এক সময় এই শহরকে পুকুরের শহর বলা হত। শহর এবং আশপাশের এলাকায় পুকুরই ছিল খাবার পানির উৎস। দখল-ভরাট, দূষণ এবং যথাযথ সংরক্ষণের অভাবে হারিয়ে গেছে অনেক পুকুর। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভুগর্ভস্থ পানির অবনমন এবং বৃষ্টি মৌসুমে জলাবদ্ধতা প্রকট আকার ধারণ করছে। ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে, যে পুকুর, দখল–ভরাট হয়ে গেছে সেগুলোকে পুনরায় খনন ও সংরক্ষণ করে নাগরিক সুবিধার সঙ্গে সম্পৃক্ত করা প্রয়োজন। কিন্তু তা না করে হবিগঞ্জের চন্দ্রনাথ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন পুকুরটি ভরাট করা হচ্ছে, যা কোনোক্রমেই সমীচীন নয়।
শুক্রবার (১৫ এপ্রিল) সকাল ১০ টায় বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) এর একটি প্রতিনিধি দল হবিগঞ্জের চন্দ্রনাথ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন পুকুর পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে বাপা নেতৃবৃন্দ দেখতে পান পুকুরটি ভরাট করা হচ্ছে। গত ৩ দিন ধরে পুকুরটি ভরাট করা হচ্ছে বলে জানান এলাকাবাসী।
বাপা কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল এর নেতৃত্বে পরিদর্শনে ছিলেন, বাপা হবিগঞ্জের সভাপতি অধ্যাপক মো: ইকরামুল ওয়াদুদ, সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট মনসুর উদ্দিন আহমেদ ইকবাল, তাহমিনা বেগম গিনি, সাবেক ছাত্রনেতা, সাংবাদিক ও আমেরিকা প্রবাসী মুজাহিদুল ইসলাম আনসারী, বাপা হবিগঞ্জের কোষাধ্যক্ষ শোয়েব চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল, বাপা সদস্য আব্দুল হান্নান, এডভোকেট শায়লা খান, গ্রীন ভয়েস এর মোনসেফা তৃপ্তি, আমিনুল ইসলাম, তারেক রায়হান প্রমূখ।
এছাড়াও পরিদর্শন চলাকালে পরিবেশ অধিদপ্তর হবিগঞ্জের পরিদর্শক মুমিনুল ইসলাম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সংশ্লিষ্ট তথ্য সংগ্রহ করেন।
বাপা কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল বলেন, জলাবদ্ধতা ও ভূগর্ভস্থ পানি সংকটে বিপর্যস্ত হবিগঞ্জ পৌরসভার চন্দ্রনাথ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন পুকুর ভরাটের উদ্যোগ একটি নিন্দনীয় ও বেআইনি ঘটনা। দেশের সকল পৌর এলাকার পুকুর ও প্রাকৃতিক জলাধার পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণের আইনী ও নীতিগত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এই পুকুরকে ঘিরে দৃষ্টিনন্দন জনকল্যাণকর উদ্যোগ গ্রহণ করার সুযোগ রয়েছে।
শোনা যায়, এই পুকুরের সাথে বঙ্গবন্ধু পরিবারেরও স্মৃতি বিজড়িত রয়েছে। আমরা অবিলম্বে পুকুরটি ভরাট কাজ বন্ধ করে তা পুনরুদ্ধার ও যথাযথ সংরক্ষণের দাবি জানাই।
জাগরণ/আরকে