• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
প্রকাশিত: এপ্রিল ৭, ২০২২, ০২:৪৯ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : এপ্রিল ৭, ২০২২, ০২:৪৯ পিএম

নিরাপদ পানির অভাবে স্বাস্থ্যসংকটে তালা

নিরাপদ পানির অভাবে স্বাস্থ্যসংকটে তালা

সাতক্ষীরার তালা উপজেলার ৬৬ গ্রামের ১৫ হাজার ৮০০ পরিবার নিরাপদ পানি, স্বাস্থ্যসম্মত শৌচাগার ও স্বাস্থ্যসংকটে ভুগছেন। নিরাপদ পানি ও স্বাস্থ্যসম্মত শৌচাগারের অভাবে তারা নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। এমন দুর্বিষহ  জীবন থেকে মুক্তি পেতে চায় অসহায় পরিবারগুলো।

তথ্য অনুসন্ধানে  জানা গেছে, উপজেলার খলিশখালি ইউনিয়নের ৩২ গ্রামের ৬ হাজার ২০০ পরিবার, জালালপুরের ১৩ গ্রামের ৫ হাজার ৪০০ পরিবার ও নগরঘাটা ইউনিয়নের ২১ গ্রামের ৪ হাজার ২০০ পরিবার মিলে তিন ইউনিয়নের ৬৬ গ্রামের ১৫ হাজার ৮০০ পরিবার এখনো নিরাপদ পানি, স্বাস্থ্যসম্মত শৌচাগার ও স্বাস্থ্য সমস্যায় আক্রান্ত। 

অনেকেই পুষ্টিহীনতার পাশাপাশি ডায়রিয়া, আমাশয়, গ্যাস্ট্রিক, আলসার, চুলকানি, হাঁপানিসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। এ সমস্যা সমাধানে এলাকাবাসীকে সচেতন করার জন্য সরকারের পাশাপাশি কাজ করছে বেসরকারি সংস্থা উত্তরণ।

তালা উপজেলার জালালপুর, খলিশখালি ও নগরঘাটা ইউনিয়নের বেশির ভাগ মানুষ অগভীর নলকূপের পানি ব্যবহার করেন। নলকূপগুলোর বেশির ভাগই আর্সেনিক ও আয়রনযুক্ত। এই তিন ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ ব্যবহার করছেন আর্সেনিক ও আয়রনযুক্ত পানি। গ্রামের বেশির ভাগ নলকূপের গোড়া এখনো পাকা নয়। এসব গ্রামের বেশির ভাগ পরিবার স্বাস্থ্যসম্মত শৌচাগার ব্যবহার করেন না। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা সম্পর্কে এখনো অনেকেই সচেতন নন।

উত্তরণের ওয়াই ওয়াশ (নিউ এরিয়া ওয়াশ এসডিজি ওয়াই এসপি বাংলাদেশ) প্রকল্পের সমন্বয়কারী হাসিনা পারভীন জানান, উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে সচেতন করার জন্য সরকারের পাশাপাশি ২০২১ সালের জানুয়ারি মাস থেকে কাজ করছে তারা।

নগরঘাটার পালপাড়া এলাকার বাসিন্দারা জানান, তাদের এলাকায় বৃষ্টির সময় ৫-৬ মাস জলাবদ্ধতা থাকে এবং লবণাক্ততার কারণে খাবার পানির কোনো ব্যবস্থা নেই। প্রায় ২-৩ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে এক কলস খাবার পানি আনতে হয়। আবার এক ড্রাম পানি ২৫ থেকে ৩০ টাকা দিয়ে কিনতে হয়। বর্ষা মৌসুমে ভিটে-বাড়িতে পানি জমে থাকায় শৌচাগার ব্যবহারের মতো অবস্থা থাকে না। আর লবণাক্ত পানি ব্যবহারের ফলে উচ্চ রক্তচাপ, চুলকানি, পাঁচড়া, পেটের পীড়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হন এসব এলাকার মানুষ। এছাড়া আর্সেনিকের কারণে এলাকায় অনেকের মৃত্যুও হয়েছে।

জালালপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এম মফিদুল হক লিটু জানান, এলাকায় খাবার পানি ও স্বাস্থ্যসম্মত শৌচাগারের অভাবের পাশাপাশি আর্সেনিকের সমস্যা প্রকট। ভয়াবহ আর্সেনিকে আক্রান্ত হয়ে অত্র এলাকার কৃষ্ণকাটী গ্রামের একই পরিবারের চারজনের মৃত্যু হয়েছে। 

তিনি বলেন, এ সমস্যা সমাধানে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থাগুলোর কার্যক্রম আরও জোরদার করা প্রয়োজন।

উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী মো. মফিজুর রহমান জানান, উপজেলার কয়েকটি এলাকায় নিরাপদ পানির স্তর পাওয়া যাচ্ছে না। ডিপ-টিউবওয়েল বসানোও সম্ভব হয়ে উঠছে না। বিশেষ করে জালালপুর ও খলিশখালি ইউনিয়নে এ সমস্যা বেশি।

জাগরণ/আরকে