রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বিনোদপুর গেটের সামনে এক শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয়দের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
শনিবার (১১ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে সংঘর্ষ শুরু হয়। রাত সাড়ে ১০টায়ও সংঘর্ষ চলে। সংঘর্ষে দুই শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
সংঘর্ষ শুরুর পর বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে আহত শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বাড়তে থাকে। এদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর বলে জানা গেছে। ইট-পাটকেলের আঘাতে অনেকের মাথা ফেটে গেছে। আহত হয়েছেন সংবাদকর্মীরাও। তাৎক্ষণিক আহত শিক্ষার্থীদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।
উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান উল ইসলাম দাবি করেছেন, সংঘর্ষে আহত শিক্ষার্থীর সংখ্যা দুইশ'র বেশি। তাদের হাসপাতালে নেয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, সংঘর্ষ শুরুর ৩ ঘণ্টা পরও ঘটনাস্থলে পুলিশ দেখা যায়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনোদপুর গেটের বাইরে থেকে স্থানীয়রা ইট-পাটকেল ছুড়ছেন। অন্যদিকে শিক্ষার্থীরাও ক্যাম্পাসের ভেতর পাল্টা অবস্থান নিয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান, এদিন সৈয়দপুর থেকে রাজশাহী আসছিলেন সমাজকর্ম বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের এক ছাত্র। বাসে তার সঙ্গে সুপারভাইজার 'বাজে' আচরণ করেন। বাসটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনোদপুর গেটে পৌঁছালে ওই শিক্ষার্থী বাস সুপারভাইজারের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। এসময় বিনোদপুরের এক স্থানীয় বাকবিতণ্ডায় যুক্ত হন। স্থানীয় ব্যক্তি ওই শিক্ষার্থীকে লাঞ্ছিত করেন। এর সূত্র ধরে স্থানীয় ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। স্থানীয়রা কয়েক দফা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনোদপুর গেট দিয়ে প্রবেশ করে শিক্ষার্থীর ওপর হামলা চালায়। ইট পাটকেল ছুঁড়তে থাকে। তারা এসময় পেট্রোল বোমা ছোড়ে বলেও শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন।
বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, স্থানীয়রা তুচ্ছ ঘটনায় প্রায়ই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন, এর আগেও অনেকবার শিক্ষার্থীদের লাঞ্ছিত করেছেন। এই ঘটনা ওইসবের পুনরাবৃত্তি।
সংঘর্ষের সময় বিনোদপুর পুলিশ ফাঁড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে। আগুন বাজারেও ছড়িয়ে পড়েছে বলে জানা গেছে। তবে পুলিশ ফাঁড়িতে কারা আগুন দিয়েছে তা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমানকে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। নগর পুলিশের কমিশনার আনিসুর রহমান রাতে সাড়ে ৮টার দিকে বলেন, ‘আমরা অ্যাকশনে যাচ্ছি।’
শনিবার (১১ মার্চ) রাত সাড়ে ১০ টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ার শেল-রাবার বুলেট নিক্ষেপ করেছে। এতে করে আহত শিক্ষার্থীর সংখ্যা আরও বেড়ে গেছে। নতুন করে আরও ১০ জনকে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেলে আনা হয়েছে। তিনটি অ্যাম্বুলেন্সে ৪/৫ জনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়।
জাগরণ/স্বদেশ/এসএসকে