• ঢাকা
  • শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
প্রকাশিত: এপ্রিল ২৬, ২০২২, ০২:১১ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : এপ্রিল ২৬, ২০২২, ০২:১১ পিএম

ফুলবাড়ীর ঘোড়ার মেলা ভেঙ্গে দিয়েছে প্রশাসন

ফুলবাড়ীর ঘোড়ার মেলা ভেঙ্গে দিয়েছে প্রশাসন

ফুলবাড়ী প্রতিনিধি
দিনাজপুরের ২০০ বছরের ফুলবাড়ীর ঐতিহ্যবাহী বুড়া চিন্তামন ঘোড়ার মেলা সোমবার (২৫ এপ্রিল) ভেঙ্গে দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।

এতে করে আশাহত হয়েছেন মেলার ক্রেতা-বিক্রেতা, দর্শনার্থী, মেলার আয়োজকসহ স্থানীয় মেলা প্রেমিরা। 

জানা যায়, প্রতি বছর বৈশাখ মাসের ৯ অথবা ১০ তারিখ থেকে ফুলবাড়ী উপজেলার আলাদিপুর ইউনিয়নের মেলাবাড়ী মাঠে এই ঐতিহ্যবাহী বুড়া চিন্তামন ঘোড়ার মেলা বসে। মেলাটি অন্তত ১৫ দিন স্থায়ী হয়। তবে স্থানীয়ভাবে গরু, মহিষ ও ছাগল তেমন বেচাকেনা না হলেও ঘোড়াই মূলত বেচাকেনা হয়ে থাকে। এ কারণে এটি বুড়া চিন্তামন ঘোড়ার মেলা নামেই দেশব্যাপী পরিচিত। 

জেলা প্রশাসনের নির্দেশে সোমবার (২৫ এপ্রিল) প্রশাসন মেলা বন্ধ করে দিয়েছে। এতে ঘোড়া বেচাকেনা করতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ক্রেতা-বিক্রেতারা বিপাকে পড়েছেন।

আলাদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান প্রবীণ শিক্ষক দছিম উদ্দিন মণ্ডল বলেন, ঐতিহ্যবাহী এই বুড়া চিন্তামন ঘোড়ার মেলাটি দেশব্যাপী ব্যাপক পরিচিত। ঘোড়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলেই এই মেলা শুরু এবং শেষ হওয়ার তারিখ জানেন। এ কারণে প্রতি বছর মেলা শুরুর আগ থেকেই ঘোড়া বেচাকেনা করতে আসেন সংশ্লিষ্টরা। মেলাকে কেন্দ্র করে হরেক রকম দোকানপাট বসে মেলায়। 

তিনি বলেন, বিনোদনের জন্য সার্কাস, দোলনাসহ নাগর দোলা আসে মেলায়। বছর বৈশাখ মাসে মেলাটি শুরু এবং শেষ হয়। কিন্তু জেলা প্রশাসন থেকে মেলার তারিখ মে মাসের ২০ থেকে ২৬ তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। একে মেলার ঐতিহ্য হারিয়ে যেতে পারে। মেলার দিন-তারিখও একটি ঐতিহ্য। 

গাইবান্ধার ঘোড়া বিক্রেতা সোহাগ আলী বলেন, প্রায় ২০ বছর ধরে এই ঘোড়ার মেলায় ঘোড়া নিয়ে বেচাকেনা করে থাকেন। এবারও ৪টি ঘোড়া বিক্রি করতে মেলায় উঠিয়েছিলেন। কিন্তু মেলা ভেঙ্গে দেওয়ায় ঘোড়া বিক্রি করতে না পারায় আর্থিকভাবে লোকসানে পড়েছেন। 

সাড়ে চার বছর বয়সের রেসিং ঘোড়া মেলায় এনেছিলেন রহমত আলী। এই ঘোড়াটিই ছিল এবারের মেলার সবচেয়ে বেশি দামি। কিন্তু মেলা ভেঙ্গে দেয়ায় নিরাশ হয়ে বাড়ী ফিরছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা।

আলাদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেলা কমিটির প্রধান নাজমুস সাকির বাবলু বলেন, মেলাটির ঐতিহ্য ধরে রাখতে এলাকাবাসী অনেক শ্রম ও সময় দিয়ে থাকেন। কিন্তু উপজেলা প্রশাসন মেলাটি ভেঙ্গে দেওয়ায় সকলেই হতাশ হয়েছেন।

থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আশ্রাফুল ইসলাম বলেন, মেলাটির সরকারি অনুমোদন ছিল না। জেলা প্রশাসন মেলার তারিখ পিছিয়ে দেওয়ায় মেলাটি ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রিয়াউ উদ্দিন বলেন, করোনার কারণে দুই বছর মেলা বন্ধ ছিল। মেলার তারিখ পরিবর্তন করা হয়েছে। জেলা প্রশাসন মেলাটির ইজারা দিয়ে থাকেন। সোমবার (২৫ এপ্রিল) পত্রিকায় ইজারা সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের অনুমোদন না থাকায় মেলাটি ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে।

জাগরণ/আরকে