নেত্রকোনার আটপাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণে নিন্মমানের সামগ্রী ব্যবহার করার অভিযোগে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রকল্প বাস্তবায়ন ও তদারকির দায়িত্বে থাকা ট্রাস্কফোর্স কমিটির পাঁচ সদস্যকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। গতকাল রোববার বিকেলে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. মনির হোসেন স্বাক্ষরিত এ নোটিশ দেওয়া হয়। নোটিশে আগামী পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে উপযুক্ত জবাব দিতে বলা হয়েছে।
যাদের বিরুদ্ধে নোটিশ দেয়া হয়েছে তারা হলেন, আটপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহফুজা সুলতানা, সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুলতানা রাজিয়া, এলজিইডি’র উপজেলা প্রকৌশলী মোহতাসিম বিল্লাহ, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. মেশকাতুর রহমান ও দুওজ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুস সেলিম । তাদের মধ্যে ইউএনও পদাধিকার বলে ট্রাস্কফোর্স কমিটির সভাপতি এবং পিআইও সদস্য সচিব।
জানা গেছে, আটপাড়ার দুওজ ইউনিয়নের চারিগাতিয়ায় আশ্রয়ণ প্রকল্পে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উপহার হিসেবে ৩৮টি ঘর নির্মাণ করা হয়। এরমধ্যে প্রথম পর্যায়ে ২৮টি ও দ্বিতীয় পর্যায়ে ১০টি ঘর রয়েছে। ঘরগুলো পরিদর্শন ও সুবিধাভোগীদের খোঁজ খবর নিতে গত শনিবার দুপুরে স্থানীয় সাংসদ অসীম কুমার উকিল ও জেলা প্রশসাক কাজি মো. আবদুর রহমান সেখানে যান। সাংসদ উপকারভোগীদের সঙ্গে মতবিনিময়সহ খাদ্য সহায়তা প্রদান করে চলে আসার এক পর্যায়ে জেলা প্রশাসক প্রতিটি ঘর ঘুরে দেখেন।
এ সময় দ্বিতীয় পর্যায়ের ১০টি ঘরের জানালা নিম্নমানের হওয়ায় তিনি অসন্তোষ প্রকাশ করেন। এসব ঘরের অন্তত ৪০টি জানালায় বিধি অনুযায়ী ১৬ গেজের স্টিলের পরিবর্তে হালকা টিনের পাত ব্যবহার করা হয়েছে। এ ছাড়া জানালার কাঠামোয় (ফ্রেমে) হালকা স্টিল ব্যবহার হয়। জেলা প্রশাসকের সঙ্গে থাকা উপস্থিত এক ব্যক্তি হাতের আঙ্গুল দিয়ে একটি জানালায় চাপ দিলে তা ভেঙে যায় এবং কাগজের মতো টিনের পাতটিও ছিঁড়ে যায়। বিষয়টি দেখে জেলা প্রশসক চরম ক্ষুব্ধ হন। এ সময় তিনি সঙ্গে থাকা অতিরিক্ত জেলা প্রশসক (রাজস্ব) মো. মনিরুল হোসেনকে ডেকে প্রকল্প বাস্তবায়নের সঙ্গে জড়িত পাঁচ কর্মকর্তাকে কারণ দর্শানোর জন্য নোটিশ দিতে নির্দেশ দেন। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. মনিরুল হোসেন বলেন, রোববার বিকেলে ওই পাঁচ কর্মকর্তার নামে নোটিশ ইস্যু করা হয়েছে। তাদের জবাব প্রাপ্তির পর পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
ট্রান্সফোর্সের সভাপতি ইউএনও মাহফুজা সুলতানা ও সদস্য সচিব মো. মেশকাতুর রহমান জানান, নোটিশের বিষয়টি তারা মৌখিকভাবে শুনেছেন। এখনো হাতে পাননি। তবে ক্রুটিপূর্ণ জানালাগুলো পরিবর্তন করা হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক কাজি মো. আবদুর রহমান বলেন, ত্রুটিযুক্ত জানালাগুলো অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে সারানোর নির্দেশ দিয়েছি। এ ছাড়া এ কাজে জড়িতদের বিরুদ্ধেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছি। প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে দেওয়া ঘর নির্মাণের কাজে কোন অনিয়মের ছাড় দেওয়া হবে না।
জাগরণ/এমআর