মিরসরাই প্রতিনিধি
মিরসরাইয়ে স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ির অবহেলার শিকার হয়ে নবজাতকের মৃত্যুর ১৬ দিন পর গৃহবধুর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান গৃহবধু রিমা আক্তার (২১)। এর আগে গত ২৮ জানুয়ারি জন্মের কিছুক্ষণ পর মারা যায় তার শিশু পুত্র।
জানা গেছে, গৃহবধূ রিমা আক্তার উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ অলিনগর গ্রামের মাদু মিস্ত্রি বাড়ির মামুদুল হকের মেয়ে এবং একই এলাকার জাফর আহম্মদের পুত্র ওসমান গণির স্ত্রী।
বিগত ২০২০ সালের ২ মার্চ পারিবারিকভাবে রিমা আক্তার ও ওসমান গণির বিবাহ হয়। বিয়ের পর থেকে তার উপর চলতো নির্যাতন। রিমা ও তার শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় তার বড় ভাই আরিফ হোসেন বাদী হয়ে স্বামী ওসমান গণি, শ্বশুর জাফর আহম্মদ ও শাশুড়ি নাছিমা আক্তারকে অভিযুক্ত করে জোরারগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
গৃহবধূ রিমার বড় ভাই আরিফ হোসেন বলেন, বিয়ের পর থেকে রিমার উপর শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন করতো শ্বশুর বাড়ির লোকজন। গত ২৭ জানুয়ারি রাত ৯টার দিকে রিমার প্রসব বেদনা উঠলে তার শাশুড়ী আর স্বামী রিমাকে হাসপাতালে না নিয়ে স্থানীয় দাত্রী এনে বাড়িতে বাচ্চা প্রসবের চেষ্টা করেন। পরবর্তীতে ২৮ তারিখ সকালে তার একটি পুত্র সন্তান হলেও কিছুক্ষণ পর শিশুটি মারা যায়। রিমার শ্বশুর বাড়ির লোকজন কাউকে না জানিয়ে বাচ্চাটি দাফন করে ফেলে।
তিনি আরও বলেন, বাচ্চা প্রসবের সময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে রিমার শারিরীক অবস্থার অবনতি হলে তাকে প্রথমে বারইয়ারহাট জেনারেল হাসপাতালে ও পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুর আড়াইটার তার মৃত্যু হয়। এঘটনায় তিনি রিমার স্বামী ওসমান গণি, শ্বশুর জাফর আহম্মদ ও শাশুড়ি নাছিমা আক্তারকে অভিযুক্ত করে জোরারগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন বলে জানান।
চিকিৎসার অবহেলায় স্ত্রী ও সন্তানের মৃত্যুর অভিযোগের বিষয়ে জানতে স্বামী ওসমান গণির ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও সংযোগ স্থাপন করা সম্ভব হয়নি।
জোরারগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নূর হোসেন মামুন বলেন, গৃহবধূ রিমা আক্তারের মৃত্যুর ঘটনায় তার ভাই ৩ জনকে অভিযুক্ত করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। ময়নাতদন্ত শেষে নিহতের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
জাগরণ/আরকে