• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
প্রকাশিত: আগস্ট ২৪, ২০২১, ১১:১৭ এএম
সর্বশেষ আপডেট : আগস্ট ২৪, ২০২১, ১১:১৭ এএম

ফুলবাড়ীর দাদির কালাই রুটি

ফুলবাড়ীর দাদির কালাই রুটি

ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে ভোজনরসিকদের রুচি পরিবর্তনের সুযোগ তৈরি করেছে বানু বেওয়ার (৭০) হাতে তৈরি রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী মাষকালাই রুটি। অনেকে তাকে রুটি দাদি বলেই সম্বোধন করছেন। সন্ধ্যা নামলেই ফুলবাড়ী পৌর এলাকার টিএনটি মোড়ে (সড়ক ও জনপথ ডাকবাংলোর বিপরিতে) রুটি দাদির অসাধারণ স্বাদের কালাইয়ের রুটি খেতে অনেকেই ছুটে আসছেন দূরদূরান্ত থেকে।

রুটি দাদি বানু বেওয়া চাঁপাইনবাবগঞ্জের মোষবাতান কলোনীর মৃত রেজাউল ইসলামের স্ত্রী। স্বামী মারা যাওয়ার পর তার পরিবারের ভাড় কাঁধে নেন তার ছেলে ইসলাম খাঁন। স্ত্রী দুই ছেলে ও মাকে নিয়ে দেশের বিভিন্নস্থানে লেপ-তোষকের কাজ করতেন ইসলাম খাঁন। গত চারবছর পূর্বে নীলফামারীতে লেপ-তোষক বিক্রির কাজে গিয়ে ভ্যান-ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে সপরিবারে আহত হন। তবে সকলে কম আহত হলেও ইসলাম খাঁনের রক্ষা হয়নি। তিনি গুরুত্বর আহত হন। তার চিকিৎসা শেষে সপরিবারে ফুলবাড়ীতে এসে ফসলি জমি কিনেন ইসলাম খাঁন। পরে পৌরএলাকার বুন্দিপাড়ায় একটি বাসা-বাড়ি ভাড়া নিয়ে সপরিবারে সেখানে থাকছেন। ইসলাম খাঁন আগের মতো কাজ করতে না পারায় পরিবারের হাল ধরেছেন তার দুই ছেলে রবিউল ইসলাম (২০) এবং রাসেল ইসলাম (১৮), স্ত্রী  রেজিয়া বেগম (৪০) ও বৃদ্ধা মা বানু বেওয়া (৭০)। দুই ছেলে সকাল থেকেই চা-পান বিক্রি করেন। পাশাপাশি বিকাল গড়িয়ে এলেই বৃদ্ধা বানু বেওয়া ও রেজিয়া বেগম লেগে পড়েন মাষকালাইয়ের রুটিসহ ভাজাপোড়া তৈরির কাজে। ছেলে বৌ রেজিয়া সবকিছু যোগান দেন আর বানু বেওয়া পিষা মাষকালাইয়ের আটা পানি দিয়ে মাখেন। তারপর হাতে তালুতে দাবিয়ে হাতে ঘোরাতে থাকেন যতক্ষণ পর্যন্ত না সেটি গোলাকার হয়ে আসছে। গোলাকার আকারে আসলেই মাটির একটি পাত্রে সেঁকে তৈরি করেন সেই জনপ্রিয় মাশকালাই রুটি।

ইতোমধ্যে অন্যস্বাদের মুখোরোচক খাবারের খোঁজে দূরদুরান্ত থেকে ছুটে আসেন বানু বেওয়ার হাতে তৈরি মাষকালায়ের রুটি খেতে। প্রতিপিছ রুটি ২০ টাকায় বিক্রি করছেন। সাথে দিচ্ছেন বেগুনের ভর্তা কিংবা মরিচের ভর্তা।

রুটি বিক্রেতার ছেলে বৌ রেজিনা বেগম বলেন, আমাদের বাড়ি চাপাইনবাবগঞ্জে ব্যবসার কাজে দেশের বিভিন্নস্থানে ঘোরাফেরা করতাম। কিন্তু আমাদের বহণকারী ভ্যানের সাথে ট্রাকের সংঘর্ষ হওয়ায় আমার স্বামী শারীরিকভাবে অক্ষম হয়ে পড়ে। পরে ফুলবাড়ীতে এসে জমানো টাকা দিয়ে ফসলি জমি কিনেছি। বর্তমানে বুন্দিপাড়া গ্রামে ভাড়া বাড়িতে আছি। আমার শাশুড়ির তৈরি রুটির ব্যবসা ভালো চললে বসতভিটা কিনে একটি বাড়ি বানাবো। 

রুটি দাদি বানু বেওয়া (৭০) বলেন, রাজশাহী ও চাপাইনবাবগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী খাবার মাষকালাই রুটি। আদি এই খাবারের স্বাদ নিতে দেশ-দেশান্তর থেকে রাজশাহীতে ছুটে আসেন মানুষ। নিয়মিত ক্রেতাদের পাশাপাশি কৌতুহলী মানুষ প্রতিদিন ভিড় জমাচ্ছেন দোকানের সামনে। 

জাগরণ/এমআর