আকবর কবির
সাতক্ষীরার দেবহাটায় গ্রামীণ সড়ক নির্মাণে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের বাড়িঘর রক্ষা করতে নির্ধারিত জায়গা বাদ দিয়ে অন্য জায়গা দিয়ে সড়ক নির্মাণে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি।
এ নিয়ে প্রতিবাদ জানানো হলেও তোয়াক্কা করছেন না ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী মোস্তাফিজুর রহমান। এ অবস্থায় ভুক্তভোগীরা নিরুপায় হয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পাঁচপোতা টেওরপাড়া তেঁতুলতলা মোড় থেকে রত্নেস্বরপুরগামী ৮৩০ মিটার সড়কের নির্মাণের কাজ চলছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতায় এ সড়ক নির্মাণের দায়িত্ব পায় মোস্তাফিজুর রহমানের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
সরেজমিনে দেখা যায়, সড়কের জায়গা দখল করে রান্নাঘর, টয়লেট ও নলকূপ স্থাপন করেছেন পাঁচপোতা গ্রামের ইয়াদ আলীর ছেলে কবির হোসেন।
তিনি উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয়ের সুপারভাইজার। কবিরের স্থাপনাগুলো না সরিয়ে ওই জায়গার পাশে অন্য আরেকজনের জমিতে সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে।
এছাড়া একই এলাকার অদুদ আলীর বাড়ির শৌচাগারের ভাঙাচোরা সেপটিক ট্যাংক সড়কের জায়গা দখল করে আছে। সেখান থেকে বেরিয়ে আসা মলমূত্র সড়কের জায়গায় পড়ছে। এক্ষেত্রেও সেটি না সরিয়ে সড়কটি অন্যদিক দিয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
ভুক্তভোগী স্থানীয় বাসিন্দা আবু বকর সিদ্দিক বলেন, সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে ভালো কথা, এতে এলাকার উন্নয়ন হয়েছে। কিন্তু ঠিকাদার সরকারি জমির পরিবর্তে ব্যক্তি মালিকানাধীন জমিতে সড়ক নির্মাণ করে ক্ষয়ক্ষতি করছেন। সড়কের মাটি ফেলে আমার জমির ধান নষ্ট করেছেন। অন্য পাশে খাস জমি থাকলেও সেখানে দখলদারদের উচ্ছেদ না করেই সড়কের নির্মাণকাজ চলছে।
নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ইতিপূর্বে পাঁচপোতা মোড় থেকে ভাতশালাগামী গ্রামীণ সড়ক নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম দেখা দিলে স্থানীয়রা বাধা দেন। কিন্তু সব বাধা উপেক্ষা করে সড়ক নির্মাণ শেষ হয়। কয়েক দিনের মধ্যে ওই সড়ক ভেঙে গেলে তা পরিদর্শনে আসেন জেলা প্রকৌশলী দপ্তরের নির্বাহী কর্মকর্তাসহ অন্যান্যরা। এ সময় নষ্ট সড়ক সংস্কারের আশ্বাস দিলেও পরবর্তীকালে কোনো সুফল মেলেনি।
এ বিষয়ে ঠিকাদার মোস্তাফিজুর রহমানের জানান, আমি অসুস্থ থাকায় নির্মাণকাজের নিয়মিত তদারকি করতে পারিনি। সড়কের জন্য নির্ধারিত জায়গা থেকে সমান ভাবে মাটি কাটা হয়েছে। কোথাও কোনো অনিয়মের অভিযোগ উঠলে তা সমাধান করা হবে।
উপজেলা প্রকৌশলী শোভন সরকার জানান, গ্রামীন সড়ক নির্মাণের প্রধান সমস্যা হলো, কেউই আসলে জমি ছাড়তে চান না। আমাদের পক্ষ থেকে প্রাথমিকভাবে একবার উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়েছে। নির্মাণকাজে যাতে কোনো ধরনের অনিয়ম না হয় সে বিষয়ে ঠিকাদারকে বলেছি। আবারও বলব, যাতে কোনো প্রকার অনিয়ম না হয়। এখন পর্যন্ত অনিয়মের যেসব তথ্য আমাদের কাছে এসেছে তা গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে।
জাগরণ/আরকে