ক্লাসেই ছোট ছোট ছাত্র-ছাত্রীদের ডেকে আদরের ছলে মেটান যৌন চাহিদা। মাঝে মধ্যে নিজ কক্ষেও ডেকে নেন। এমন অভিযোগ একাধিকবার উঠলেও ক্ষান্ত হননি আবু তালেব। একে একে অনেকের সর্বনাশ করলেও ক্ষমা চেয়ে পার পেয়ে যান তিনি। তবে এবার শেষ রক্ষা হয়নি তার, সোজা গেলেন কারাগারে।
ঘটনাটি বগুড়ার ধুনট উপজেলার। অভিযুক্ত আবু তালেব উপজেলার পাঁচথুপি নূরানি তা’লিমুল কুরআন ক্যাডেট ও মারকাযুশ শরইয়্যাহ হাফিজিয়া কওমিয়া মহিলা মাদরাসার সহকারী শিক্ষক।
৩৩ বছর বয়সী আবু তালেব উপজেলার পাঁচথুপি গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবার নাম শামছুল ইসলাম। তিনি মাদরাসায় শিক্ষকতার পাশাপাশি উপজেলার নসরৎপুর গ্রামের একটি মসজিদে ইমামতি করেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে আবু তালেবকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এর আগে, বুধবার রাতে পাঁচথুপি বাজারে আবু তালেবকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন যৌন হয়রানির শিকার শিশুর অভিভাবক ও স্থানীয়রা। পুলিশ তাকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করে থানা হেফাজতে নেয়। মামলার পর তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। বুধবার রাতেই মামলাটি করেন ভুক্তভোগী শিশুর বাবা।
জানা গেছে, বুধবার বেলা ১১টার দিকে ক্লাস নিচ্ছিলেন আবু তালেব। এ সময় ছাত্রীকে আদর করার ছলে কাছে ডেকে নেন তিনি। পরে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে হাত বোলান। এরপর বাড়িতে গিয়ে বাবাকে সবকিছু খুলে বলে ভুক্তভোগী শিশুটি।
প্রতিষ্ঠানটিতে ছেলে-মেয়েদের আলাদা আবাসিক ও অনাবাসিক ব্যবস্থা রয়েছে। চারজন নারী ও আবু তালেবসহ দুজন পুরুষ শিক্ষক রয়েছেন। এর মধ্যে আবু তালেবের বিরুদ্ধে আগেও শিক্ষার্থীদের যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয়দের কাছে আটক থাকা অবস্থায় অভিযুক্ত আবু তালেব বলেন, ‘আমি শিক্ষার্থীদের ভালোবেসে আদর করি ও কিসটিস দেই। তবে মাসখানেক আগে একজন নিষেধ করায় এসব আর করি না। আমার আদরের ভেতরে অন্য কোনো উদ্দেশ্য নেই।’
জানতে চাইলে মাদরাসার পরিচালক ও প্রধান শিক্ষক মাওলানা মাসুদুর রহমান বলেন, আবু তালেবের বিরুদ্ধে কয়েকদিন আগে আরেক শিক্ষার্থীকেও যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছিল। ওই সময় ক্ষমা চেয়েছিলেন আবু তালেব। তাকে সতর্ক করা হয়েছিল। কিন্তু আবারো তার বিরুদ্ধে একই অভিযোগ।
ধুনট থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আসাদুজ্জামান জানান, স্থানীয়রা আবু তালেবকে আটক করে রাখেন। পরে ঘটনাস্থল থেকে তাকে থানা হেফাজতে নেয়া হয়। তার বিরুদ্ধে মামলা করেন ভুক্তভোগী শিশুর বাবা। মামলার পর আবু তালেবকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।