• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
প্রকাশিত: এপ্রিল ১৬, ২০২২, ০৯:১৫ এএম
সর্বশেষ আপডেট : এপ্রিল ১৬, ২০২২, ০৯:১৫ এএম

নববর্ষে কিশোর-কিশোরীকে হেনস্তায় ডিবির ২ সদস্য বরখাস্ত

নববর্ষে কিশোর-কিশোরীকে হেনস্তায় ডিবির ২ সদস্য বরখাস্ত
সংগৃহীত

প্রেমিক যুগলের ভিডিও ধারণ করার অভিযোগে কুমিল্লা ডিবি (গোয়েন্দা বিভাগ) পুলিশের দুই সদস্যকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। তারা হলেন ডিবির কনস্টেবল নজরুল ইসলাম ও রোমান হাবিব রবিন।

বৃহস্পতিবার রাতে তাদের বরখাস্ত করা হয়। শুক্রবার সন্ধ্যায় গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিবি পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (পরিদর্শক) মুজিবুর রহমান। 

কুমিল্লা পুলিশ সুপারের কার্যালয় সংলগ্ন নগর উদ্যানে নববর্ষের দিনে ঘুরতে এসে পাশাপাশি বসেছিলেন ওই যুগল। তারা বয়সে কিশোর-কিশোরী। কিশোরীটি নবম শ্রেণিতে এবং কিশোরটি উচ্চ মাধ্যমিক প্রথম বর্ষে অধ্যয়ন করে। ডিবি সদস্যরা তাদের আটক করে অফিসে নেয়ার হুমকি দেন। 

বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় পুলিশ সুপারের নির্দেশে জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) এই দুই সদস্যকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হলো। 

ওসি মুজিবুর রহমান বলেন, পুলিশ সুপারের নির্দেশে দুজনকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এখন বিধি মোতাবেক তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হবে। তদন্তের পর বিষয়টি প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

এক মিনিট ১০ সেকেন্ডের ভিডিওটিতে দেখা যায়, কুমিল্লার নগর উদ্যানে নববর্ষের পোশাকে পাশাপাশি বসে গল্প করছিল নগরীর দুই কিশোর-কিশোরী। এ সময় পেছন থেকে ভিডিও করতে করতে তাদের ঘিরে ফেলে পরিচয় জানতে চান ডিবির দুই সদস্য। পরে তাদের দাঁড় করিয়ে একের পর এক প্রশ্ন করতে থাকেন। এ সময় ওই কিশোরীর মুখের মাস্ক খুলতে বাধ্য করা হয়।  এ সময় ডিবির এক সদস্য তাদের হুমকি দিয়ে বলেন, ‘মুড়ায়া ছাতনা ছিড়ালামু একবারে, বাপ-মা এগুলা করার জন্য পাঠাইছে?’ ডিবির সদস্যরা মেয়েটির কাছে তার বাবার ফোন নম্বর চান। তখন কিশোর-কিশোরী ভয়ে তাদের কাছে বারবার ক্ষমা চেয়ে বলে, মেয়েটির বাবা বিদেশ থাকেন। পাশ থেকে আরেক ডিবি সদস্য বলতে থাকেন, ‘বিদেশ থেকে বাবা আইব এখন, নইলে অফিসে নিয়া যামু। অফিস থেকে অভিভাবক আইসা নিয়া যাইব। এগুলি কে শিখাইছে?’ এ সময় তারা ভয়ার্তভাবে বারবার ডিবির সদস্যদের কাছে ক্ষমা চায়। এক পর্যায়ে তারা পার্ক থেকে বের হয়ে যায়। কিন্তু পরে ডিবির সদস্যদের মাধ্যমেই ভিডিওটি বিভিন্ন জনের কাছে পৌঁছে যায়। কেউ কেউ ফেসবুকে তা শেয়ার করেন। বিষয়টি পুলিশ সুপারের নজরে এলে নববর্ষের রাতেই দুই ডিবি সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। 

শুক্রবার সন্ধ্যায় ডিবি পুলিশের ওসি মুজিবুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে ডিবি সদস্যরা ভিডিও করার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তবে কিভাবে তা অন্যদের কাছে গেল তা নিশ্চিত করতে পারেননি। 

তিনি বলেন, ডিবি সদস্যরা বলেছেন ভিডিওটি তারা কয়েকজন দেখেছেন। তবে ফেসবুকে শেয়ার করেননি। কার মাধ্যম ভিডিওটি ছড়িয়ে দেওয়া হলো তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ বলেন, ভিডিওটি দেখেছি। বিষয়টি আমাকে কয়েকজন মৌখিকভাবেও জানিয়েছেন। এটি নজরে আসার পর বৃহস্পতিবার বিকেলে ওই দুই পুলিশ সদস্যকে চিহ্নিত করা হয়। এরপর রাতেই তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, কার মাধ্যমে ভিডিওটি ডিবির সদস্যদের মোবাইল থেকে অন্যত্র ছড়িয়েছে তা তদন্ত করা হচ্ছে। 

 

এসকেএইচ//