সন্তান প্রসবের ১ ঘণ্টা পর এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন সাদিয়া আক্তার নামের এক শিক্ষার্থী। মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় দৌলতখান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়কেন্দ্রে সমাজকর্ম পরীক্ষায় অংশ নেন তিনি। সাদিয়া আক্তার উপজেলার আলী আশরাফ কলেজের শিক্ষার্থী। বাল্যবিয়ে ও সন্তান প্রসব তাকে পরীক্ষা দেওয়া থেকে বিরত রাখতে পারেনি।
জানা যায়, সাদিয়া আক্তার দৌলতখানের চরপাতা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সালাউদ্দিন কাজির মেয়ে। এসএসসি পরীক্ষায় পাস করার পর উপজেলার একই গ্রামের মেহেদি হাসানের সঙ্গে সাদিয়ার বিয়ে হয়। বিয়ের পর স্বামীর বাড়ি থেকেই তিনি পড়াশোনা করেন।
মঙ্গলবার সকাল ৭টায় সাদিয়ার প্রসব বেদনা শুরু হয়ে বাবার বাড়িতেই সন্তান প্রসব হয়। পরে স্বাভাবিকভাবে সাদিয়া ছেলেসন্তানের মা হন। সকাল ৯টায় একটি ব্যাটারিচালিত ভ্যানে করে সাদিয়া তার মায়ের সঙ্গে এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়ার জন্য কেন্দ্রে নিয়ে আসেন।
শিক্ষকরা জানান, সে দেড় ঘণ্টার পরীক্ষা সুন্দরভাবে সম্পন্ন করেছে। আলী আশরাফ কলেজের প্রভাষক মিরাজুর রহমান জানান, সাদিয়া আক্তার লেখাপড়ায় খুব মনোযোগী। একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির পর পরই তার বিয়ে হয়। কিন্তু সাদিয়া অন্য শিক্ষার্থীদের মতো নিয়মিত ক্লাস করেছে। বাল্যবিবাহ ও সন্তান প্রসব এসব বাধা তাকে থামাতে পারেনি।
দৌলতখান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের সচিব গোবিন্দ প্রোসাদ সরকার জানান, পরীক্ষা চলাকালে আমি মেয়েটির খোঁজ নিয়েছি। সে খুব সাহসের সঙ্গে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন। তার পরীক্ষা দিতে যাতে করে কোনোপ্রকার অসুবিধা না হয় তার জন্য আলাদা রুমে তার পরীক্ষা নেওয়া হয়।
দৌলতখান উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম জানান, মেয়েটি যাতে ভালোভাবে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারে সে ব্যবস্থা করেছি। করোনাকালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এই উপজেলায় শতাধিক মেয়ের বাল্যবিবাহ হয়েছে। সদ্য সন্তান প্রসবের কারণে সাদিয়ার পরিবার থেকে তাকে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য সব ধরনের সহযোগিতা করেছে। সন্তান প্রসবের ১ ঘণ্টা পর পরীক্ষা দিলেন সাদিয়া।
এমইউ