ভোলা সদর উপজেলার রাজাপুর গ্রামে রিজোয়ান আমিন সিফাত ( ২২) নামের এক যুবককে কুপিয়ে রক্তাক্ত ও মারাত্মক জখম করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা যায়, রড,লাঠি ও হকিষ্টিক দিয়ে পিটিয়ে তার হাত-পা ভেঙে গুড়িয়ে এলাকায় উল্লাস করেছে হামলাকারীরা। বর্তমানে গুরুতর আহত সিফাতকে ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন।
শুক্রবার (১লা এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১১টায় সদর উপজেলার পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নের ক্লোজার নামক বাজারের ব্যাবসায়ী পারভেজ’র সেলুনের সামনে এঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও বাজারের ব্যাবসায়ীরা জানান, রাজাপুর ইউপি ৯নং ওয়ার্ড সদস্য হেলালউদ্দিনের নেতৃত্বে সন্ত্রাসী তারেক হোসেন, হাসিব, সজীব, মঞ্জিল, দ্বীন ইসলাম এবং মনছুর আহমেদ সরদারসহ অজ্ঞাত আরো ৪/৫ জন অস্ত্রধারী ক্যাডার সিফাতের উপর এমন বর্বরোচিত ভয়ানক হামলা চালায়।
সিফাতের বাবা আলাউদ্দিন মিয়া গণমাধ্যমকে জানান, রাজাপুরে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মেসার্স সততা ব্রিকস থেকে মোটর সাইকেলযোগে বাড়ি ফেরার পথে হেলাল মেম্বারের নেতৃত্বে তার গুন্ডা বাহিনী সিফাতের গতিরোধ করে তাকে এলোপাথাড়ি কোপাতে ও বেধড়ক পেটাতে থাকে। এসময় সন্ত্রাসীরা সিফাতের জিন্সের প্যান্টের পকেটে থাকা নিজেদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ২ লাখ ২০ হাজার টাকা ছিনতাই করে নিয়ে যায়।
শুধু তা-ই নয়, সন্ত্রাসাীদের হামলায় আহত সিফাত রক্তাক্তবস্থায় জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে ক্যাডাররা তার ব্যবহৃত এনএস-১৬০ সিসি পালসার মোটর সাইকেলটি ছিনিয়ে নেয়।
স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, খুন করার মাষ্টার প্ল্যান নিয়ে ধাড়ালো অস্ত্র দিয়ে সিফাতকে কোপানোর পর তার নিশ্চিত মৃত্যু হয়েছে ভেবে অচেতন হয়ে মাটিতে পড়ে থাকা সিফাতের শরীরের উপর উঠে হামলাকারীরা উল্লাস করতে থাকে। ফিল্মি ষ্টাইলে এমন নারকীয় তান্ডবলীলার পর সন্ত্রাসীরা ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়।
খবর পেয়ে ইলিশা তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ ক্লোজার বাজারে এসে মুমূর্ষ সিফাতকে উদ্ধার করে ভোলা সদর হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়।
স্থানীয়রা জানান, জমিজমা বিরোধের পূর্ব শক্রতার জের ধরেই সিফাতের উপর এ হামলা হয়েছে। রাজাপুরের আলোচিত এই ইউপি সদস্য’র বিরুদ্ধে গ্রামের মানুষের উপর জুলুম-নির্যাতন, হামলা, মিথ্যে মামলায় হয়রানী করে নিজে লাভবান হওয়ার অভিযোগের অন্ত নেই। চরের নিরীহ মানুষের গবাদীপশু লুটে ভূঁড়িভোজ করার অহরহ অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। যদিও তার সাথে আলাপকালে তিনি হামলা-মামলা আর সিফাত ট্র্যাজেডির সাথে নিজের সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করেছেন। এসমস্ত অভিযোগগুলো রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বলেও দাবী করেন ইউপি সদস্য হেলালউদ্দিন।
এদিকে সিফাতের উপর হামলা ও তাকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সিফাতের বাবা আলাউদ্দিন বাদী হয়ে হেলাল মেম্বারসহ ৭ জন এবং অজ্ঞাত আরো ৪/৫ জনকে আসামি করে গত ২ এপ্রিল ভোলা সদর মডেল থানায় একটি মামলা করেন। ভোলা সদর মডেল থানার পুলিশ ইনচার্জ এনায়েত হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, ঘটনায় সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের খুব দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।
জাগরণ/আরকে