• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুন ২৯, ২০১৯, ০৮:২৬ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ২৯, ২০১৯, ০৮:২৬ পিএম

সঞ্চয়পত্রে বর্ধিত কর বহাল রেখে অর্থবিল ২০১৯ পাস

সঞ্চয়পত্রে বর্ধিত কর বহাল রেখে অর্থবিল ২০১৯ পাস
সংসদে বাজেটের উপর সমাপনী ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা - ছবি : পিআইডি

বড় কোনো সংশোধনী ছাড়াই অর্থবিল-২০১৯ জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে। শনিবার (২৯ জুন) রাতে সংসদে প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় নেতার উপস্থিতিতে কণ্ঠভোটে এ বিল পাস হয়। প্রস্তাবিত অর্থবিলে কয়েকটি বিষয়ে সংশোধনী আনতে অর্থমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পরে সংসদে সমাপনী বক্তব্য রাখেন অসুস্থ অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এসময় সংসদে এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। এরপর অর্থবিলের সংশোধনীর ওপর আলোচনা করেন সংসদ সদস্যরা। বিলটি পাসের জন্য ভোটে দেয়া হয়। সদস্যদের কণ্ঠভোটে বিলটি পাস করা হয়। এসময় সরকারি দলের সদস্যরা টেবিল চাপড়ে সমর্থন জানান এবং অর্থমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানান।

প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটের (অর্থবিলের) কয়েকটি বিষয়ে ব্যবসায়ী, শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারী সাধারণ মানুষের দাবির প্রেক্ষিতে কিছু সংশোধনী আনার প্রস্তাব করছি। এর মধ্যে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোনো কোম্পানি যে পরিমাণ স্টক ডিভিডেন্ট প্রদান করবেন, একই পরিমাণ নগদ ডিভিডেন্ট দেবেন। এক্ষেত্রে স্টক ডিভিডেন্টের পরিমাণ নগদ ডিভিডেন্টের চেয়ে বেশি দেয়া হয় সেক্ষেত্রে সকল স্টক ডিভিডেন্টের ওপর ১০ শতাংশ হারে করা প্রদান করতে হবে। প্রস্তাবিত বাজেটে এটি ১৫ শতাংশ করার হয়েছিল।

এছাড়া পুজিবাজারে কোনো কোম্পানির কর-পরবর্তী নিট লাভের ৭০ শতাংশ রিটেইন আর্নিং, রিজার্ভসহ বিভিন্ন খাতে স্থানান্তর করতে পারবেন। বাকি ৩০ শতাংশ স্টক, ডিভিডেন্ট ও নগদ লভাংশ দিতে হবে। এক্ষেত্রে ব্যর্থ হলে প্রতিবছর রিটেইন আর্নিং ও রিজার্ভসহ স্থানান্তর মোট অর্থের ওপর ১০ শতাংশ হারে কর দিতে হবে।

শেয়ার বাজারের ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের করমুক্ত লভ্যাংশের সীমা ২৫ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকায় উন্নীত করা হোক।

স্থানীয় পর্যায়ে একাধিক মুসক হার প্রচলন করা হচ্ছে। তবে ১৫  শতাংশের নিম্নের হারগুলোতে উপকরণ কর রেয়াত নেয়ার সুযোগ না থাকায় ব্যবসায়ীরা হ্রাসকৃত হারের পরিবর্তে উপকরণ কর গ্রহণ করে ১৫ শতাংশ হারে কর প্রদানের সুযোগ সৃষ্টির জন্য দাবি করেছেন। হ্রাসকৃত হারের পাশাপাশি কেউ চাইলে যেন ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিয়ে রেয়াত পদ্ধতিতে অংশ গ্রহণ করতে পারে আইনে সে বিধান আনা হবে।

দেশীয় শিল্পের রক্ষায় তাঁত শিল্পের ওপর ৫ শতাংশ মুসকের পরিবর্তে প্রতি কেজিতে ৪ টাকা হারে সুনির্দিষ্ট হারে মুসক আরোপের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। দেশীয় শিল্প রক্ষায় প্রস্তাবিত বাজেটে বেশ কিছু শুল্ক হ্রাস-বৃদ্ধি করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখতে হবে দেশের কাগজ ও গ্যাস উৎপাদনকারী শিল্প যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। দেশীয় মুদ্রণ শিল্পে প্রণোদনা ও বন্ড ব্যবস্থার অপব্যবহার রোধ করতে দেশে উৎপাদন হয় না এমন পেপারগুলোর শুল্ক হার যৌক্তিক করা হবে। প্রস্তাবিত বাজেটে আমদানিকৃত কতিপয় পণ্যের শুল্ক হার পুনর্নির্ধারণ করা হবে।                              

গত ১৩ জুন সংসদে বাজেট উপস্থাপনের পর থেকে যেসব বিষয়ে বেশি আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে সেগুলো হলো- বিদ্যুৎ সংযোগের ক্ষেত্রে টিআইন নম্বর বাধ্যতামূলক করা এবং সঞ্চয়পত্রের উৎসে কর হার বৃদ্ধির প্রস্তাব। কিন্তু এ দুটি বিষয়ে কোনো সংশোধনী আনা হয়নি। প্রস্তাবিত বাজেটের প্রস্তাবই বহাল রাখা হয়েছে পাসকৃত অর্থবিলে।

নতুন অর্থবছর ২০১৯-২০ এর জন্য ১৩ জুন ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী। এরপর সংসদে ২৭০ জন সদস্য এতে আলোচনায় অংশ নেন। অবশেষে শনিবার রাত ৮টা ১০ মিনিটে সংসদে বিলটি পাস করা হয়েছে। যা ১ জুলাই থেকে কার্যকর হবে। কাল রোববার (৩০ জুন) সংসদে বাজেট পাস হওয়ার কথা রয়েছে। সন্ধ্যায় বাজেটোত্তর নৈশভোজের আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত থাকবেন।

এইচএস/ এফসি

আরও পড়ুন