবহার করতে দেখা গেছে। ভাঙা সড়কে পারাপারের বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না থাকায় কাঠের সেতুর ওপর দিয়ে যাতায়াত ও যান পারাপার করছেন পথচারীরা। স্থানীয়ভাবে নির্মিত কাঠের এই সেতুটি ইজারা দিয়েছে সুরমা ইউনিয়ন পরিষদ।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, “এটা কোনো নদী-নালা কিংবা খাল নয়। এটাই আমাদের সড়ক। প্রায় এক বছর হয়ে গেছে এখনো সড়কটি মেরামতের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। বর্ষা মৌসুমে প্রাকৃতিকভাবে হাওরের পানি চলাচল সড়কের এই অংশে বাধাগ্রস্ত হওয়ায় প্রতিবছরই এখানে ভাঙন দেখা দেয়। যে কারণে সড়কের এই অংশ কোনোভাবেই টেকানো যাচ্ছ না। ফলে এলাকাবাসীদের চলাচলে ব্যপক সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। পাশাপাশি ব্যবসায়িক পণ্য নিতে আনতে ব্যাপক প্রতিবন্ধকতা তৈরি হচ্ছে। সড়কটি রক্ষা করতে ভাঙা অংশে একটি স্লুইচ গেট নির্মাণ জরুরি।’’

সুরমা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মামুনুর রশীদ বলেন, ‘‘সড়কটি ভাঙার পরপরই এলজিইডি অফিসকে অবহিত করেছি। আপাতত সড়কের এই ভাঙা অংশে পারাপারের সুবিধার্থে স্থানীয়দের সহযোগিতায় কাঠের সেতু নির্মাণ করে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ইজারা দেওয়া হয়েছে। সাধারণ মানুষের পারাপার ফ্রি। শুধু গাড়ি পারাপার করতে টোল আদায় করতে বলা হয়েছে।’’

বোগলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফুল ইসলাম জুয়েল বলেন, ‘‘সড়ক দিয়ে চলাচল করতে ট্যাক্স দিতে হয়। সাধারণ মানুষরা প্রতিনিয়তই ভোগান্তির সম্মুখীন হচ্ছেন। উপজেলার মাসিক সমন্বয় সভায় দোয়ারা-বোগলা সড়কের বিষয়ে একাধিকবার কথা বলেছি। সাধারণ মানুষ যে কতটা কষ্টে আছে, এদিক দিয়ে যাতায়াত না করলে বোঝানো যাবে না। সড়কটি দ্রুত মেরামতের দাবি জানাই।’’

এ ব্যাপারে দোয়ারাবাজারের এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী দেবতোষ পাল বলেন, ‘‘আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। এই সড়কটাকে একটা বন্যা প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত করে এখানে ব্রিজের চাহিদা দিয়েছি। কিন্তু ওই এলাকার লোকজন এখানে ব্রিজ চাচ্ছে না। তাদের দাবি, এখানে ব্রিজ হলে নাকি বন্যার সময় তাদের বসতবাড়িতে পানি প্রবেশ করবে, ফসলি জমি তলিয়ে যাবে। ওরা শুধু প্রটেকশন চাচ্ছে। কিন্তু এখানে তো প্রটেকশন টেকানো যাচ্ছে না। কারণ প্রতিবছর যে পাহাড়ি ঢল নামে এতে ঢলের পানি এখানে এসে বাধাপ্রাপ্ত হয়। যে কারণে প্রতিবারই এখানে ভাঙন দেখা দেয়।’’