
তুহিন রাজ, রাঙ্গাবালী
নির্মাণ কাজ অর্ধেকটা শেষ হয়েছে। সড়কে অনেক স্থানেই ইটের খোয়া ফেলে রোলার দেওয়া হয়েছে। এরপর প্রায় এক বছর ধরে ফেলে রাখা হয়েছে সড়কটি। ঠিকাদার সড়কটি নির্মাণ কাজ শেষ করতে দুইবার সময় বাড়ালেও নির্মাণ কাজ শুরু করতে পারেননি। বর্তমানে ধুলার দাপটে সাড়ে তিন কিলোমিটারের এই সড়কের দুই পাশের বাসিন্দাদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। যানবাহনের যাত্রী ও পথচারীরা চলাচলে পরেন দুর্ভোগে।
এই সড়কটি পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলায় সদর ইউনিয়নের কাছিয়াবুনিয়া এলাকায়।
রাঙ্গাবালী এলজিইডি কার্যালয় জানায়, পটুয়াখালী জেলার গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীন অবকাঠামো উন্নয়ন (পটুয়াখালী ও বরগুনা) প্রকল্পের’ আওতায় পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার ‘রাঙ্গাবালীর কাছিয়াবুনিয়া লঞ্চঘাট থেকে পশুরবুনিয়া আলী আশরাফ ফরেস্টারের বাড়ী পর্যন্ত’ ৩৭০০ মিটার দৈর্ঘ্যে ও ৩ মিটার প্রস্তের এই সড়কটি নির্মাণের উদ্যোগ নেয় এলজিইডি। ‘এমডিএইচ ও এসএইচই’ এই দুইটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান যৌথ ভাবে সড়কটি নির্মাণ কাজ করার কার্যাদেশ পান ২০১৯ সালের ১ সেপ্টেম্বর। সড়ক নির্মাণে চুক্তিমূল্য ধরা হয় ৩ কোটি ১৯ লাখ ৮৩ হাজার ৩০৯ টাকা। ২০১৯ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর সড়কটি নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন স্থানীয় সাংসদ মো. মহিব্বুর রহমান। এরপর ঠিকাদার সড়কটি নির্মাণ কাজ শুরু করে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সড়ক নির্মাণ করতে গিয়ে পুরো সড়কে বালু ও ইটের খোয়া ফেলে রোলার দিয়ে দেয়। তবে সড়কের অনেক স্থানে ঠিকমত খোয়া না ফেলা ও রোলার না দেওয়ায় উঁচু-নিচু রয়ে গেছে।
এদিকে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সড়কের ৫৫ শতাংশ কাজ করে ফেলে রেখে দেওয়ায় প্রায় বছরখানেক ধরেই ধুলার দাপটে ভোগান্তিতে থাকেন সড়কের দুই পাশের বাসিন্দারা। সড়কের দুই পাশের বাড়িঘর, গাছপালা ইটের খোয়ার ধুলোয় লালছে হয়ে রয়েছে। ধুলায় যানবাহনের যাত্রী ও পথচারীদের চলাচলে দুর্ভোগের যেন শেষ নেই।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ইতিমধ্যে সড়ক নির্মাণ কাজ বাবদ ১ কোটি ৩ লাখ টাকার একটি বিলও তুলে নিয়েছেন। এছাড়াও সড়কটি নির্মাণ কাজ শেষ করার জন্য ইতিমধ্যে সময় বাড়িয়েছে। ২০২১ সালের জুন মাসে সড়ক নির্মাণ কাজ শেষ করার কথা থাকলেও এখনো কাজ শুরু হয়নি।
সড়র এলাকার চর যমুনার বাসিন্দা আল মামুন বলেন, এক বছরের বেশি সময় ধরে সড়ক নির্মাণ কাজ বন্ধ। খোয়ার মান ভালো না হওয়ায় রোলারে খোয়া গুড়ো হয়ে গেছে। এখন বাতাসে উড়ে গাছপালা লাল হয়ে মরে যাচ্ছে। ধুলার অত্যাচারে আমরা অতিষ্ট হয়ে পরেছি। শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে কষ্ট হয়। শিশুরাও এর শিকার হচ্ছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আবদুল মান্নান বলেন, ধুলায় শিশু থেকে সব বয়সী মানুষ ঠান্ডা, কাশি, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে। সড়কটি নির্মাণ কাজ শেষ করার জন্য এলজিইডি কার্যালয়ে বার বার তাগিদ দেওয়ার পরও কোন কাজ হচ্ছে না।
সড়ক নির্মাণ কাজ বন্ধের ব্যাপারে জানতে চাইলে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি মো. আলী আশরাফ বলেন, আসলে এই সড়কটি নির্মাণে ফান্ড না থাকায় নির্মাণ কাজ শেষ করতে দেরি হচ্ছে। ফান্ড আনার চেষ্টা চলছে। খুব দ্রুত সড়কটি নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে।
এলজিইডি, রাঙ্গাবালী উপজেলা প্রকৌশলী মো. মিজানুল কবির বলেন, সড়কটি নির্মাণ কাজ শেষ করার জন্য ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান দুইবার সময় বাড়িয়েছেন। সড়ক নির্মাণ কাজ শুরু করার জন্য বারবার তাগিদ দেওয়া হচ্ছে। ৪ ফেব্রুয়ারি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দিয়ে তাগিদ দেওয়া হয়েছে। আমরা আশা করছি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান দ্রুত সড়ক নির্মাণ কাজ শুরু করবে।
জাগরণ/আরকে