জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা জনবন্ধু জিএম কাদের বলেছেন, “২০২১-২০২২ সালের যে বাজেট পেশ করা হয়েছে তা কল্পনাপ্রসূত, মনগড়া এবং অবাস্তব।”
বৃহস্পতিবার (৩ জুন) বিকেলে বাজেট অধিবেশন থেকে বের হয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে বিরোধী দলীয় উপনেতা এ কথা বলেন।
জিএম কাদের বলেন, “আন্দাজে করা এই বাজেট বাস্তবায়নযোগ্য নয়। বাজেটে বিশাল ঘাটতি রয়েছে, তা পূরণ করতে যে ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে তা বাস্তবসম্মত নয়। এই বাজেট ব্যাপকভাবে সংশোধন বা রদবদল করতে হবে।”
এছাড়া স্বাস্থ্যখাতে নামমাত্র বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে, সামাজিক বেষ্টনীখাতে যা দেওয়া হয়েছে তা বাজেটের তুলনায় খুব কম, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা খাতে অনেক কম বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান আরও বলেছেন, “ধারণার বশবর্তী হয়ে অর্থমন্ত্রী বাজেট তৈরি করেছেন। এই বাজেট এতটাই পরিবর্তন করতে হবে যে, তাতে প্রণীত বাজেটের প্রকৃত রূপ থাকবে না। বাজেটে খরচ বাড়িয়েছেন, বাড়ানো দরকারও আছে কিন্তু অর্থ আহরণের বিষয়ে তারা হোঁচট খেয়েছেন। গেল বাজেটের লক্ষ্য অনুযায়ী ৬০ ভাগও রাজস্ব আদায় করতে পারেনি দশ মাসে। সামনের দুই মাসে কতটা আদায় করতে পারবেন তাও জানেন না। যেটা প্রাক্কলন করেছেন তাতে যথেষ্ট পরিমাণে ঘাটতি রয়েছে।”
জিডিপির ছয় দশমিক দুই ভাগ ঘাটতির বাজেট এর আগে আর হয়নি, ঘাটতির এই বাজেটে যত সুন্দরভাবে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে এবং বলা হয়েছে তা ডিটেইলে দেখা গেছে অনেক কিছুই ফাঁক আছে বলে তিনি উল্লেখ করেছেন।
জিএম কাদের বলেন, যারা করোনাকালে কর্মহীন হয়েছেন এবং দারিদ্রসীমার নিচে চলে গেছেন তাদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি বা তাদের জন্য আর্থিক সহায়তার সুস্পষ্ট দিক নির্দেশনা নেই এই বাজেটে।”
বিরোধী দলীয় উপনেতা জনবন্ধু বলেছেন, “স্বাস্থ্য খাতের জন্য সাধারণ মানুষের বিপুল আঙ্কাখা ছিল, এবার স্বাস্থ্যখাতে বড় ধরনের একটা বরাদ্দ হবে এমন আশা ছিল সাধারণ মানুষের। কিন্তু বাজেটে খুব সামান্য বৃদ্ধি দেখানো হয়েছে। এটা সাধারণভাবে বলা যায় রুটিন বৃদ্ধি, কোনো ক্রাইসিসের জন্য এই বৃদ্ধি সামান্য এবং অপ্রতুল।”
“বাজেটের ঘাটতি পূরণে বিদেশি ঋণ, স্বল্পসূদে ঋণ এবং বিভিন্ন খাত থেকে অর্থ প্রাপ্তির যে কথা বলা হয়েছে তা সম্পূর্ণ অনিশ্চিত। আগামীদিনের অর্থনৈতিক যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে তাতে এটা আদৌ অর্জন করা সম্ভব হবে কিনা তা বলা যাচ্ছে না। তাই রাজস্ব প্রাপ্তিতে যেমন বিশাল সমস্যা হতে পারে, তেমনিভাবে বাজেট অনুযায়ী অর্থায়নেও সমস্যা হতে পারে। তাছাড়া যেসকল বিষয়ে অগ্রাধিকার দিতে হবে তা মুখে বলেছেন কিন্তু কাগজে মোটেই নেই।”
এসময় উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ, সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গা, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও অতিরিক্ত মহাসচিব (ঢাকা বিভাগ) লিয়াকত হোসেন খোকা, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা শরিফুল ইসলাম জিন্নাহ, সংসদ সদস্য পনির উদ্দিন আহমেদ, সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান মিজবাহ।