• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২২, ০১:৫৫ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২২, ০১:৫৫ পিএম

সুন্দরবনে শিকার নিষিদ্ধ কাঁকড়া উদ্ধার

সুন্দরবনে শিকার নিষিদ্ধ কাঁকড়া উদ্ধার

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় সুন্দরবন থেকে প্রজনন মৌসুমে শিকার নিষিদ্ধ দুই হাজার কেজির বেশি কাঁকড়া উদ্ধার করেছেন কোস্টগার্ডের সদস্যরা। 

মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সুন্দরবন বাজারের মোড়ল এন্টারপ্রাইজ নামে একটি প্রতিষ্ঠান থেকে এসব কাঁকড়া উদ্ধার করা হয়।

তবে অভিযানের শুরুতে প্রতিষ্ঠানের মালিকসহ কর্মচারীরা পালিয়ে যাওয়ায় কাউকে আটক করা যায়নি। আগের রাতে সুন্দরবন থেকে চোরা শিকারিদের মাধ্যমে সংগৃহীত কাঁকড়ার বিশাল এ চালান ঢাকায় পাঠানোর প্রস্তুতিকালে উদ্ধার করা হয়।

প্রজনন মৌসুম হওয়ার কারণে জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে সুন্দরবন থেকে কাঁকড়া শিকার নিষিদ্ধ। এরপরও প্রভাবশালী ব্যক্তিরা চোরা শিকারি দিয়ে গোপনে সুন্দরবন থেকে ডিমওয়ালা এসব কাঁকড়া শিকার করে আসছিলেন।

কোস্টগার্ড কৈখালী কোম্পানি কমান্ডার লে. জহিরুল ইসলাম বলেন, বিশাল একটি চালান ঢাকায় পাঠানোর প্রস্তুতিকালে কোস্টগার্ড সদস্যরা তা উদ্ধার করতে সমর্থ হয়েছেন। এসব কাঁকড়া বন বিভাগের উপস্থিতিতে সুন্দরবন সংলগ্ন মাদার নদীতে অবমুক্ত করা হয়েছে। কাঁকড়া উদ্ধার হলেও প্রতিষ্ঠানটির মালিকসহ জেলেরা পালিয়ে যান। এ ঘটনায় অনুসন্ধান শেষে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে বন বিভাগকে বলা হয়েছে।

বন বিভাগের কৈখালী স্টেশন কর্মকর্তা হারুন-অর রশিদ বলেন, কাঁকড়া শিকার নিষিদ্ধ বলে এখন সাদা মাছের পাস (অনুমতি) দেয়া হয়। তবে জেলেরা বনে প্রবেশের পর কাঁকড়া শিকারের মতো অপরাধ করছেন।

স্থানীয় একাধিক সূত্র বলছে, সপ্তাহখানেক আগে বন বিভাগের কাছ থেকে সাদা মাছ শিকারের পাস নিয়ে অর্ধশত নৌকায় করে শতাধিক জেলে সুন্দরবনে যান। এ সময় বন বিভাগের চোখ ফাঁকি দিয়ে সুন্দরবনের অভয়ারণ্য এলাকায় অবস্থান করে তারা কাঁকড়া শিকার অব্যাহত রাখেন। স্থানীয় সূত্রের মাধ্যমে খবর পেয়ে অভিযানে নামে বন বিভাগ। বুড়িগোয়ালীনি স্টেশন কর্মকর্তার নেতৃত্বে বনকর্মীরা প্রায় দুই দিন অভিযান চালিয়ে একটি নৌকাসহ মাত্র ১০ কেজি কাঁকড়া জব্দ করে লোকালয়ে ফিরে আসেন।

সুন্দরবন সংলগ্ন কৈখালী এলাকার মনির হোসেন, বুলবুল বলেন, বন বিভাগের অভিযান পরিচালনাকারী দলের সদস্যরা নদী থেকে উঠে আসার পর সোমবার (২১ ফেব্রুয়ারি) রাতে চোরা শিকারিরা ভিন্ন পথে এসব কাঁকড়া নিয়ে লোকালয়ে ফিরে আসেন। চুক্তি অনুযায়ী যাবতীয় কাঁকড়া সুন্দরবন বাজারের মোড়ল এন্টারপ্রাইজে হস্তান্তরের পর ঢাকায় পাঠানোর প্রস্তুতি চলছিল।

মোড়ল এন্টারপ্রাইজের মালিক রাসেল মাহমুদ মোড়ল। তিনি স্থানীয় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কাশেমের ছেলে। রাসেল মাহমুদ বলেন, ওসব সুন্দরবনের কাঁকড়া নয়। পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন নার্সিং পয়েন্টের (কাঁকড়া চাষ করা হয় এমন স্থান) কাঁকড়া।

তবে স্থানীয় একাধিক সূত্র বলছে, মোড়ল এন্টারপ্রাইজসহ সুন্দরবনের তীরবর্তী এলাকার অর্ধশত প্রতিষ্ঠান জেলেদের মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে প্রজনন মৌসুমে সাদা মাছের আড়ালে কাঁকড়া শিকারে সুন্দরবনে পাঠিয়ে থাকে। প্রজনন মৌসুমে অব্যাহতভাবে কাঁকড়া শিকার হওয়ায় সম্প্রতি সুন্দরবনে কাঁকড়ার উৎপাদন আশঙ্কাজনকভাবে হ্রাস পেয়েছে।

জাগরণ/আরকে