• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুলাই ৪, ২০২১, ০১:১৮ এএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ৪, ২০২১, ০১:১৮ এএম

৪ জেলার নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে

৪ জেলার নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে
ফাইল ছবি

ভারী বৃষ্টি ও উজানের ঢলে উত্তরের জেলা বগুড়া, লালমনিরহাট, সিরাজগঞ্জ ও কুড়িগ্রামের বিভিন্ন নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এ সব জেলায় দেখা দিয়েছে বন্যার আশঙ্কা।

পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে কোনো এলাকায় তীব্র হয়েছে নদীর ভাঙন। এরই মধ্যে বিলীন হয়ে গেছে বহু ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি। 

বগুড়ার যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বন্যার আশঙ্কা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা ও স্থানীয়রা। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চাষিরা জমির পাট কাটতে শুরু করেছেন। সারিয়াকান্দিতে দায়িত্বে থাকা পানি উন্নয়ন বোর্ডের গেজ রিডার পরশুরাম জানিয়েছেন, ভোরে যমুনার পানি বিপৎসীমার ১৩০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।

পাউবোর উপবিভাগীয় প্রকৌশলী গোলাম মোহাম্মদ তাসকিয়া বলেন, কয়েকদিন ধরেই যমুনা এবং বাঙালী নদীতে পানি বাড়ছে। এ মাসের মাঝামাঝি সময়ে বন্যার আশঙ্কা করা যাচ্ছে। কয়েকজন পাটচাষি জানান, পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে পাট খেত তলিয়ে যাবে। বন্যা থেকে রক্ষা পেতে আগাম পাট কাটা হচ্ছে। 

তিস্তা নদীতে  পানি বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এতে চরাঞ্চলে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি শুরু হয়েছে নদী ভাঙন। গত ২৪ ঘণ্টায় তিস্তার ভাঙনে বিলীন হয়েছে ১১টি বসতবাড়ি।

শনিবার (৩ জুলাই) বিকালে হাতীবান্ধায় তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৫০ সেন্টিমিটার। ব্যারাজ রক্ষায় ৪৪টি গেট খুলে দেওয়া হয়েছে। ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, ক্রমেই বাড়ছে তিস্তার পানি।

কুড়িগ্রামের সব নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপৎসীমার কয়েক সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদী তীরবর্তী এলাকায় ১০ হাজার মানুষ পানি বন্দী হয়ে পড়েছেন। অনেকেই বাড়িতে থাকলেও কেউ উঁচু বাঁধে আবার কেউ পার্শ্ববর্তী চরের স্কুলে আশ্রয় নিয়েছেন। এ সব এলাকার পাট, সবজি ও বীজতলাসহ বিভিন্ন ফসল নিমজ্জিত হয়েছে। কয়েকদিন ধরে এ সব খেত ডুবে থাকায় ফসল নষ্টের শঙ্কায় আছেন কৃষকরা।

সদর ও উলিপুর উপজেলার কয়েকটি স্থানে নদী ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। উলিপুরের গোড়াই ও থেতরাইয়ে তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও মসজিদ ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে। গত কয়েকদিনে ১০টি পরিবারের বাড়িঘর নদীগর্ভে চলে গেছে।

সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে যমুনার নদীর পানি বাড়ছে। গত ২৪ ঘন্টায় সিরাজগঞ্জে পয়েন্টে ১৮ সেমি. পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে বিপৎসীমা অতিক্রম করেনি। বর্তমানে পানি বিপৎসীমার ১ দশমিক ২৩ সেমি নিচ প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধির ফলে চরাঞ্চলের নিম্ন এলাকা তলিয়ে গেছে। এভাবে বাড়লে দু-চার দিনের মধ্যে বিপৎসীমা অতিক্রম করবে।

ফেনীর ফুলগাজী ও পশুরামের বন্যা পরিস্থিতি উন্নতির দিকে। শুক্রবার বৃষ্টি না হওয়ায় ওই দিন বিকাল থেকে রাস্তা-ঘাট ও মানুষের বাড়ির আঙ্গিনা থেকে পানি নামতে শুরু করেছে।

এর আগে প্রবল বর্ষণ ও উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে ফুলাজী ও পরশুরামে মুহুরী ও কহুয়া নদীর তিনটি স্থানের বাঁধ ভেঙে ১০ গ্রাম প্লাবিত হয়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যার্তদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করতে দেখা গেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপবিভাগীয় প্রকৌশলী আকতার হোসেন জানান, পানি নেমে গেলে এবং বৃষ্টি পুরোপুরি বন্ধ হলে বাঁধ মেরামত করা হবে। ফেনী জেলা প্রশাসক আবু সেলিম মাহমুদ-উল হাসান জানান, বন্যাকবলিত এলাকায় মানুষ নিরাপদ স্থানে যাওয়ার সুবিধার্থে সেখানে লকডাউন কিছুটা শিথিল করা হয়েছে।

জাগরণ/এসএসকে/এমএ