লোহাগড়া প্রতিনিধি
পারিবারিক কলহের জের ধরে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত নওগাঁর সাপাহার সীমান্তে কর্মরত বিজিবি সদস্য তানভীর নিজ অস্ত্রের গুলিতে আত্মহত্যা করেছে। তানভীর শেখ লোহাগড়া উপজেলার ইতনা গ্রামের শেখ আরজ আলীর ছেলে ছেলে। তার ছয় বছরের এক কন্যা সন্তান এবং স্ত্রী রয়েছে।
জানা গেছে, তানভীরের সাথে একই গ্রামের টুটুল কাজীর মেয়ে লিজা খানমের নয় বছর আগে প্রেম করে বিয়ে হয়। তাদের বিয়ে লিজার পরিবার মেনে নেয়নি। এ নিয়ে মমলা-মকদ্দমা পর্যন্ত হয়। তাদের তানহা নামে ৬ বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। তানভীর নওগাঁয় চাকুরীরত অবস্থায় একা থাকত।
একমাত্র মেয়ে তানহাকে দাদীর কাছে রেখে স্ত্রী লিজা খানম ঢাকায় লেখা পড়া করে। তানভীর ছুটি নিয়ে বাড়িতে আসার কথা ছিল। কিন্তু স্ত্রীর সাথে শেষ কথা বলে বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) ভোরে নিজে অস্ত্র বুকে ঠেকিয়ে গুলি করে আত্মহত্যা করে।
তানভীরের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, তার মৃত্যুতে পরিবারের লোকজনদের শান্তনা দেয়ার চেষ্টা করছে এলাকাবাসী। তবে ৬ বছর বয়সী একমাত্র শিশু সন্তান তানহা সমবয়সী বন্ধুদের সাথে খেলা করছে। তবে সে এখনও বুঝতে পারেনি তার বাবা আর আসবে না ফিরে। কোন দিন তার সাথে কথা বলবে না বা কোন দিন আর কোলে তুলে আদর করবে না।
শুক্রবার (৪ মার্চ) দুপুরে তানভীরের বাড়িতে গেলে স্ত্রী লিজা খানম জানান, বৃহস্পতিবার ভোর ৫ টার দিকে ফোনে তানভীরের সাথে কথা হয়। তার কথায় বোঝা যায় সে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে। আমার কাছে ক্ষমা চেয়ে আত্মহত্যা করার কথা জানায় কিন্তু আমার বিশ্বাস হচ্ছিল না। কারন এর আগেও কয়েকবার এরকম আত্মহত্যা করার কথা বলেছিল। তার ফোন চালু অবস্থায় গুলির শব্দ শোনা যায়। স্ত্রীর লিজার দাবি তানভীর নেশাগ্রস্থ ছিল।
তানভীরের পিতা আরজ আলী জানান, তানভীরের সাথে প্রায় চার বছর দেখা হয় না, ফোনে কথা হত। দুই মাসের ছুটিতে বাড়ি আসতে চেয়েছিলো। তবে সে আসছে ঠিকই কিন্তু লাশ হয়ে। তার সাথে আমার আর কোন দিন কথা হবে না। রাত ১১ টায় মরদেহ বাড়িতে এনে যশোর বিজিবি কর্তৃপক্ষের উপস্থিতিতে জানাযা শেষে পারিবারিক করবস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে।
জাগরণ/আরকে