• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
প্রকাশিত: এপ্রিল ১৭, ২০২২, ০৪:০৮ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : এপ্রিল ১৭, ২০২২, ০৪:০৮ পিএম

বোয়ালমারীতে বিলুপ্তির পথে দেশীয় মাছ  

বোয়ালমারীতে বিলুপ্তির পথে দেশীয় মাছ  

ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী উপজেলার প্রায় সবগুলো নদী, খাল, বিল ও ডোবা-জলাশয় থেকে দেশীয় প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। বর্ষার পর মাছের ভরা মৌসুমেও নদী,খাল-বিলগুলো মাছ শূন্য হয়ে পড়েছে।

কৃষিজমিতে অনিয়ন্ত্রিত সার ও কীটনাশকের ব্যবহার, অবৈধ কারেন্ট জাল দিয়ে নির্বিচারে ডিম ওয়ালা মা মাছ ও ছোট পোনা মাছ ধরা, খাল-বিল-ডোবা ভরাট, উন্মুক্ত জলাশয়ে বাঁধ নির্মাণসহ মাছের বিচরণ ক্ষেত্রের অনুকূল পরিবেশ সংকট হওয়ার কারণে দিন দিন দেশীয় প্রজাতির মাছগুলো বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। একসময় জেলার বিলসহ ছোট বড় অনেক খালে প্রচুর পরিমানে দেশীয় প্রজাতির মাছ পাওয়া যেত। এসব নদী, খাল, বিল ও জলাশয়ের মাছে এলাকার মানুষের চাহিদা পুরণ হয়ে যেতো। কিন্তু এখন আর তেমন দেশি প্রজাতির মাছ  দেখা যায় না।

দেশীয় প্রজাতির অনেক মাছ বিলুপ্তির কারণে স্থানীয় জেলেদের দুর্দিন যাচ্ছে। উপজেলার বেশ কয়েকটি বাজারে গিয়ে ঘুরে ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বর্ষা মৌসুমে মা মাছগুলো ডিম ছাড়ে। ওই সময় কিছু  শ্রেণির অসাধু মৎস্য শিকারি কারেন্ট জাল ও ভারতীয় এক প্রকার টানা জাল দিয়ে মা মাছ ও পোনা মাছগুলো ধরে ফেলে। এতে দেশীয় প্রজাতির মাছের প্রজনন হয় না। একসময় জেলার গ্রামের হাট-বাজারগুলোতে নানা ধরনের দেশি মাছ চোখে পড়ত। দেশীয়  মাছের মধ্যে রয়েছে- কৈ, মাগুর, শিং, পাবদা, টেংরা, পুঁটি, শৌল, বোয়াল, আইড়, ভ্যাদা, বাইম, খলিশা, ফলি, চিংড়ি, টাকি, চিতল, বালিয়া, চান্দাসহ নাম না-জানা বহু প্রজাতির দেশীয় মাছ।

বোয়ালমারী উপজেলার ঘোষপুর ইউনিয়নের বেড়াদি গ্রামের মানিক রাজবংশী (৬৫) বলেন, একসময় খাল বিলে প্রচুর দেশী মাছ দেখা যেত। আমাদের মাছ ধরার সময় জালে ছোট পোনা মাছ উঠলে ধরতাম না, আমরা পানিতে ছেড়ে দিতাম অথচ এখন সেই দেশীয় ছোট মাছগুলো ৩ থেকে ৫শ টাকা কেজিতে কিনতে হয়। এছাড়া বাজারে যে মাছই কিনতে যাই সবই চাষ করা। চাষের এই মাছের মধ্যে প্রাকৃতিক মাছের স্বাদ মেলে না। তাই এখনেই সময় সেই স্বাদের বিলুপ্তপ্রায় মাছগুলো রক্ষার উদ্যোগ নেওয়া।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা জানান, শুষ্ক মৌসুমে জেলার বিল জলাশয়গুলো শুকিয়ে যাওয়ায় দেশি প্রজাতির মা মাছ হুমকীর মুখে পড়েছে। এমতাবস্থায় একাধিক জায়গায় মৎস্য অভয়াশ্রম স্থাপন করা সম্ভব হলে শুষ্ক মৌসুমে মা মাছ সেখানে আশ্রয় গ্রহণ করতে পারবে। সেই সাথে গণসচেতনতা তৈরি করে কৃষিজমিতে অনিয়ন্ত্রিত কীটনাশক ও কারেন্ট জালের ব্যবহার রোধ এবং মৎস্য আইনের যথাযথ প্রয়োগ করা গেলে বিপন্ন প্রজাতির এসব মাছ টিকিয়ে রাখা যাবে।

জাগরণ/আরকে