পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় মরিয়ম বেগম (২৫) নামে এক গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগে আনিছুর রহমান (৩৫) নামে এক স্বামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শনিবার (২৩ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১২টায় বোদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সাঈদ চৌধুরী গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এর আগে আসামি আনিছুরকে শুক্রবার (২২ এপ্রিল) দিনগত রাতে বোদা উপজেলার তেপুকুরিয়া গ্রামে তার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়।
ঘটনায় নিহত গৃহবধূর বাবা কিনার উদ্দিন (৬০) বাদী হয়ে আনিছুর রহমানকে প্রধান আসামি করে ৬ জনের নামে থানায় মামলা দায়ের করেছে।
বোদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সাঈদ চৌধুরী বলেন, শুক্রবার (২২ এপ্রিল) মরিয়মের বাবা বাদী হয়ে আনিছুরকে প্রধান আসামি করে ৬ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেছে। আমরা অভিযান পরিচালনা করে প্রধান আসামি আনিছুরকে গ্রেফতার করেছি। বাকী আসামিদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
আনিছুর রহমান তেপুকুরিয়া গ্রামের মছির উদ্দীনের ছেলে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ২০১৯ সালের ৫ মার্চ আনিছুর রহমানের সাথে পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয় তেপুকুরিয়া হাজীপাড়া গ্রামের কিনার উদ্দীনের মেয়ে মরিয়মের সাথে। আনিছুর পেশায় দর্জি হওয়ায় মেয়ের সুখের সংসারের জন্য আনিছুরকে ব্যবসার জন্য শ্বশুর এক লক্ষ টাকা দেন। বিয়ের ৬ মাস পর থেকে শ্বশুর বাড়ির লোকসহ অপর আসামি মছির উদ্দীন (৬৫), লাইলী আক্তার (৩০), আনারুল ইসলাম, আশরাফুল ইসলাম (৩০), আব্দুল লতিফ (৬০) আনিছুরকে কুপরামর্শ দিয়ে যৌতুকের জন্য আরো এক লক্ষ টাকা দাবি করান। এর মাঝে বিভিন্ন ভাবে মরিয়মকে যৌতুকের জন্য নির্যাতন করা হত। এর মাঝে মরিয়ম টাকা দিতে স্বামীকে অস্বীকার করেন।
বুধবার (২০ এপ্রিল) মরিয়মকে রোজা অবস্থায় কৌশলে ইফতারের জন্য দোকানে নিয়ে যায় আনিছুর। অপর আসামিদের পরামর্শে মরিয়মের ইফতারে বিষ প্রয়োগ করে। এক পর্যায়ে দোকানে মরিয়ম ইফতার করার কিছু সময় পর অসুস্থ্য হয়ে পড়লে স্থানীয় লোকজনের সহযোগীতায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এর মাঝে মরিয়মের মুখ থেকে ফেনা বের হতে থাকে। পরে খবর পেয়ে বাবা কিনার উদ্দীন হাসপাতালে ছুটে গেলে মেয়ে বাবাকে সব খুলে বলে। এর মাঝে অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসক তাকে ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে প্রেরণ করলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থান বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল) দিনগত রাত ১টায় মৃত্যুবরণ করে মরিয়ম।
জাগরণ/আরকে