• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৩, ২০২১, ০৩:৩২ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ৩, ২০২১, ০৩:৩২ পিএম

বাঞ্ছারামপুরে নদীতে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ, মানবেতর জীবনে জেলেরা

বাঞ্ছারামপুরে নদীতে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ, মানবেতর জীবনে জেলেরা

বাঞ্ছারামপুর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে তিতাস নদীতে বাঁশ ও জাল এর বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক প্রভাবশালীর বিরদ্ধে। এই বাঁধের কারণে এই এলাকায়  নৌ চলাচল বন্ধ এবং কচুরিপানা আটকে পানি তে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয়েছে। 

এই এলাকার দুই শতাধিক জেলে পরিবার বাধের কারনে নদী থেকে মাছ ধরতে না পারায় অনেক জেলে পরিবার মানবেতর জীবনযাপন করছেন। কয়েক বছর যাবত বাধ দিয়ে মাছ চাষ করলেও রহস্যজনক কারনে স্থানীয় প্রশাসন ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী।  

সরেজমিন দেখা যায়- উপজেলার ছলিমাবাদ ইউনিয়নের তিতাস নদীতে  নিলখী গ্রাম থেকে আশ্রাফবাদ গ্রামের মধ্যে  বাঁশ ও জাল দিয়ে তিতাস নদীতে আড়াআড়ি প্রায় পাঁচশ ফুট লম্বা  বাধ দেয়া হয়েছে। 

বাশঁ ও জাল দিয়ে আশ্রাফবাদ গ্রামের আব্দুল খালেক এই বাদ দিয়েছেন, গত আট বছর যাবত তিনি বাঁধ দিয়ে এখানে মাছ চাষ করেছে বলে অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী। নিলখী গ্রামে প্রায় ২১০ জেলে পরিবার রয়েছে বাঁধের কারণে তারা তিতাস নদীর এই অংশে মাছ ধরতে পারছেনা। মাছ ধরতে গেলে তাদের নানাভাবে হয়রানি ও মারধর করার অভিযোগ রয়েছে । মাছ ধরতে না পারায় অনেক জেলে পরিবার মানবতার জীবনযাপন করছে বলে অভিযোগ করেছেন তারা। এলাকাবাসী জানান গত বছর উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাসিরউদ্দীন সারোয়ার এই বাঁধ অপসারণ করলেও রহস্যজনক কারণে কয়েক দিন পর আবার এখানে বাদ দেওয়া হয়েছে।

নিলখী  গ্রামের  শুরেষ চন্দ্র দাস (৬০) জানান, আমার বাপ দাদারা এই নদীতে মাছ ধইরা জীবন চালাইতো, আমরাও অনেক বছর মাছ ধরছি এই নদীতে কিন্তু গত আট বছর ধইরা নদীতে নামতে পারিনা জাল নিয়া। এই বাঁধ অপসারণ  করতে প্রশাসনকে অনেকবার জানাইছি কোন লাভ হয় নাই, এখন যদি ভগবান আমাদের সহায় হোন।

ছলিমাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন জানান, নদীতে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করার বিষয়টি আমি শুনেছি ইউএনও স্যার গতবছর এই বাঁধ অপসারণ করেছিল। আবার বাদ দেওয়ার বিষয়টি আমি জানিনা আমি সরেজমিন গিয়ে বিষয়টি দেখব।
আশ্রাফবাদ গ্রামের আব্দুল খালেক জানান,বাধ দিয়ে মাষ চাষ করে আমার লস হয়েছে। আর আমি কাউকে মাছ ধরতে বাধা দেই নাই। ইউএন ও স্যার গত বছর আমার বাধ ভেঙ্গে দিয়েছিলো এর পর থেকে আমি আর আগের মত মাছ ছাড়ছি না। অনেক বছর বাধ দিয়ে চাষ করলেও তেমন বিক্রি করতে পারি নি। নিজে খেয়েচি ও বন্ধু বান্ধবকে দিয়েছি। বোয়াল ও শইল মাছ অন্য মাছদের খেয়ে ফেলায় তেমন মাছ বাড়তে পারছে না।

সলিমাবাদ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা ইদ্রিস আলী জানান, নিলখি আশ্রাফবাদে তিতাস নদীতে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করার বিষয় টি শুনেছি গতবছর ইউএনও  স্যার আমরা গিয়ে বাঁধ ভেঙে দিয়ে ছিলাম, আবার বাদ দিয়ে মাছ চাষ করার বিষয় টি আমি জানিনা আমি সরেজমিন গিয়ে  দেখব ।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান খান জানান, নদীতে বাঁধ দিয়ে কোনভাবে নৌ চলাচল ও পানি প্রবাহ বন্ধ করা যাবে না, আর মাছ চাষ কোন ভাবে সম্ভব নয়, আমি এই বাধ দেখার জন্য সরেজমিন যাব। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দা শমসাদ বেগম জানান,  নিলখি আশ্রাফবাদ গ্রামে তিতাস নদীতে বাঁধ দেওয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই, আমি সরোজমিন গিয়ে দেখবো আর নদীতে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করার কোন সুযোগ নেই । গত বছর বাঁধ ভেঙ্গে দেওয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই, আমি নতুন এসেছি।