দীপন বিশ্বাস
দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনের জীব-বৈচিত্র রক্ষায় হাইকোর্টের দেওয়া নির্দেশ এখনও বাস্তবায়ন করা হয়নি।
প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা হিসেবে ঘোষিত বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনকে রক্ষার স্বার্থে অবৈধভাবে নির্মিত সব হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট ও অন্যান্য বাণিজ্যিক স্থাপনা অপসারণ এবং প্রবাল, কাঁকড়া, শামুক, ঝিনুক, কচ্ছপসহ অন্যান্য জলজ প্রাণীর অনিয়ন্ত্রিত আহরণ বন্ধে ‘বেলা’ ২০০৯ সালে জনস্বার্থে একটি রিট দায়ের করেছিল। সেই রিটের চুড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১১ সালের ২৪ অক্টোবর রায় দেন হাইকোর্ট।
রায়ে সেন্টমার্টিন দ্বীপে পরিবেশগত ছাড়পত্র ছাড়া গড়ে ওঠা সব স্থাপনা ভেঙে ফেলার এবং কাঁকড়া, শামুক, ঝিনুক, কচ্ছপসহ অন্যান্য জলজ প্রাণী সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পরিবেশ সংরক্ষণ আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। হাইকোর্টের দেওয়া এই রায় এখনও বাস্তবায়ন না হওয়ায় এলাকার পরিবেশবাদীরা চরম ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। তারা জানান, উচ্চ আদালতের দেওয়া এই রায় বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্টদের রহস্যজনক ভূমিকা পালন করার উদ্দেশ্য কি?
এদিকে, কক্সবাজারের সেন্টমার্টিনে থাকা অবকাশ পর্যটন লিমিটেডের পরিবেশগত ছাড়পত্রহীন ‘সেন্টমার্টিন রিসোর্ট’ অবিলম্বে বন্ধ করতে পরিবেশ অধিদপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ সংক্রান্ত জারি করা রুল খারিজ করে বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক-আল-জলিল সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার এ রায় দেন।
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনকে রক্ষার স্বার্থে অবৈধভাবে নির্মিত সব হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট ও অন্যান্য বাণিজ্যিক স্থাপনা অপসারণ এবং প্রবাল, কাঁকড়া, শামুক, ঝিনুক, কচ্ছপ অন্যান্য জলজ প্রাণীর অনিয়ন্ত্রিত আহরণ বন্ধে বেলা ২০০৯ সালে জনস্বার্থে রিটটি দায়ের করেছিল। সে রিটের দীর্ঘ শুনানী শেষে রায়ও হয়। তবুও অজ্ঞাত কারণে ভেঙ্গে ফেলা হয়নি কোন স্থাপনা। একইসঙ্গে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পরিবেশ সংরক্ষন আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশও আলোর মুখ দেখেনি।
জানা যায়, পরিবেশ অধিদপ্তর সেন্টমার্টিন দ্বীপে পরিবেশগত ছাড়পত্র ছাড়া গড়ে ওঠা অন্যান্য স্থাপনাগুলোর সঙ্গে অবকাশ পর্যটন লিমিটেডের সেন্টমার্টিন রিসোর্ট উচ্ছেদের নোটিশ দেন। পরে অবকাশ পর্যটন লিমিটেডের সেন্টমার্টিন রিসোর্টের অনুকূলে পরিবেশগত ছাড়পত্র দিতে অনলাইনে পরিবেশ অধিদপ্তর আবেদন করলে পর্যাপ্ত তথ্যের অভাবে আবেদনটি বাতিল করে পরিবেশ অধিদপ্তর।
এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০১৭ সালে অবকাশ পর্যটন লিমিটেড রিট করলে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
পরবর্তীতে বেলা এ মামলায় পক্ষভুক্ত হন। গত বুধবার চুড়ান্ত শুনানি শেষে পৃথক দুটি রুল খারিজ করে রায় দেন হাইকোর্ট।
আদালতে অবকাশ পর্যটনের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এফ হাসান আরিফ ও মার্গুব কবির। বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
জাগরণ/আরকে