• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
প্রকাশিত: মার্চ ৩০, ২০২২, ০৩:৪৮ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : মার্চ ৩০, ২০২২, ০৩:৪৮ পিএম

ভাসমান সেতুতে হলো স্বপ্ন পূরণ 

ভাসমান সেতুতে হলো স্বপ্ন পূরণ 

ঘূর্ণিঝড় আম্পানের সময় পানির তোড়ে ভেঙে গিয়েছিল সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার হরিশখালি গ্রামে যাওয়ার একমাত্র সড়ক। সেই থেকে একপ্রকার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে ওই গ্রামের শত শত পরিবার। দুই বছর বিচ্ছিন্ন থাকার পর এখন সরাসরি যাতায়াতের ব্যবস্থা হয়েছে একটি ভাসমান সেতুর মাধ্যমে। 

মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) বিকেলে সেতুটি যাতায়াতের জন্য খুলে দেওয়া হয়।

স্থানীয়রা  জানান, ২০২০ সালে ঘূর্ণিঝড় আম্পানের আঘাতে খোলপেটুয়া নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে যায়। নদীর পানির তোড়ে ভেঙে যায় প্রতাপনগর ইউনিয়নের হরিশখালী গ্রামে যাতায়াতের একমাত্র সড়কটি। ইউনিয়নের কামারবাড়ি এলাকা থেকে হরিশখালির মধ্যে ৩০০-৩৫০ ফুট লম্বা গভীর খালের সৃষ্টি হয়।

স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জানান, ওই খাল পার হয়ে সাতক্ষীরা জেলা শহর, উপজেলা শহর, এমনকি প্রতাপনগর ইউনিয়ন সদরসহ বিভিন্ন এলাকায় যাতায়াত করতে হরিশখালিবাসীর একমাত্র ভরসা হয়ে দাঁড়ায় নৌকা। তিন মাস আগে পানি উন্নয়ন বোর্ড খোলপেটুয়া নদীর বেড়িবাঁধ সংস্কার করে লোকালয়ে পানি প্রবেশ বন্ধ করে। কিন্তু সৃষ্টি হওয়া খালের জায়গায় আর সড়ক নির্মাণ করা হয়নি।

গ্রামটির বাসিন্দাদের জন্য ভরসা হয়ে আসে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘ডু সামথিং ফাউন্ডেশন’। তাদের উদ্যোগে খালের জায়গায় নির্মাণ করা হয় একটি ভাসমান সেতু। সংগঠনটির আশাশুনি প্রতিনিধি সাইদুল ইসলাম বলেন, স্থানীয় মানুষের দুর্ভোগের কথা বিবেচনায় নিয়ে তারা কামারবাড়ি থেকে হরিশখালি পর্যন্ত ৩৫০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৫ ফুট প্রস্থ সেতুটি নির্মাণ করা হয়। সেতুটির নির্মাণকাজ শুরু হয় এবছর মার্চ মাসের ৩ তারিখ থেকে শেষ হয় মঙ্গলবার (২৯ মার্চ)। কাজ শেষের পরেই  সেতুটি যাতায়াতের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, ভাসমান সেতুটি নির্মাণে ৫৬টি ২০০ লিটারের ড্রাম, মেহগনি ও চম্বলের ৩৫০ সিএফটি কাঠ, ৬০ কেজি পেরেক ও তারকাঁটা ব্যবহার করা হয়েছে। ব্যয় হয়েছে দুই লাখ টাকার কিছু বেশি।

সেতু পেয়ে ভীষণ খুশি হরিশপুর গ্রামবাসী। কৃষক মানিক  বলেন, প্রতিদিন যাতায়াত করতে দুর্ভোগের শেষ ছিল না। শিশু ও নারীদের বেশি কষ্ট করতে হতো। কোনো ঘাট না থাকায় প্রায় প্রতিদিন মানুষ পড়ে জখম হতো। সেতুটি হওয়ায় সবার উপকার হয়েছে। 

স্থানীয়রা জানান, ভাসমান সেতুটি হওয়ায় ওই এলাকার মানুষ অনেকটা স্বাভাবিকভাবে চলাচল করতে পারবে।

প্রতাপনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু দাউদ বলেন, সড়ক ভেঙে যাওয়ায় হরিশখালি গ্রামের বাসিন্দা ও মৎস্যজীবীদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। দুই বছর ধরে ৩০০-৩৫০ ফুট স্থান নৌকায় যাতায়াত করতে হয়েছে। ভাসমান সেতু হওয়ায় তাদের যাতায়াতে আগের মতো আর দুর্ভোগ পোহাতে হবে না।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রতাপনগর ইউনিয়ন কৃষক লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল আজিজ, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল ঢালী, হাফেজ মইনুর, হাফেজ বাবুল হোসেন প্রমুখ।

জাগরণ/আরকে