জয়পুরহাট সদর উপজেলার কয়তাহার গ্রামের হতদরিদ্র রিকশাচালক গোলাম মোস্তফার মেয়ে শারমিন আক্তার সুমি। এবারের মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় ৭৭ দশমিক শূন্য ৫ স্কোর নিয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজে পড়ার সুযোগ পেয়েছেন। এই সুমির জীবনেই রয়েছে এক করুণ কাহিনি।
জানা গেছে, সুমির মা তাহমিনা বেগম গৃহিণী। দুই মেয়ের মধ্যে সুমি ছোট। তাদের পরিবারের একমাত্র কর্মক্ষম ব্যক্তি সুমির বাবা। তিনি গত ৪ বছর ধরে সিলেট শহরে রিকশা চালান। তিন শতাংশের ভিটেবাড়ি ছাড়া তাদের আর কিছুই নেই। অভাব অনটনের কারণে গত বছর বিয়ে হয় সুমির। স্বপ্ন ছিল স্বামীর ঘরে গিয়ে বাঁকি জীবন সুখে কাটাবেন। কিন্তু তা আর হয়ে ওঠেনি। তিন মাস সংসারের পর সমস্যা সৃষ্টি হয় সুমির বাবার পেশা নিয়ে। ভেঙে যায় সংসার।
বিয়ের মেহেদি মুছতে না মুছতেই তালাকনামা হাতে পেয়ে কেঁদেছিলেন সুমি। কিন্তু ভেঙে না পড়ে ঘুরে দাঁড়ানোর শপথ নেন তিনি। বাবা গোলাম মোস্তফাও প্রতিজ্ঞা করেন হাজার কষ্ট হলেও মেয়েকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করবেন।
সুমির বাবা গোলাম মোস্তফা জানান, অনেক স্বপ্ন নিয়ে সুমিকে বিয়ে দিয়েছিলেন বড় ঘরে। কিন্তু রিকশাচালকের মেয়ে হওয়ায় তাকে গ্রহণ করেনি ছেলেপক্ষ। বিয়ের তিন মাস পর গত বছরের ১২ সেপ্টেম্বর সুমিকে তালাক দেওয়া হয়। সেদিন আল্লাহর কাছে দুই হাত তুলে কেঁদেছিলেন গোলাম মোস্তফা।
এবার সুমির বাবার সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নিতে যাচ্ছে। এরই মধ্যে সুমি রংপুর মেডিকেল কলেজে পড়াশোনার সুযোগ পেয়েছেন। তবে পড়ার খরচ নিয়ে দুশ্চিন্তার অন্ত ছিল না তাদের। এরপর অনেকে সহযোগিতার হাত বাড়ানোয় তাদের মাঝে স্বস্তি ফিরেছে।
ইউএম