• ঢাকা
  • শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুন ১৮, ২০২২, ০৭:১৭ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ১৮, ২০২২, ০৭:১৭ পিএম

ভাঙন ঝুঁকিতে রাজবাড়ীর বেড়িবাঁধ 

ভাঙন ঝুঁকিতে রাজবাড়ীর বেড়িবাঁধ 

ইমরান হোসেন মনিম

গত বছরের ভাঙনে তীর প্রতিরক্ষা বাঁধের ১৪টি অংশের ১ হাজার ৬শ ও স্কুল, মসজিদ সহ ৫০ পরিবার নদী গর্ভে বিলীন হয়। কিন্ত পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৭৬ কোটি টাকার এ নদী তীর প্রতিরক্ষার কাজ শুকনো মৌসুমে শুরু না করে বর্ষা মৌসুমে শুরু করায় পানি বৃদ্ধির কারণে ভাঙন কবলিত স্থানে ব্লকে বাঁধানো কাজটি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। এতে ফের নদী ভাঙনের হুমকিতে পড়েছে শত শত জনবসতি, শহর রক্ষা বেড়ি বাঁধ ও বহু স্থাপনা।
 
গত বছরের মে মাসে ৩ শত ৭২ কোটি টাকা ব্যয়ে নদী তীর প্রতিরক্ষা বাঁধের সাড়ে চার কিলোমিটার সিসি ব্লকে বাঁধানো সম্পন্ন করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। কিন্ত এ বাঁধ তৈরির পরের মাসেই তীব্র নদী ভাঙনে জনবসতি, স্কুল সহ পৌনে দুই কিলোমিটার ১ হাজার ৬শ মিটার অংশ নদীতে বিলীন হয়। ভাঙন কবলিত অংশে নতুন করে বাঁধ নির্মাণের জন্যে গত বছরের শেষ দিকে ৭৬ কোটি টাকার প্রকল্প পাশ হয় এবং চলতি বছরের শুরুতে নদী তীর সংরক্ষণ কাজটি শুরু করার কথা থাকলেও তা শুরু করা হয় তিন মাস পর। কিন্তু বছরের শুরুতে শুকনো মৌসুমে এ কাজটি শুরু কওে পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলতিতে তা গত মার্চ মাসে শুরু করা হয়।কাজ শুরু পর থেকেই বৃষ্টি ও নদীতে পানি বাড়তে থাকে।তবে অত্যাধিক পানি বৃদ্ধির কারণে বর্তমানে তীর প্রতিরক্ষা বাঁধের পিচিং বা ব্লক বিছানো কাজটি বন্ধ রাখা হয়েছে।ইতমধ্যে কয়েকটি স্থানে ভাঙনও দেখা দিয়েছে।তবে ভাঙন ঠেকাতে পিচিং কাজ বন্ধ রেখে গাইড ওয়ালের বাইরের অংশে সিসি ব্লক ও বালু ভতি জিও ব্যাগের বস্তা ফেলা হচ্ছে।অথচ ভাঙনের তীব্রতায় যেখানে সিসি ব্লকে বাঁধানো তীর প্রতিরক্ষা বাঁধই নদীতে ধ্বসে গেছে সেখানে বালুর বস্তা দিয়ে ভাঙন ঠেকানো কত টুকু কাজে আসবে তা নিয়ে শঙ্কিত এলাকাবাসী।তীর প্রতিরক্ষা কাজের সময় সীমা শেষ হবে এবছরের জুন মাস পর্যন্ত।তবে এই প্রতিরক্ষা কাজের মান ভালো না হওয়ার কারণে বার বার ভাঙন হচ্ছে বলেও জানান এলাকাবাসী। ভাঙন কবলিত ১৪টি স্থানে সোনাকান্দর থেকে চড় সিলিমপুর পর্যন্ত ৯টি প্যাকেজের মাধ্যমে ৪টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এ কাজ করছে।

ভাঙন কবলিত এলাকাবাসীরা বলেন, শুকনো মৌসুমে বাঁধের কাজ শুরু না করে বর্ষা মৌসুমে শুরু করায় নদীতে পানি বৃদ্ধির কারণে বর্তমানে ব্লকে বাঁধানো কাজটি বন্ধ হয়ে গেছে। সিসি ব্লকে বাঁধ নির্মাণ না করতে পারলে বালু ভর্তি বস্তা কোনো কাজে আসবে না। এতে বাঁধ সংলগ্ন শত শত জনবসতি চরম ভাঙন আতঙ্কে পড়েছেন সেই সাথে বেড়ি বাঁধ সহ অনেক স্থাপনা হুমকিতে রয়েছে। দ্রুত ভাঙন ঠেকাতে ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানান কর্তৃপক্ষকে।

মেসার্স শামিমুর রহমান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি আলামিন মোস্তফা বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সহ তারা এই প্রতিরক্ষা কাজটি শেষ করার আপ্রান চেষ্টা করেছিলেন। বালুর বস্তা ও সিসি ব্লক ডাম্পিং শেষ করা হয়েছে। কিন্তু পানির লেবেল বেড়ে যাওয়ায় তীর প্রতিরক্ষায় পিচিং বা ব্লক বিছানো সম্ভব হয়নি।তবে শহর ওক্ষা বাঁধের কাছে নদী চলে আসার কারণে জনসাধারণ, বাড়ি ঘর ও স্থাপনা ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে। 

রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী আরিফুর রহমান অংকুর বলেন, চলতি জুন মাসেই এই প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় এলাকায় অধিক বৃষ্টিতে পদ্মা সহ বিভিন্ন নদ নদীতে পানি বৃদ্ধির কারণে পিচিং (ব্লক বিছানো) কাজ করতে পারেননি। সেসব স্থানে বর্ষায় ঢেউয়ের কারণে যাতে নদীতে ভেঙে না পরে, সেখানে জিও ব্যাগ দিয়ে ঢেকে দেয়া হয়েছে। পিচিং কাজ যেসব স্থানে বাকি থাকবে সেসব স্থানে বন্য পরবর্তী সময়ে প্রতিরক্ষা বাঁধ করা হবে বলে জানান।

রাজবাড়ী  (১)-আসনের সংসদ সদস্য কাজী কেরামত আলী বলেন, পানি বাড়ার কারণে ভাঙন হলে তা রক্ষা করা অনেক কঠিন হবে। আগামী কয়েকদিন পরে নদীর গতি প্রকৃতির কি অবস্থা হয় তখন সে অবস্থা বুঝে ভাঙন ঠেকাতে ব্যাবস্থা নেয়ার কথা জানান তিনি।