প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পরও ব্যাংকগুলো ঋণের সুদহার সিঙ্গেল ডিজিটে নামেনি। এ কারণে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী এসব ব্যাংকের ভ্যাট-ট্যাক্স খতিয়ে দেখারও নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু এতে মাথাব্যথা নেই ব্যাংক মালিকদের। এই পরিস্থিতিতে অনেক ব্যাংকে ১৪ থেকে ১৬ শতাংশে ব্যাংক ঋণ না দেয়ার নির্দেশনা দিয়েছে। এসব কারণে ব্যাংকগুলোর বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবাহ তলানিতে এসে ঠেকেছে। গত কয়েকমাস ধরে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবাহ কমতে কমতে সাড়ে ১২ শতাংশে নেমে এসেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জনা গেছে।
সূত্র জানায়, ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারির তুলনায় চলতি ফেব্রুয়ারিতে ঋণ প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১২ দশমিক ৫৪ শতাংশ। জানুয়ারিতে যা ছিল ১৩ দশমিক ২০ শতাংশ। এদিকে, গত ফেব্রুয়ারির শেষে বেসরকারি খাতে বিতরণ করা ঋণ স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৯ লাখ ৭০ হাজার ৩৪৯ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময় শেষে ঋণ ছিল ৮ লাখ ৬২ হাজার ২২৫ কোটি টাকা। এ হিসাবে এক বছরে ঋণ বেড়েছে এক লাখ ৮ হাজার ১২৪ কোটি টাকা।
সূত্র আরো জানায়, ঋণের সুদহার সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনতে অনেক ব্যাংকের অনীহা রয়েছে। এছাড়া তারল্য-সঙ্কটের কারণে বেসরকারি খাতের ঋণের প্রবৃদ্ধি আরও কমেছে। কয়েক মাস ধরে ধারাবাহিকভাবে কমতে থাকা প্রবৃদ্ধি ফেব্রুয়ারিতে নেমে দাঁড়িয়েছে ১২ দশমিক ৫৪ শতাংশে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, ২০১৭ সালের জুন-জুলাই এ বেসরকারি খাতের ঋণ হু হু করে বাড়ছিল। ফলে ঋণ প্রবাহ নিয়ন্ত্রণে গত বছরের শুরুতেই ঋণ-আমানত অনুপাত (এডিআর) কিছুটা কমিয়ে আনে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এরপর থেকে ঋণ প্রবৃদ্ধি কমতে থাকে। পরে কয়েক দফা এডিআর সমন্বয়ের সীমা বাড়ানো হলেও ঋণ প্রবৃদ্ধি বাড়ছে না। নিম্নমুখী ধারা অব্যাহত আছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আবু আহমেদ দৈনিক জাগরণকে বলেন, বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবাহ বাড়াতে গেলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পলিসিতে পরিবর্তন আনতে হবে। আর সুদের হার যদি না কমে তাহলে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবাহ আরো কমবে। এতে কাঙ্ক্ষিত জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন কঠিন হয়ে দাঁড়াবে বলে জানান এই অর্থনীতিবিদ।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ ব্যাংকের দ্বিতীয়ার্ধের মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ১৬ দশমিক ৫০ শতাংশ।
এআই/টিএফ