ব্যাংকে ঋণ এবং আমানতের সুদহার ৯ ও ৬ শতাংশ নামিয়ে আনার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো চাপ নেই বলে জানিয়েছেন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) প্রেসিডেন্ট সৈয়দ মাহবুবুর রহমান। রোববার (২১ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের সব ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের সঙ্গে বৈঠক করে। ওই বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে একথা জানান মাহবুবুর রহমান।
তিনি বলেন, আমরা ঋণের সুদহার ৯ এবং আমানতের সুদহার ৬ শতাংশে নামিয়ে আনার চেষ্টা করছি। তবে এই বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো চাপ নেই।
মাহবুবুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক জানতে চেয়েছে- আমানতের সুদহার ৬ শতাংশ ও ঋণ বিতরণের সুদহার ৯ শতাংশ নিয়ে কতদূর কী হয়েছে। এ বিষয়ে আমরা বলেছি, এটি বাস্তবায়নে চেষ্টা চলছে।
ঋণের সুদহার ৯ ও আমানতের সুদ হার ৬ শতাংশে নামিয়ে আনার সিদ্ধান্তের এক বছর পরেও এখনো বাস্তবায়ন হয়নি কেন? এটা করতে আর কতদিন সময় লাগবে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ বিষয়ে কাজ চলছে। তবে সময়ের বিষয়ে বলা যাবে না। এজন্য বাংলাদেশ ব্যাংক, সরকার, অর্থ মন্ত্রণালয় ও আমানতকারীদের সঙ্গে বসে পরামর্শ ও সহায়তা নেয়া হবে। কারণ এটি সবাই মিলেই বাস্তবায়ন করতে হবে।
তিনি বলেন, এখন আমদানি কমে আসছে, রপ্তানি ও রেমিট্যান্স বাড়ছে। অর্থাৎ বাণিজ্য ঘাটতি কমছে। আশা করি সামনে ভালো সংবাদ আসবে। খেলাপি ঋণের বিষয়ে সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, যদিও বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) খেলাপি ঋণ বেশি ছিল। তবে সরকারি, বেসরকারি ও শরীয়াহ ভিত্তিকসহ সব ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তারা বলেছে, জুন প্রান্তিকে খেলাপি ঋণ অবশ্যই কমে আসবে।
এসময় বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ব্যাংকগুলো সরকারি ও অন্যান্য আমানত ৬ শতাংশ সুদে পেলে তারা অবশ্যই ৯ শতাংশ সুদে ঋণ বিতরণ করবে বলে জানিয়েছে। তবে এটা তো রাতারাতি বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। কিন্তু তারা (ব্যাংকগুলো) চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, খেলাপি ঋণটা ও একটা বড় সমস্যার কারণ। এটা যদি কমিয়ে আনা যায় তাহলে ঋণের সুদ হারও কমিয়ে আনা সম্ভব। কারণ তারাও দেশের উন্নতি চায়। আশাকরি খুব স্বল্প সময়ে সুদ হার কমে যাবে।
সুদ হার ৯ ও ৬ শতাংশ বাস্তবায়নে বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো চাপ রয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, না। এ বিষয়ে যেহেতু ব্যাংক মালিকেরা প্রধানমন্ত্রীকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তারা সেটা বাস্তবায়ন করবেন। এটাই স্বাভাবিক। তবে তারা যেন এটা বাস্তবায়ন করতে পারে সে বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যবেক্ষণ করছে।
খেলাপি ঋণ সম্পর্কে সিরাজুল ইসলাম বলেন, জুন প্রান্তিকে ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ কমে আসবে বলে আশ্বাস দিয়েছে।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, নির্বাহী পরিচালক ও দেশের প্রায় সব ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন।
এআই/ এফসি