ছাত্রলীগের দাবি না মানায় উপাচার্যের গাড়ি আটকিয়ে বাকবিতন্ডায় জড়িয়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) দুপুর দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। তবে ছাত্রলীগের সকল দাবিকে 'অন্যায় দাবি' বলে আখ্যা দিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড এ. এফ. এম. আবদুল মঈন।
উপাচার্য বলেন, ছাত্রলীগ কিছু অন্যায় দাবি নিয়ে এসেছিল। আমি এসব দাবি মানতে পারবো না বলায় তারা আমার গাড়ি আটকে রাখে।
ঘটনার সূত্রপাত দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে। এসময় উপাচার্যের কার্যালয়ে বিভিন্ন দাবি নিয়ে যান শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। উপাচার্য তাদের দাবি না মানায় একপর্যায়ে বাকবিতন্ডার জড়িয়ে পড়েন তারা।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত কয়েকজন শিক্ষকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, নিয়োগ, টেন্ডারসহ বিভিন্ন দাবি নিয়ে দুপুর একটার দিকে উপাচার্যের কার্যালয়ে যান শাখা ছাত্রলীগের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী। উপাচার্যের কাছে ছাত্রলীগ নিজেদের দাবি উত্থাপন করলে উপাচার্য সকল দাবি লিখিতভাবে দিতে বলেন এবং সবকিছু স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় হবে বলে উপাচার্য তার কার্যালয় থেকে বেরিয়ে যান।
এসময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে উপাচার্যের গাড়ি আটকিয়ে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন। এরপরই উপাচার্যকে উদ্দেশ্য করে বিভিন্ন মন্তব্য করতে থাকেন তারা। উপাচার্য সাবেক প্রক্টর, শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে জামাত-শিবির মন্তব্য করেছেন বলেও অভিযোগ করেন ছাত্রলীগের সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজ।
উপাচার্যকে উদ্দেশ্য করে এক নেতা বলেন, আমরা ছাত্রলীগ। আমরা চাকরি না পেলে কে পাবে?
আরেকজন বলেন, প্রধানমন্ত্রী কি ছাত্রলীগকে দমন করার জন্য এখানে পাঠিয়েছে?
প্রায় ১০ মিনিট গাড়ি আটকে রেখে বিভিন্ন মন্তব্য করার পর উপস্থিত শিক্ষকদের হস্তক্ষেপে পরে গাড়ি ছেড়ে দেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।
উপাচার্যের কাছে ছাত্রলীগ কী দাবি করেছে জানতে চাইলে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজ বলেন, মেয়েদের নতুন হলের (নির্মাণাধীন শেখ হাসিনা হল) কাজ শেষ করে রমজানের মধ্যেই শিক্ষার্থীদেরকে সেখানে উঠানো, নওয়াব ফয়জুন্নেছা হলে পানির সমস্যাসহ অন্যান্য সমস্যার দ্রুত সমাধানের দাবি নিয়ে গিয়েছিলাম আমরা। তবে উপাচার্য আমাদের দাবি শুনে রাগারাগি করে বেরিয়ে গেলে বিভিন্ন হল সভাপতি-সেক্রেটারির সাথে কথা কাটাকাটি হয়।
তবে উপাচার্য বলেন ভিন্ন কথা। তিনি বলেন, মেয়েদের হলের সমস্যা হলে কোনো মেয়ে শিক্ষার্থী কেন সেখানে উপস্থিত ছিল না। তারা মূলত কিছু অন্যায় দাবি নিয়ে এসেছে।
অন্যায় দাবিগুলো কী ছিল জানতে চাইলে তিনি বলেন, এগুলো সবাই জানে। আমার বলার দরকার নেই। তাদের দাবি ন্যায় হলে তারা লিখিত দেয়নি কেন?
একই কথা বলেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত একজন শিক্ষকও। নাম প্রকাশে অনাগ্রহী ওই শিক্ষক বলেন, শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল ইসলাম মাজেদ ও আরও কয়েকজনের নিয়োগ ও প্রকল্পের টেন্ডারের দাবি জানিয়েছিল। উপাচার্য এসকল দাবি লিখিতভাবে চাইলেই ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা উত্তেজিত হয়ে অশোভন আচরণ করেন।
তবে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি বলেন, আমরা কোনো অন্যায় দাবি নিয়ে যাইনি। আমরা রবিবারই সকল দাবি লিখিতভাবে দিবো।
জাগরণ/আরকে