• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১, ২০২১, ০৪:৫০ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ১, ২০২১, ০৪:৫০ পিএম

মাদ্রাসাছাত্রী ও প্রবাসীর স্ত্রীকে জুতাপেটা

মাদ্রাসাছাত্রী ও প্রবাসীর স্ত্রীকে জুতাপেটা

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরের উত্তর-পূর্ব কেরোয়া এলাকায় সালিসি বৈঠকে সৌদি প্রবাসীর স্ত্রী ও অষ্টম শ্রেণির এক মাদ্রাসা ছাত্রীকে জুতাপেটাসহ লাঞ্ছিত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রেম সংক্রান্ত একটি ঘটনায় আহুত সালিসি বৈঠকে গত রোববার সন্ধ্যায় স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. আরিফ হোসেন ক্ষিপ্ত হয়ে নিজেই ওই ছাত্রী ও সৌদি প্রবাসীর স্ত্রীকে জুতাপেটায় বেদম মারধর করেন। এ সময় তাদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ভাঙচুর করে পানিতে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগীরা আইনি সহায়তা নিতে চাইলে মেম্বার ও তার সাঙ্গরা টের পেয়ে মা-মেয়েকে ধরে এনে একটি ঘরে অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে প্রতিবেশীরা থানায় খবর দিলে পুলিশ গিয়ে তাদের (ছাত্রী ও প্রবাসীর স্ত্রী) উদ্ধার করে উপজেলা হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে ওই দিনই ভুক্তভোগী সৌদি প্রবাসীর স্ত্রী রিনা বেগম বাদী হয়ে ইউপি সদস্য আরিফ হোসেনকে (৪২) প্রধান অভিযুক্ত করে ১১ জনের নামে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল জলিল।

এর আগে রায়পুর উপজেলার কেরোয়া ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডস্থ কালা শাহ ফকির বাড়িতে ঘটনাটি ঘটে। এরপর থেকে ওই মাদ্রাসা ছাত্রী ও তার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। লোকলজ্জার ভয়ে বাড়ির বাইরে বের হতে পারছে না।

অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই এলাকার কালা শাহ ফকির বাড়ির কাশিমের ১৩ বছর বয়সী মেয়ে সানজিদার পাশ্ববর্তী রামগঞ্জ এলাকায় প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। বিষয়টি তার পরিবারকে জানানোর পরও ওই কিশোরীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে অন্য আরেকটি ছেলের সাথে বিয়ের দিন ধার্য করা হয়। বিষয়টি সানজিদা মেনে নিতে না পেরে তার প্রেমিকের হাত ধরে লাপাত্তা হয়ে যায়।

এদিকে সানজিদার লাপাত্তা হওয়ার সাথে সৌদি প্রবাসী আব্বাস হোসেনের অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া মাদ্রাসা ছাত্রী প্রীতি আক্তার জড়িত থাকার অভিযোগ এনে সালিসি বৈঠক বসে। বৈঠকে কেরোয়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. আরিফ হোসেন, মো. সুমনসহ স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক চলাকালিন হঠাৎ ইউপি সদস্য আরিফ উত্তেজিত হয়ে উপস্থিত এলাকাবাসীর সামনে নিজ পায়ের জুতা খুলে মাদ্রাসা ছাত্রীকে পেটান। এসময় তার মা (সৌদি প্রবাসীর স্ত্রী) রিনা বেগম আপত্তি জানালে তাকেও একই জুতা দিয়ে উপর্যুপরি পেটাতে থাকে। লাঞ্ছিত প্রীতি ও তার মা রিনা বেগম জানান, থানায় অভিযোগ দেওয়ার পর সোমবার দুপুরে ইউপি সদস্য আরিফ ও তার লোকজন এসে থানায় না যাওয়ার জন্য বলেছে। বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে ও প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছে বলে অভিযোগ করেন তারা।

এ বিষয়ে কথা বলতে স্থানীয় ইউপি সদস্য আরিফ হোসেনের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করেও সাড়া পাওয়া যায়নি। পরে তার বাড়িতে গেলে ঘর তালাবদ্ধ দেখা যায়।

রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল জলিল বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।