• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৫, ৪ বৈশাখ ১৪৩২
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২২, ০৫:১৯ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২২, ১২:৩৫ এএম

অর্থ সংকটে পড়াশোনা বন্ধের উপক্রম প্রসেনজিতের

অর্থ সংকটে পড়াশোনা বন্ধের উপক্রম প্রসেনজিতের

অর্থাভাবে পড়াশোনা প্রায় বন্ধের পথে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) ছাত্র প্রসেনজিত মাহাতোরের। 

প্রসেনজিত মাহাতোর বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি বিভাগে দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। সম্প্রতি বাবা অসুস্থ হওয়ায় পরিবারটিতে নেমে এসেছে আর্থিক অসচ্ছলতা। পাঁচজনের পরিবারে প্রসেনজিতের বাবা একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন। কিছুদিন আগে তার স্ট্রোক হয়। তার শরীরের ডান পাশের অংশ অবশ হয়ে পড়ায় তিনি কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছেন। বিকলাঙ্গ হয়েই বর্তমানে বিছানায় সময় পার করছেন। মা দীর্ঘদিন ধরে কিডনির সমস্যায় ভুগছেন। তাদের ওষুধের জোগান ও দৈনন্দিন খরচ মেটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।  তাই বর্তমানে তার পক্ষে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া বেশ কঠিন হয়ে পড়েছে।  

জানা যায়, প্রসেনজিত সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার দেশীগ্রাম ইউনিয়নের ভাটারপাড়া গ্রামের পলাশ চন্দ্র মাহাতো ও কাজলী রানী মাহাতোর বড় ছেলে। তার বাবা পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। মাধাইনগর দ্বিমুখী উচ্চবিদ্যালয় থেকে ২০১৫ সালে এসএসসি এবং তাড়াশ ডিগ্রি কলেজের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ২০১৭ সালে এইচএসসি পাস করেন তিনি। 

প্রসেনজিত জানান, আমাদের পরিবারের আমিই বড় সন্তান। দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকাকালীন সময়ে কোনমতে পরিবারের সাথে দিন পার করেছি। তবে বর্তমানে গোপালগঞ্জ থাকায় নিজের অনেক খরচও বেড়েছে৷ উপরন্তু আর্থিক অবলম্বনের উপার্জনক্ষম বাবাও অসুস্থ। এদিকে কোন টিউশনিরও ব্যাবস্থা নাই। এমতাবস্থায় আমার পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া অসম্ভব হয়ে পরেছে ৷ 

প্রসেনজিতের পরিবারের ব্যাপারে দেশীগ্রাম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গনেন্দ্রনাথ বসাক জানান, প্রসেনজিতের বাবাকে আমি আপন বড় ভাইয়ের মতো শ্রদ্ধা করি ৷ তার পরিবার অনেক খারাপ সময় পার করছে ৷ আমি যতটা পারছি সহযোগিতা করেছি এবং ভবিষ্যতেও সর্বোচ্চটা করবো ৷ আমি আশা করবো প্রসেনজিতের বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ওর পড়াশুনার ব্যাপারে যতোটাসম্ভব সহযোগিতা করবে ৷

মাহাতোদের কুড়মী ভাষার গবেষক ও লেখক উজ্জ্বল মাহাতো জানান, প্রসেনজিতের পাশে দাড়ানো জরুরি হয়ে পড়েছে। সমাজের বিত্তবানেরা তার পাশে দাড়ালে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়াটা সম্ভব হবে তার জন্য।

এ বিষয়ে ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক ড. মোঃ শরাফত আলী বলেন, প্রসেনজিতের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তার লিখিত আবেদনপত্র পেয়েছি।  আমাদের ছাত্র কল্যাণ তহবিল কমিটির সাথে আলোচনা সাপেক্ষে ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।

কৃষি অনুষদের ডিন ও চেয়ারম্যান ( ভারপ্রাপ্ত) ড. মো. মোজাহার আলী বলেন, তার বিষয়ে আমাদের কাছে লিখিত আবেদন আসছে। তাছাড়া বিভাগের আর্থিক অবস্থাও ভালো নয়৷ তারপরেও তার বিষয়ে আমরা মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে এগিয়ে আসবো।

এদিকে প্রসেনজিতকে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার কথা জানান শেখ রাসেল হলের প্রভোস্ট ও  অ্যাকাউন্টটিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের শিক্ষক শেখ ফায়েকুজ্জামান। 

তিনি বলেন, প্রতিটি শিক্ষার্থী আমাদের সন্তানতুল্য। তাদের বিপদাপদে পাশে দাঁড়ানো আমাদের দায়িত্ব। অর্থের জন্য প্রসেনজিতকে হেরে যেতে দিব না। পড়াশোনা চালিয়ে নেওয়ার জন্য ব্যক্তিগতভাবে আমি প্রসেনজিতের পাশে থাকব।

জাগরণ/আরকে