পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার বোদা সরকারি মডেল স্কুল এন্ড কলেজে নুরে আলম সিদ্দিক ওরফে রয়েল নামে এক আইসিটি শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্কুলের ছাত্রীদের যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় ওই শিক্ষকের বিচার দাবি করে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও বোদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাররে সোমবার (২৮ মার্চ) লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে ভূক্তভোগী ছাত্রীদের পরিবার।
নুরে আলম সিদ্দিক ওরফে রয়েল পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার বোদা সরকারি মডেল স্কুল এন্ড কলেজের আইসিটি শিক্ষক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, নুরে আলম নামে ওই আইসিটি শিক্ষক প্রতিষ্ঠানটিতে অধ্যয়নরত বিভিন্ন শ্রেনীর ছাত্রীদের আইসিটি বিষয়ে হাতে কলমে শেখানোর জন্য ল্যাবে ডেকে নিতেন। পরে ছাত্রীরা ল্যাপটপে আইসিটি বিষয়ে শিখতে মনযোগী হলে তিনি হাতে কলমে শেখানোর ছলে ছাত্রীদেরকে বিভিন্নভাবে যৌন হয়রারি করেন। পরে এ বিষয়ে ছাত্রীরা তাদের বাসায় জানালে প্রধান শিক্ষক বরাবরে মৌখিক অভিযোগ করেন ভূক্তভোগী ছাত্রীদের পরিবার। পরে প্রধান শিক্ষক বিষয়টি দেখবেন বলে ছাত্রীদের পরিবারকে আশ্বস্ত করেন। পরে ছাত্রীদের পরিবার প্রধান শিক্ষকের কাছে কোনো বিচার না পেয়ে প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি বরাবরে অভিযোগ দায়ের করেন।
আরো জানা যায়, ওই আইসিটি শিক্ষক এতটাই প্রভাবশালী যে এ বিষয়ে কাউকে কিছু জানালে প্রতিষ্ঠান থেকে টিসি দিয়ে বের করে দেয়ার হুমকী দিতেন। ভয়ে অনেক ছাত্রী এ বিষয়ে মুখ খোলার সাহস পায়নি।
অভিযুক্ত আইসিটি শিক্ষক নুরে আলম সিদ্দিক ওরফে রয়েলের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, প্রথমত প্রতিষ্ঠানটি ২০১৯ সালে জাতীয়করণ হলে সেখানে আইসিটি বিষয়ে কোনো পদ না থাকায় আমি হাইকোর্টে মামলা করি। একারণে প্রতিষ্ঠানের অনেক শিক্ষকের বেতন বন্ধ হয়ে গেলে তারা আমার বিপরীত পক্ষ হয়ে দাঁড়ায়। আর দ্বিতীয়ত, অভিযোগে দ্বিতীয় স্বাক্ষরকারী সত্যেন চন্দ্র রায়ের সাথে আমার ব্যবসায়ীক বিরোধ আছে। একারণে সকলে মিলে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। আমি ল্যাবে ৫০ থেকে ৬০ জন ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে ক্লাস করি। সেখানে যৌন হয়রানি বা এ জাতীয় কাজ অসম্ভব। অভিযোগ ভিত্তিহীন।
বোদা সরকারি মডেল স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক জামিউল হক জানান, মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) বিকেলে পরিচালনা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় সহকারী প্রধান শিক্ষককে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ৫ কার্য দিবসের মধ্যে তারা প্রতিবেদন দিবেন। ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে বোদা সরকারি মডেল স্কুল এন্ড কলেজের পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও বোদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোলেমান আলী জানান, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যর কমিটি গঠন করা হয়েছে। ১০ কার্যদিবসের মধ্যে তারা তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবেন। অভিযোগের সত্যতা পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষককেও জরুরী আমলে নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
জাগরণ/আরকে