সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার কৈখালি ইউপি চেয়ারম্যান আবদুর রহিমকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারের সময় তাকে ও বাধাদানকারী বেশ কয়েকজন নারী পুরুষকে পুলিশ নির্দয়ভাবে পিটিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী। তারা এ নিয়ে বিক্ষোভ করেন। থানার সামনেও বিক্ষোভ করেছে এলাকাবাসী। তবে পুলিশ মারপিটের এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে এসব ঘটনা ঘটে শ্যামনগরের কৈখালি ইউনিয়নের ভেটখালি ব্রীজের কাছে। গ্রেপ্তার ও চেয়ারম্যানসহ অন্যদের বেধড়ক মারপিটের ঘটনায় এলাকাবাসী ফুঁসে উঠেছে। তারা এর প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে শ্যামনগর থানার এসআই নুর কামাল ও এএসআই মেহেদির বিচার দাবি করেছেন।
এলাকাবাসী জানান, বুধবার সকালে শ্যামনগর থানার এসআই নুর কামালের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ভেটখালি এলাকায় পৌছায়। তারা পরপর দুইবারের নির্দলীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবদুর রহিমকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালায়। এ সময় গ্রামবাসী বাধা দিলে এসআই নুর কামাল ও এএসআই মেহেদিসহ পুলিশ সদস্যরা তাদের ওপর লাঠিচার্জ করে। এতে কমপক্ষে ১৫ জন কমবেশী আহত হন। তাদের মধ্যে রয়েছেন ইউনিয়নের বৈশখালি গ্রামের আঞ্জুয়ারা, কুলসুম বেগম, আশরাফ আলী, জাহাঙ্গীর হোসেন, আব্দুস সাত্তার, জরিনা খাতুনসহ কয়েকজন।
পুলিশ চেয়ারম্যান আবদুর রহিম ও ওই রাস্তায় অবস্থানকারী নারীদের বেধড়ক মারপিট করে ও চেয়ারম্যানকে জোর পূর্বক টেনে হিচড়ে মারপিট করে আটক করে। এ সময় মহিলারা প্রতিবাদ বিক্ষোভ দেখান ও স্লোগান দিয়ে তারা চেয়ারম্যানের মুক্তি ও মারপিটের জন্য দায়ি এসআই নুর কামালের বিচার দাবি করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান ও অন্যদের মারপিট করা হয়নি দাবি করে এসআই নুর কামাল বলেন, চেয়ারম্যানের সমর্থকদের হামলায় তিনি নিজে, এসআই মেহেদি, কনস্টেবল মেহেদি ও রিপন নামের এক কনস্টেবল আহত হয়েছেন।
চেয়ারম্যান আব্দুর রহিমকে গ্রেপ্তারের কারন সম্পর্কে জানতে চাইলে শ্যামনগর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ শহিদুল ইসলাম বলেন, তার বিরুদ্ধে ৬টি মামলার সাজা এবং ৪টি মামলার ওয়ারেন্ট রয়েছে। এসব অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আব্দুর রহিমকে মারপিট করা হয়নি। এমনকি জনসাধারনের ওপরও পুলিশ লাঠিচার্জ করেনি।
৬টি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত এবং ৪টি মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি সদ্যসমাপ্ত ইউপি নির্বাচনে কোন আইনে অংশগ্রহন করতে পেরেছেন এমন প্রশ্ন রাখা হলে তার সঠিক জবাব দিতে পারেননি ওসি।
তিনি বলেন, এসব উচ্চ পর্যায়ের ব্যাপার ও নির্বাচন কমিশনের ব্যাপার। তবে আমাদের কাছে এসব মামলা ও সাজার কাগজপত্র রয়েছে। এই রিপোর্ট লেখার সময়ও শ্যামনগরের কৈখালী ইউনিয়নে উত্তেজনা চলছিল। এলাকাবাসী শ্যামনগর থানার সামনে এসেও বিক্ষোভ প্রদর্শন করে চেয়ারম্যানের মুক্তি দাবি এবং মারপিটের ঘটনার জোর প্রতিবাদ জানায়।
তবে চেয়ারম্যানের ঘনিষ্ট সূত্ররা জানিয়েছে, সব মামলায় তিনি হাইকোর্টের জামিনে রয়েছেন।
জাগরণ/আরকে