
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা এলাকা হতে সংঘবদ্ধ গাড়ি ছিনতাই চক্রের মূল সমন্বয়কসহ পাঁচ সদস্যকে আগ্নেয়াস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৪। তারা বিভিন্ন কৌশলে গাড়ি চুরি ও ছিনতাই করতো বলে জানিয়েছে র্যাব।
আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর কারওরান বাজারের র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়েজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং-এর পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি জানান, গত ১১ আগস্ট রাজধানীর দারুস সালাম এলাকা হতে গাড়ি ছিনতাই চক্রের পাঁচজন সক্রিয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। সেই অভিযানে উদ্ধার করা হয় চারটি পিকআপ। সেই গ্রেপ্তারকৃদের জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উদঘাটিত হয়। এ ছাড়া বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগী হতেও তথ্য পাওয়া যায়। ফলে র্যাব গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রাখে।
এরই ধারাবাহিকতায় গত গতকাল শুক্রবার বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত র্যাব-৪ নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে গাড়ি ছিনতাই চক্রের মূলহোতা মো. আজিম উদ্দিন (৩৮) সহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার অপর চারজন হলেন- মো. রফিক উল্লাহ (২৬), মো. সেলিম (৫০), মো. কামরুল হাসান (২৬) এবং ওমর ফারুক (২৫)।
এই অভিযানে উদ্ধার করা হয় ছিনতাইকৃত তিনটি পিকআপ, একটি সিএনজি, একটি পিস্তল, এক রাউন্ড গুলি, তিনটি ছোরা, একটি চাইনিজ কুড়াল, ছয়টি মোবাইল এবং নগদ ১২ হাজার টাকা।
খন্দকার আল মঈন জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা জানিয়েছে, তারা সংঘবদ্ধ যানবাহন/গাড়ি ছিনতাই/ চুরি চক্রের সদস্য। এই সংঘবদ্ধ গাড়ি ছিনতাইকারী চক্রের সঙ্গে ১৫-২০ জন জড়িত। এই চক্রের মূল হোতা ও সমন্বয়ক গ্রেপ্তারকৃত আজিম উদ্দিন।
বিগত ৫-৬ বছর যাবৎ এই দলটি সক্রিয় রয়েছে। এই সিন্ডিকেটে সদস্যরা দেশের বিভিন্ন অঞ্চল হতে ইতিমধ্যে শতাধিক গাড়ি ছিনতাই/চুরি করেছে বলে জানায়। এ পর্যন্ত এই চক্রটি গাড়ি ছিনতাইয়ের মাধ্যমে কোটি টাকার অধিক কারবার করেছে বলে জানায়।
র্যাব আরও জানায়, গ্রেপ্তারকৃতদের সিন্ডিকেটের মূলহোতা সমন্বয়ক আজিম। সে সকল কর্মকাণ্ডের নেতৃত্ব, সমন্বয়, বন্টন ও ছিনতাইকৃত গাড়ির বিক্রয়/ভাড়ার ব্যবসা করে। গ্রেপ্তারকৃত রফিক ও ফারুক নিজ গ্যারেজসহ বেশ কয়েকটি গ্যারেজে গাড়ির রং পরিবর্তন/মডিফিকেশন বা বিবর্তন করে থাকে। এরা ক্ষেত্র বিশেষে স্বশরীরে সম্পৃক্ত থেকে গাড়ি ছিনতাইয়ে কারিগরি সহায়তা প্রদান করে থাকে। গ্রেপ্তারকৃত সেলিম ও কামরুল যথাক্রমে পিকআপ ও সিএনজি’র দক্ষ চালক। তারা ছিনতাইয়ে মূল দলে যুক্ত থেকে ছিনতাইয়ে অংশগ্রহণ করে থাকে।
সিন্ডিকেট সদস্যদের নামে রাজধানী ঢাকাসহ নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, কুমিল্লা ও গাজীপুরের বিভিন্ন থানায় বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। এই সিন্ডিকেটে সদস্যরা পূর্বে বিভিন্ন অপরাধে যুক্ত ছিল। তারা বিভিন্ন মামলায় আটক হয়ে জেলে অপরাধীদের সঙ্গে পরিচয়ের মাধ্যমে এই চক্রের সদস্যের সংখ্যা বৃদ্ধি করে। মূলহোতা আজিমের নামে মাদক মামলাও রয়েছে বলেও জানিয়েছেন র্যাব।
জাগরণ/এমএইচ